লিখেছেন Secular Friday
শিশু-অধিকারের বিষয়টিকে ধর্মগুলো এড়িয়ে চলে। ইসলামও এর ব্যতিক্রম নয়।
একদিকে ভয়ানক ভাবে উপেক্ষিত শিশুদের প্রহারকে যেমন ন্যায্যতা দেয়া হয়েছে, অন্যদিকে শিশুবিবাহ বা শিশুশ্রমের বিরুদ্ধেও কোরআনে কিছুই বলা নেই। উপরন্তু শিশুবিবাহ ইসলামে স্বীকৃত ও অনুমোদিত একটি বিষয়; কোরআনেই আল্লাহ শিশুবিবাহকে উৎসাহিত করে বলেছেন, ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি এমন শিশুও বিবাহযোগ্যা।
তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যাদের ঋতুবর্তী হওয়ার আশা নেই, তাদের ব্যাপারে সন্দেহ হলে তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। আর যারা এখনও ঋতুর বয়সে পৌঁছেনি, তাদেরও অনুরূপ ইদ্দতকাল হবে। গর্ভবর্তী নারীদের ইদ্দতকাল সন্তানপ্রসব পর্যন্ত। যে আল্লাহকে ভয় করে, আল্লাহ তার কাজ সহজ করে দেন।
[সুরা ৬৫:৪]
কোরআনের এই ভয়ংকর আয়াতের সার্থক প্রয়োগ দেখি নবীর নিজ জীবনে:
আবদুলস্নাহ্ ইব্ন ইউসুফ (র) ..... উরওয়া (রা) বর্ণনা করেন যে, নবী (সা) আবু বকর (রা)-এর কাছে আশেয়া (রা)-এর শাদীর পয়গাম দিলেন। আবু বকর (রা) বললেন, আমি আপনার ভাই। নবী (সা) বললেন, তুমি আমার আলস্নাহর দীনের এবং কিতাবের ভাই। তবে, সে আমার জন্য হালাল।
[১] সহিহ বুখারী :: খন্ড ৭ :: অধ্যায় ৬২ :: হাদিস ১৮
দীর্ঘদিনের বন্ধু ও সঙ্গী আবুবকর ভীষণ রকম অবাক হয়েছিলেন নবীর এই প্রস্তাবে, কিন্তু উপায়ান্তর না দেখে রাজি হন।
শিশু আয়েশাকেও নবী তার রূপকথার গল্পে নানাভাবে প্রভাবিত করেন:
মুহাম্মদ (র)......... আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, তোমাকে ( আয়েশাকে) শাদী করার পূর্বেই দু’বার আমাকে দেখানো হয়েছে। আমি দেখেছি, একজন ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে। আমি বললাম, আপনি নিকাব উন্মোচন করুন। যখন সে নিকব উন্মোচন করল তখন আমি দেখতে পেলাম যে, উক্ত মহিলা তুমিই। আমি তখন বললাম, এটা যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন। এরপর আবার আমাকে দেখানো হল যে, ফেরেশতা তোমাকে রেশমী এক টুকরা কাপড়ে জড়িয়ে বহন করে নিয়ে আসছে। আমি বললাম, আপনি ( তার নিকাব) উন্মোচন করুন। সে তা উন্মোচন করলে আমি দেখতে পাই যে, উক্ত মহিলা তুমিই। তখন আমি বললাম : এটা যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে তাহলে তিনি তা বাস্তবায়িত করবেন।
[২] সহিহ বুখারী :: খন্ড ৯ :: অধ্যায় ৮৭ :: হাদিস ১৪০
ফারওয়া ইব্ন আবূ মাগরা(র) .... আয়শা(রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)যখন আমাকে বিবাহ করেন, তখন আমার বয়স ছিল ছয় বছর। তারপর আমরা মদীনায় এলাম এবং বনু হারিস গোত্রে অবস্থান করলাম। সেখানে আমি জ্বরে আক্রান্ত হলাম। এতে আমার চুল পড়ে গেল। (সুস্থ হওয়ার) পরে যখন আমার মাথার চুল জমে উঠল। সে সময় আমি একদিন আমার বান্ধবীদের সাথে দলনায় খেলা করছিলাম। তখন আমার মাতা উম্মে রূমান আমাকে উচ্চস্বরে ডাকলেন। আমি তাঁর কাছে এলাম। আমি বুঝতে পারিনি তার উদ্দেশ্য কি? তিনি আমার হাত ধরে ঘরের দরজায় এসে আমাকে দাড় করালেন। আর আমি হাফাচ্ছিলাম। অবশেষে আমার শ্বাস-প্রশ্বাস কিছুটা স্থির হল। এরপর তিনি কিছু পানি নিলেন এবং এর দ্বারা আমার মুখমণ্ডল ও মাথা মসেহ করে দিলেন। তারপর আমাকে ঘরের ভিতর প্রবেশ করালেন। সেখানে কয়েকজন আনসারী মহিলা ছিলেন। তাঁরা বললেন, (তোমার আগমন) কল্যাণময়, বরকতময় এবং সৌভাগ্যময় হউক। আমাকে তাদের কাছে সোপর্দ করে দিলেন। তাঁরা আমার অবস্থান ঠিকঠাক করে দিলেন, তখন ছিল পূর্বাহ্ণ। হঠাৎ রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আগমন আমাকে সচকিত করে তুলল। তাঁরা আমাকে তাঁর কাছে সোপর্দ করে দিলেন। সে সময় আমি নয় বছরের বালিকা।
[৩] সহিহ বুখারী :: খন্ড ৫ :: অধ্যায় ৫৮ :: হাদিস ২৩৪
মুহাম্মদ ইব্ন ইউসুফ ..... হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত যে, নবী (সা) যখন তাঁকে শাদী করেন তখন তাঁর বয়স ছিল ৬ বছর এবং নয় বছর বয়সে রাসূলুলস্নাহ্ (সা) তাঁর সাথে বাসর ঘর করেন এবং তিনি তাঁর সান্নিধ্যে নয় বছরকাল ছিলেন।
[৪] সহিহ বুখারী :: খন্ড ৭ :: অধ্যায় ৬২ :: হাদিস ৬৪
শিশু পেটানোর হাদিস:
আবু সুরাইয়াহ সাবরাহ ইবনে মাবাদ জুহানি রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা শিশুকে সাত বছর বয়সে নামাজ শিক্ষা দাও এবং দশ বছর বয়সে তার জন্য তাকে মার।’
আবু দাঊদের শব্দে, শিশু সাত বছর বয়সে পৌঁছলে তাকে তোমরা নামাজের আদেশ দাও।’
[তিরমিযি ৪০৭, আবু দাউদ ৪৯৪ দারেমি ১৪৩১]
বলা হয়, ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান!! এ ভয়ঙ্কর আচার কি আসলেই তাই বলে?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন