আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৪

জাঙ্ক ডিএনএ বিষয়ে সৃষ্টিতত্ত্ববাদীদের জাঙ্ক যুক্তি

লিখেছেন অর্ণব খান

জাঙ্ক ডিএনএ-র নতুন নতুন কাজ আবিষ্কারের মাধ্যমে কি বিবর্তন তত্ত্ব ভুল প্রমাণিত হয়?

আজকাল বিবর্তনবিরোধীরা জাঙ্ক ডিএনএ-র কার্যকারিতা আবিষ্কারের ঘটনাকে বিবর্তন তত্ত্বের বিপক্ষে প্রমাণ হিসেবে দাঁড় করানোর অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। জাঙ্ক ডিএনএ কী? মানুষের জিনের ৯৮% ডিএনএ কোনো প্রোটিন তৈরির জন্য তথ্য বহন করে না বা প্রোটিন কোড করে না। এদেরকেই জাঙ্ক ডিএনএ বা নন কোডিং ডিএনএ বলা হয়। এক সময় মনে করা হত, এসব ডিএনএ-র কোনো কাজ নেই, বরং এগুলো বিবর্তনের ধারায় লেফটওভার ডিএনএ। বিজ্ঞানীদের নিরলস প্রচেষ্টায় আজ আমরা জানি যে, জাঙ্ক ডিএনএ প্রোটিন কোড না করলেও প্রোটিন সংশ্লেষন প্রক্রিয়ায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ রেগুলেটরি দায়িত্ব পালন করে। এসব আবিষ্কারের কথা জানার পর বিবর্তনবিরোধীরা কিছু হাস্যকর প্রশ্ন তুলে তাদের বিবর্তনবিরোধিতা প্রকাশ করছে। দেখা যাক, তাদের যুক্তিটি কেমন:

"বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী এক প্রজাতি থেকে ভিন্ন প্রজাতিতে রূপান্তরের সময় পুরান প্রজাতি থেকে প্রাপ্ত বেশ কিছু জৈবিক উপাদান নতুন প্রজাতিতে অপ্রয়োজনীয় হয়ে যেতে পারে, যেগুলো আগের প্রজাতিতে কার্যকর ছিল। যেমন মানব দেহের অ্যাপেন্ডিক্স। তাই মানব জিনে অপ্রয়োজনীয় জাঙ্ক ডিএনএ থাকা ছিল বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী স্বাভাবিক। কিন্তু জাঙ্ক ডিএনএ-র কাজ আবিষ্কারের ফলে প্রমাণিত হল, বিবর্তন তত্ত্ব ভুল। অন্য কথায়, স্রষ্টা পরিকল্পনা করে মানব সৃষ্টি করেছেন, তাই মানুষের জিনের এত বড় অংশ জাঙ্ক হিসেবে থাকতে পারে না। এখনকার আবিষ্কারের মাধ্যমে এটাই প্রমাণ হচ্ছে যে, মানুষ একটি পরিকল্পিত ডিজাইনের ফলাফল। জাঙ্ক ডিএনএ-র কাজ নেই এ কথা বলে বিবর্তন সমর্থক বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে গবেষণার কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তাই বিজ্ঞান বরং পিছিয়ে পড়েছে।"

সৃষ্টিতত্ত্ববাদীদের বিবর্তন ভুল প্রমাণ করার ওপরোক্ত যুক্তিটি যে একেবারেই ভ্রান্ত, তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। কারণ:

১. বিবর্তন তত্ত্ব অনুযায়ী, নতুন প্রজাতিতে পুরনো প্রজাতি থেকে প্রাপ্ত অপ্রয়োজনীয় উপাদন থাকতে পারে সত্য, কিন্তু থাকতেই হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। বরং না থাকার সম্ভাবনাই বেশি, কেননা প্রাকৃতিক নির্বাচনের ফলে অপ্রয়োজনীয় উপাদান বাদ পড়ে যাবার সম্ভাবনা প্রবল। তাই জাঙ্ক ডিএনএ-র কার্যকারিতা আবিষ্কার বিবর্তন তত্ত্বের বিপক্ষে যাওয়া তো দূরের কথা, বরং পক্ষে যায়।

২. মানব দেহ পূর্বপরিকল্পিত ডিজাইন অনুযায়ী হলে সেখানে সত্যিকার অর্থেই পরিকল্পণার ছাপ থাকত। কিন্তু হৃৎপিন্ড, মস্তিষ্ক, চোখ, মেরুদণ্ড ইত্যাদি বিভিন্ন অঙ্গ মানবদেহে কার্যকরী বটে, তবে আদর্শ ডিজাইনে তৈরি নয়। সহজ করে বললে বলা যায়, কেউ চাইলে মাথার পেছন দিয়ে হাত ঘুরিয়ে এনেও কার্যকর ভাবে ভাত খেতে পারে কিন্তু এটা ভাত খাওয়ার আদর্শ, স্বাভাবিক ও সহজ উপায় নয়। মানব দেহের ডিজাইন বিশ্লেষণ করলে সেখানে এত জোড়াতালি মার্কা এবং অপ্রয়োজনীয় বাড়তি কাজ দেখা যায় যে, তা কখনো পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে ভাবাটা অসম্ভব।

৩. জাঙ্ক ডিএনএ-কে বিজ্ঞানীরা কখনোই পুরোপুরি জাঙ্ক বলে ফেলে রাখেননি। বরং একদম শুরু থেকেই তারা কিছু জাঙ্ক ডিএনএ-র কাজ জানতেন। যেমন রাইবোজোম কোডকারী জিন। তাই জাঙ্ক ডিএনএর কাজ নেই - এমন অন্ধবিশ্বাস করে অযথা বিজ্ঞানীরা গবেষণা বন্ধ রেখেছিলেন - এ কথাটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাদের দীর্ঘদিনের গবেষণার ফলেই তো এখন এগুলো জানা যাচ্ছে। এ নিয়ে গবেষণা যে কোনোদিন বন্ধ ছিল না, তার প্রমাণ বিগত বছরগুলোর বৈজ্ঞানিক জার্নালগুলো খুঁজলেই পাওয়া যাবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন