আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০১৪

আগাছা-পরগাছাদের সাথে তর্ক

লিখেছেন দাঁড়িপাল্লা

কবি বলেছেন, মূর্খের সাথে তর্ক করতে যেতে নাই... মূর্খরা আপনারে তার সমপর্যায়ে নামিয়ে আনবে ইত্যাদি ইত্যাদি। তবে নাস্তিকরা কাউরে মূর্খ জ্ঞান কইরা তর্কে নামেন না। নাস্তিকরা বেকুব, তাই তারা তর্কে নামেন। এইটা প্রতিটা নাস্তিকই কম-বেশি স্বীকার করেন। 

এবার একজন নাস্তিক নিজেরে মূর্খ বা জ্ঞানী যা-ই বিবেচনা করেন না কেন, আস্তিকদের সাথে তর্কে নেমে কখনওই তাদেরকে আপনার লেভেলে আনতে পারবেন না। তার চাইতে নিজেই আগেভাগে আস্তিকদের লেভেলে নেমে যাওয়া উত্তম বলে মনে হয়। যারা বিজ্ঞান নিয়া লেখালেখি করেন বা বিজ্ঞানের কঠিন কঠিন তত্ত্ব দিয়া আস্তিকদের সাথে তর্কে নামেন, তাদের জানাশোনার লেভেলটার উপর সম্মান রেখেই বলছি, আস্তিকদের সাথে তর্কে এই জটিল বিজ্ঞান খুব একটা কাজে দেয় না। বিজ্ঞানের এসব ব্যাপার নিয়ে যদি তাদের জানার একান্তই আগ্রহ থাকত, তাহলে তারা নিজেরাই সেগুলা নিয়ে পড়াশোনা করত। আর আস্তিকরা যদি সত্যিই বিজ্ঞানকে বুঝতো, তাহলে তো আর আস্তিকই থাকত না। তাই নিজের মনে বিজ্ঞানচর্চা করলেও আস্তিকদের সাথে তর্কের সময় অন্তত তাদের লেভেলে নামেন। তারা কোন পয়েন্টে কথা বলতে চাইছে এবং তাদের জানাশোনার লেভেলটা আগে কিছু প্রশ্ন করে বুঝে নিন। বিশেষ করে তর্কের বিষয়টা নিয়ে তাদের ধর্মীয় জ্ঞান বা ধর্মগ্রন্থ পড়া আছে কি না, সেটা একটা জরুরী বিষয়। ধর্মের এইসব ব্যাপারগুলোকে ধর্মগ্রন্থ থেকেই কাউন্টার দিন; জাস্ট কমন সেন্স দিয়েই তাদেরকে বুঝতে সাহায্য করেন। এতেই কাজ বেশি হবে বলে মনে হয়।

আরেকটা বিষয়, "আল্যা-ভগবান-গড" আর সৃষ্টিকর্তা বা পরম-ঈশ্বর পুরা ভিন্ন জিনিস। আল্যা-ভগবান-গড--এগুলা ধর্মগ্রন্থের বিষয়। আর সৃষ্টিকর্তার বিষয়টা ধর্মগ্রন্থের বাইরে। এর এখনো কোনো সংজ্ঞা দেয়া হয় নাই। 
"আল্যা যদি না-ই থাকত, তাহলে এই দুনিয়া কে সৃষ্টি করছে?", "সৃষ্টিকর্তা যদি না-ই থাকবে তাহলে এই দুনিয়া কে সৃষ্টি করছে?" - দুইটা প্রশ্ন আপাত দৃষ্টিতে এক মনে হলেও আসলে কিন্তু পুরাই ভিন্ন। আস্তিকরা যখন আল্যা না বলে সৃষ্টিকর্তা বলে তর্কে নামে, তখন সেটা একটা ফাঁদ। এই ফাঁদে পা না দিয়ে আগে জেনে নিন সৃষ্টিকর্তা বলতে তারা কাকে বুঝাচ্ছে - আল্ল্যা নাকি ভগবান নাকি গডরে। তর্কটাকে একটা পয়েন্টে আবদ্ধ রাখতেই এটা করা জরুরী। 

তারা যদি আল্যা বা ভগবানের নাম বলে, তখন এইসব শব্দ যেখান থেকে এসেছে, আপনাকে সেইসব ধর্মগ্রন্থের আলোকে আগাতে হবে। যেমন ধরুন, যদি আল্যার কথা আসে, তখন "আল্যাই যে দুনিয়ার সৃষ্টিকর্তা এটা আপনি কোথা থেকে পেলেন?" 

উত্তর আসবে--"কোরান-হাদিস থেকে।" এবার কোরান-হাদিসের মধ্যেই আলোচনা হবে। 

এবার কোরান যদি আল্যার বাণী হয়, তাহলে সেখানে তো কোনো ভুল থাকতে পারবে না। এইটা আস্তিকরা স্বীকার করতে বাধ্য। তারপর কোরানের ভুল নিয়ে আগাতে পারেন। যেমন, কোরানে সম্পত্তি ভাগের হিসাবে ভুল আছে। তারা বলবে, নাই। আচ্ছা, যদি ভুল না-ই থাকবে, তাহলে আলীকে কেন সেই হিসাব সংশোধন করতে হয়েছিল... আবার আলী যদি ভুল হয়, তাহলে এখনো দুনিয়ায় মুসলমানরা সম্পত্তি ভাগের সময় আলীর সেই ভুল নিয়মটাই অনুসরণ করে কেন ইত্যাদি, ইত্যাদি...

আর যদি জাস্ট "সৃষ্টিকর্তা"র নাম বলে, তাহলে ধরে নেবেন আপনি কঠিন চিজের পাল্লায় পড়ছেন, এবং ক্ষণে ক্ষণে পিছলাবে। এক্ষেত্রেও আগে জেনে নিন, সে যে একজন সৃষ্টিকর্তা আছে বইলা মনে করতেছে, এই আইডিয়াটা তার মাথায় কোথা থেকে এলো। বেশিরভাগ সময় ভুল কইরা ধর্মগ্রন্থের নাম বইলা দিতে পারে। আর যদি আরো কঠিন চিজ হয়, তাহলে বলবে, নিজে এই বিশাল জগৎ সংসার দেইখা নিজেই ধারণা করছে, কেউ একজন না থাকলে এত বড় বিশ্ব এমনি এমনি সৃষ্টি হইতে পারে না। তখন আপনি বলবেন, এই সৃষ্টিকর্তারে তাহলে কে সৃষ্টি করল? এখানে কোনো উত্তর নাই। বড়জোর সেই ধর্মগ্রন্থের আইডিয়া নিয়েই বলতে পারে, তারে কেউ সৃষ্টি করে নাই। সে নিজে নিজে সৃষ্টি হইছে। এত বিশাল দুনিয়ার যে সৃষ্টিকর্তা, সে নিশ্চয়ই আরো বিশাল। তাহলে এত বিশাল একটা সৃষ্টিকর্তা যদি নিজে নিজে সৃষ্টি হইতে পারে, তাহলে তার থিকা ছোট এই দুনিয়াটা এমনি এমনি সৃষ্টি হইতে পারবে না কেন! (যদিও এইগুলা বাজে তর্ক... মানে এর পর আর কথা বেশি আগায় না।)

তবে আরেকটা বাঁশ দেওয়া যায় -বিজ্ঞান এতদিনে অনেক রহস্যের সমাধান করছে। আবার অনেক কিছু জানা যায় নাই। তার মানে এই না যে, আমাদের ধরে নিতে হবে একজন সৃষ্টিকর্তা আছে। সৃষ্টিকর্তা আছে - আন্দাজে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া মানেই জ্ঞান-বিজ্ঞানের গতি ওখানেই থামিয়ে দেওয়া। দুনিয়ার বাকি রহস্য জানতে বৈজ্ঞানিকরা বিজ্ঞানের পথে চেষ্টা করে যাচ্ছে। সেইটার উপরেই চিন্তাশীল মানুষের আস্থা বেশি। বিজ্ঞান অনেক কিছুই যখন পারছে, সামনেও আরো অনেক কিছু পারবে। এই যে পারছে বা পারবে, তাতে কিছু "ভিন্ন রকম মানুষের" অবদানটাই বেশি। সভ্যতা এগিয়েছে এই কিছু ভিন্ন রকম মানুষদের জন্যেই। এদের উপর নির্ভর করেই আছে বাকিরা। এই সব বাকিদের আগাছা বা পরগাছার সাথে তুলনা করা যেতে পারে। সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে এদের কোনো অবদান নাই। 

এই পর্যায়ে তাদেরকে বলতে পারেন, যদি সত্যিই সৃষ্টি রহস্য সহ যাবতীয় রহস্য সম্বন্ধে জানতে চান, তাহলে সৃষ্টি রহস্য উন্মোচনে আপনি বিজ্ঞানের পথে এসে এই বিজ্ঞানীদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চান, কিছু ইনপুট দিতে চান, নাকি ওই ধর্মগ্রন্থে যা আছে সেটা মেনে নিয়ে চুপচাপ বা আগাছা-পরগাছার মতই সারাজীবনটা কাটিয়ে দিতে চান?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন