বুধবার, ৫ নভেম্বর, ২০১৪

কুরানে বিগ্যান (পর্ব-৫৪): ওহুদ যুদ্ধ -১: কী ছিল তার কারণ? ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – সাতাশ

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩

ইসলামের ইতিহাসের প্রথম রক্তক্ষয়ী যুদ্ধটি সংঘটিত হয় হিজরতের দ্বিতীয় বর্ষে (১৫ই মার্চ, ৬২৪ সাল), বদর নামক স্থানে। বদর যুদ্ধের কারণ ও প্রেক্ষাপট; নিজেদেরই একান্ত পরিবার সদস্য, নিকটআত্মীয় ও বন্ধু-বান্ধবদের প্রতি মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের অমানুষিক নৃশংসতা; যুদ্ধবন্দী মুক্তির বিনিময়ে উপার্জিত অর্থ ও গনিমতের মালের ভাগাভাগি - ইত্যাদি বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা ৩০-৪৩ পর্বে করা হয়েছে।

ইসলামের ইতিহাসের দ্বিতীয় রক্তাক্ত যুদ্ধটি সংঘটিত হয় মদিনায় নিকটবর্তী ওহুদ নামক স্থানে। বদর যুদ্ধের ঠিক এক বছর পর, হিজরতের তৃতীয় বর্ষে। তারিখটি ছিল মার্চ ২৩, ৬২৫ সাল (৭ ই শওয়াল); দিনটি ছিল শনিবার।

পৃথিবীর প্রায় সকল ইসলাম বিশ্বাসীদের যদি বদর যুদ্ধের মতই ওহুদ যুদ্ধের কারণ ও প্রেক্ষাপট জিজ্ঞাসা করা হয়, তবে তাঁরা নির্দ্বিধায় যে জবাবটি দেবেন, তা হলো - কুরাইশ কাফেররা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর শান্তির বার্তা ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিলেন।

স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর ১০ বছরের (৬২২-৬৩২ সাল) মদিনা জীবনে ৬০ -১০০ টি যুদ্ধ/সংঘর্ষে জড়িত ছিলেন। শুধু বদর বা ওহুদ যুদ্ধই নয়, পৃথিবীর প্রায় সকল ইসলাম বিশ্বাসী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, অবিশ্বাসীদের সাথে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীদের নিরবচ্ছিন্ন সুদীর্ঘ ১০ টি বছর এই যে গড়ে প্রতি ৫-৮ সপ্তাহে একটি (৫২০ সপ্তাহে ৬০-১০০ টি) সংঘর্ষ তার প্রত্যেকটিই সংঘটিত হয়েছে অবিশ্বাসীদের চক্রান্ত ও আগ্রাসী তৎপরতার কারণে! 

উদ্দেশ্য হলো:
"মহানবী হযরত মুহাম্মদের (সাঃ) 'শান্তির ধর্ম ইসলাম' প্রচারে বাধাদান এবং ইসলামকে দুনিয়ার বুক থেকে নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা! 

কিন্তু,

আদি উৎসে নিবেদিতপ্রাণ ইসলাম বিশ্বাসীদেরই রচনায় তাঁদের এই বিশ্বাস ও দাবির সম্পূর্ণ বিপরীত চিত্র যে অত্যন্ত স্পষ্ট, তা "ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ" এর গত সাতাশটি পর্বে আলোচিত হয়েছে। বদর যুদ্ধের পর্যালোচনায় আমরা ইতোমধ্যেই জেনেছি,

“বদর যুদ্ধের প্রকৃত কারণ হলো, ‘বিনা উস্কানিতে রাতের অন্ধকারে পথিমধ্যে বাণিজ্য ফেরত কুরাইশ কাফেলার (Caravan) ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের একের পর আগ্রাসী আক্রমণ, নাখলা নামক স্থানেতাঁদের বাণিজ্য-সামগ্রী লুণ্ঠন, প্রিয়জনদের খুন এবং বন্দী করে মুক্তিপণ দাবি’ - ইত্যাদি অনৈতিক সন্ত্রাসী অপকর্মের পুনরাবৃত্তি রোধে ক্ষতিগ্রস্ত (Victim) কুরাইশদের প্রতিরক্ষা যুদ্ধ (পর্ব: ২৯-৩০)।"

আর, আদি ও বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকরা ওহুদ যুদ্ধের যে কারণ ও প্রেক্ষাপটবর্ণনা করেছেন, তা হলো নিম্নরূপ:

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনা:

'আমি [মুহাম্মদ ইবনে ইশাক] ওহুদ যুদ্ধের উপাখ্যানটির বিভিন্ন অংশের বর্ণনা যুক্ত করেছি মুহাম্মদ বিন মুসলিম আল-জুহরী, মুহাম্মদ বিন ইয়াহিয়া বিন হিববান, আসিম বিন উমর বিন কাতাদা, আল হুসাইন বিন আবদুল রাহমান বিন আমর বিন সা'দ বিন মুয়া'দ এবং অন্যান্য জ্ঞানী মুহাদ্দিসগণ আমাকে যা অবহিত করিয়েছেন, তারই ভিত্তিতে। তাঁদের একজন বা অন্যজন, অথবা সকলেই নিম্নলিখিত এই উপাখ্যানের বর্ণনায় দায়বদ্ধ।

যখন অবিশ্বাসী কুরাইশরা বদর যুদ্ধে বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছিল ও তাদের বেঁচে যাওয়া লোকজন মক্কায় প্রত্যাবর্তন করেছিল এবং আবু সুফিয়ান বিন হারব তার মরুযাত্রীদল (caravan) নিয়ে ফিরে এসেছিল; আবদুল্লাহ বিন আবু রাবি'য়া ও ইকরিমা বিন আবু জেহেল এবং সাফওয়ান বিন উমাইয়া বদর যুদ্ধে যে সমস্ত লোকের পিতা, পুত্র ও ভাই খুন হয়েছিল, তাদেরকে নিয়ে আবু সুফিয়ান ও তার কারাভানের (Caravan) ব্যবসা-সামগ্রীর মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে ও বলে,

"হে কুরাইশ নেতা, মুহাম্মদ আপনাদের প্রতি জুলুম করেছে ও আপনাদের শ্রেষ্ঠ মানুষদের খুন করেছে; সুতরাং আপনাদের এই ধন-সম্পদ দিয়ে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আমাদের সাহায্য করুন, যাতে আমরা যাদেরকে হারিয়েছি তাদের হত্যার প্রতিশোধ নিতে পারি", এবং তারা তা-ই করেছিল।

এক পণ্ডিত ব্যক্তি আমাকে বলেছেন যে, তাদের বিষয়ে আল্লাহ নাজিল করে:

৮:৩৭ (৮:৩৬)- "নিঃসন্দেহে যেসব লোক কাফের, তারা ব্যয় করে নিজেদের ধন-সম্পদ, যাতে করে বাধাদান করতে পারে আল্লাহর পথে। বস্তুতঃ এখন তারা আরো ব্যয় করবে। তারপর তাই তাদের জন্য আক্ষেপের কারণ হয়ে এবং শেষ পর্যন্ত তারা হেরে যাবে। আর যারা কাফের তাদেরকে দোযখের দিকে তাড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।"

যার ফলে কুরাইশরা, আবু সুফিয়ান ও কারাভানের মালিকরা, তাদের কালো সৈন্যরা, বানু কেনানা গোত্রের কিছু উপজাতি যারা তাদের মান্য করতো ও নিম্ন-ভূমির লোকজন আল্লাহর নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে একতাবদ্ধ হয়। 

যুবায়ের বিন মুতিম, ওয়াহাশি নামক তার এক আবিসিনিয়া দাসকে তলব করে, যে আবিসিনিয়া-বাসীদের মত বর্শা নিক্ষেপ করতে পারতো এবং যার নিশানা হতো কদাচিৎ লক্ষ্যভ্রষ্ট। সে তাকে বলে,

"সেনাদের সঙ্গে যাও। যদি তুমি আমার চাচা তুয়েইমা বিন আদির খুনের প্রতিশোধে মুহাম্মদের চাচা হামজাকে হত্যা করতে পারো, তবে তুমি হবে দাসত্ব মুক্ত।” 

তারপর কুরাইশরা তাদের কালো সৈন্য, বানু কেনানা গোত্রের কিছু উপজাতি যারা তাদের মান্য করতো ও নিম্ন-ভূমির লোকজন নিয়ে দৃঢ়ভাবে অগ্রসর হয়। তাদের ক্রোধকে উজ্জীবিত ও পলায়নপরতাকে প্রতিহত করার জন্য তাদের সাথে যোগদান করে মহিলারা,যারা ছিল হাওদার (উটের পিঠের উপর চাপানো ডুলি) মধ্যে।

নেতৃত্বে ছিলেন আবু সুফিয়ান, তাঁর সাথে ছিল হিন্দ বিনতে উতবা বিন রাবিয়া; ইকরিমা বিন আবু জেহেলের সাথে ছিল উম্মে হাকিম বিনতে আল-হারিথ বিন হিশাম বিন আল-মুঘিরা ---- ।’ [1]

আবু জাফর আল-তাবারীর (৮৩৯-৯২৩ সাল) বর্ণনা:

'বলা হয় এটি সংঘটিত হয়েছিল হিজরতের তৃতীয় বর্ষের ৭ ই শওয়াল, শনিবার (মার্চ ২৩, ৬২৫ সাল)।

যে কারণে আল্লাহর নবীর বিরুদ্ধে মুশরিক কুরাইশদের এই উহুদ যুদ্ধ টি সংঘটিত হয়েছিল তা হলো বদর যুদ্ধ এবং সম্ভ্রান্ত ও নেতৃস্থানীয় কুরাইশ নেতৃবর্গের খুন হওয়ার ঘটনা।

আবু সুফিয়ান ও কারাভানের মালিকরা সম্মত হলে কুরাইশরা আল্লাহর নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সংঘটিত হয়, তাদের সাথে যোগ দিয়েছিল তাদের 'আহাবিশ', কেনানার উপগোত্রের লোকেরা এবং তিনামার লোকজন যারা তাদের মান্য করতো। এই সমস্ত লোকেরা আল্লাহর নবীর বিরুদ্ধে যুদ্ধের দাবি উত্থাপন করে। [2] [3]  

ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি। - অনুবাদ, টাইটেল ও [**] যোগ - লেখক।]

The narrative of Muhammad Ibne Ishaq (704-768 AD):

I have pieced together the following story about the battle of Uhud, from what I was told by Muhammad b. Muslim al-Zuhri and Muhammad b. Yahya b. Hibban and 'Asim b. 'Umar b. Qatada and Al-Husayn b. 'Abdu'l-Rahman b. 'Amr b. Sa'd b. Mu'adh and other learned traditionists. One or the other, or all of them, is responsible for the following narrative.

When the unbelieving Quraysh met disaster at Badr and the survivors returned to Mecca and Abu Sufyan b. Harb had returned with his carvan, 'Abdullah b. Abu Rabi'a and 'Ikrma b. Abu Jahl and Safwan b. Umayya walked with the men whose fathers, sons, and brothers had been killed at Badr, and they spoke to Abu Sufyan and those who had merchandise in that caravan, saying,

'Men of Quraysh, Muhammad has wronged you and killed your best men, so help us with this money to fight him, so that we may hope to get our revenge for those we have lost,' and they did so.

A learned person told me that it was concerning them that Allah sent down:

8.37 [8:36] - 'Those who disbelieve spend their money to keep others from the way of Allah, and they will spend it, then they will suffer the loss of it, then they will be overcome, and those who disbelieve will be gathered to Hell.'

So Quraysh gathered together to fight the apostle when Abu Sufyan did this, and the owners of the caravan, with their black troops, and such of the tribes of Kinana as would obey them, and the people of the low country.

Jubayr b. Mut'im summoned an Abyssinian slave of his called Wahshi, who could throw a javelin as the Abyssinians do and seldom missed the mark. He said,

'Go forth with the army, and if you kill Hamza, Muhammad's uncle, in revenge for my uncle, Tu'ayma b.'Adiy, you shall be free.'

So Quraysh marched forth with the flower of their army, and their black troops, and their adherents from the B. Kinana, and the people of the lowland, and women in howdahs went with them to stir up their anger and prevent their running away.

Abu Sufyan, who was in command, went out with Hind d. 'Utba b. Rabiah; and 'Ikrima b. 'Abu Jahl went with Umm Hakim d. al-Harith b. Hisham b. al-Mughira;   -----.’  [1]

The narrative of Abu Jafar al Tabari (839-923 AD): page-1384-

This is said to have been on Saturday, 7 Shawal, in year three of Hizra (March 23, 625).

What provoked the expedition to Uhud by the polytheist of Quraysh against the Messenger of God was the battle of Badr and the killing of those nobles and chiefs of Quraysh who were killed. ---

When Abu Sufyan and the owners of the caravan agreed to this, Quraysh assembled to wage war against the messenger of God, together with their ahabish (*ahabish – meaning “group of people not all from one tribe” were a confedeacy of small clans or subtribes. The most important was Banu al-Harith b. Abd Manat b, Kinana; others were al-Mustaliq and al-Hun) and those of the tribes of Kinana and the people of Tinamah who obeyed them. All of these people raised a clamour to wage war against the messenger of God.  [2] [3]

>>> মুহাম্মদের মক্কায় অবস্থানকালে কুরাইশরা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে তখনই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, যখন মুহাম্মদ তাঁদের পূজনীয় দেব-দেবী, ধর্ম, কৃষ্টি-সভ্যতা ও পূর্ব-পুরুষদের তাচ্ছিল্য করা শুরু করেছিলেন। সর্বাবস্থায় মুহম্মদ ও তাঁর অনুসারীরাই ছিলেন আগ্রাসী! আর কুরাইশরা ছিল সেই আগ্রাসনের লক্ষ্যবস্তু। মুহাম্মদ তাঁর ধর্ম রক্ষার প্রয়োজনে মদিনায় স্বেচ্ছা-নির্বাসনে বাধ্য হয়েছিলেন। (পর্ব ৪১-৪২); মদিনায় এসে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা বিনা উস্কানিতে কুরাইশদের জীবিকা অর্জনের ক্ষতিসাধন ও শারীরিক আক্রমণ শুরু করেন। পরিণতিতে হয় বদর যুদ্ধ!

বদর যুদ্ধে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা তাঁদেরই একান্ত পরিবার সদস্য, নিকট-আত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশী অথবা বন্ধু-বান্ধব ৭০ জন কুরাইশকে নৃশংসভাবে করেছিলেন খুন ও ৭০ জন কুরাইশকে করেছিলেন বন্দী।খুন করার পর সেই লাশগুলোকে চরম অশ্রদ্ধায় তারা বদর প্রান্তের এক নোংরা শুষ্ক গর্তে একে একে নিক্ষেপ করেছিলেন (পর্ব ৩২-৩৩)।

৭০ জন বন্দিকে মদিনায় ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রাক্কালে মুহাম্মদের আদেশে পথিমধ্যেই তাঁদের দু'জনকে বন্দী অবস্থাতেই করেছিলেন খুন (পর্ব-৩৫); বাকি ৬৮ জন বন্দীর মধ্যে পাঁচজনকে বিভিন্ন কারণে বিনা মুক্তিপণেই ছেড়ে দেয়া হয়; বাঁকি ৬৩ জন বন্দীর প্রত্যেকের পরিবার সদস্য/নিকটআত্মীয়দের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা (পর্ব-৩৭)।

সেই অবস্থায় কুরাইশদের ঘরে ঘরে উঠেছিল কান্নার রোল! মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা অতিরিক্ত মুক্তিপণ দাবি করতে পারে এই আশংকায় তাঁরা উচ্চস্বরে বিলাপও করতে পারেননি!

ইসলামের ইতিহাসের আদি উৎসের বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় যে বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট, তা হলো - ওহুদ যুদ্ধের আদি কারণ হলো "বদর যুদ্ধ"! বদর যুদ্ধে নিহত পরিবার সদস্য, নিকটআত্মীয়, পাড়া-প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবদের খুন ও অপমানের প্রতিশোধ নিতেই কুরাইশরা নিজেদের ওহুদ যুদ্ধে জড়িয়েছিলেন। বদর যুদ্ধের মতই ওহুদ যুদ্ধ ও ছিল মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের আগ্রাসী নৃশংস কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কুরাইশদের প্রতিরক্ষা যুদ্ধ!

এটি কোনো ধর্মযুদ্ধ ছিল না।

(চলবে) 

[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হেরেম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া; অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট অনুবাদকারীর পাশাপাশি অনুবাদ এখানে।] 

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৩৭০-৩৭১

[2] ‘আহাবিশ' অর্থ হলো ছোট ছোট গোত্র অথবা উপজাতি হতে আগত একদল লোক যারা পারস্পরিক সহায়তার উদ্দেশ্যে জোটবদ্ধ, যারা নির্দিষ্ট কোন বড় একক গোত্রের লোক নয়। তাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণরা হলো বানু আল-হারিথা বিন আবদ মানাথ বিন কিনানা; অন্যান্যরা হলো আল-মুসতালিক ও আল-হুন।

[3] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ),ভলুউম ৭, ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-88706-344-6 [ISBN 0-88706-345-4 (pbk)], পৃষ্ঠা (Leiden) - ১৩৮৪-১৩৮৫ 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন