লিখেছেন শ্রোডিঞ্জারের বিড়াল
১.
মুসলমানরা প্রায়ই দাবি করে যে, তারা ব্যক্তিপূজা, বস্তুপূজা করে না।
অথচ বালছাল ইসলমি পেজগুলোতে মুহাম্মদের পায়ের ছাপ, ব্যবহৃত পেয়ালা, গায়ের কাপড় থেকে শুরু করে একটা কাচের কৌটায় মুহাম্মদের বাল কয়েকটি কালো কালো এর ছবিতেও লাখে লাখে লাইক, আর কমেন্টে সুবহানাল্লাহ, জাজাকাল্লাহ, আমার চোখ ধন্য, একবার যদি দেখতে যেতে পারতাম, একবার যদি চুমু খেতে পারতাম ইত্যাদি ইত্যাদি বন্দনার বন্যা বয়ে চলছে।
ব্যক্তি মুহাম্মদকে শুধু একজন নবী, শেষ নবী, সেরা নবী ইত্যাদি বলে উল্লেখ করলেও, সুন্নি ও সুফি ঘরানার ইসলাম মূলেই মুহাম্মদের পূজারী।
লা ইলাহা ইল্লালাহ - এতটুকুর পর "মুহাম্মাদূর রাসুলুল্লা" এই কথাটা বলা বাইরের থেকে দেখলে ইসলামের কিছু মূল অংশের সাথেই সাংঘর্ষিক, শীরক।
ব্যক্তি মুহাম্মদ আসলে মুসলমানদের কাছে দেবতার মত, স্বীকার করতে না চাইলেও অধিকাংশ মুসলমানকেই এমনভাবে বড় করা হয়, যাতে মুহাম্মদ তাদের মনে দেবতার স্থান পায়।
আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাই দেখুন, ক্লাশ টেন পর্যন্ত পড়া একজন ছাত্রের তার শিক্ষাজীবনের সব ইসলামি বই পড়ে ধারণা হয়, যেন নবীজির সারা জীবনে স্ত্রী ছিলেন শুধু একজন, খাদিজা। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা মোহাম্মদের গ্লোরিফাইড রং চড়ানো চেরি-পিকড জীবনী তাদেরকে পড়ানো হয়।
অথচ সেখানে নেই তার অগনিত বিয়ে, দাসী, যুদ্ধবন্দী ভোগের কথা,
সেখানে নেই তার পরাজিত যুদ্ধগুলোর কথা,
সেখানে নেই মুহাম্মদের কোরানকে পুস্তকরূপে গুছিয়ে রেখে যেতে না পারার মত ব্যর্থতার কথা,
সেখানে নেই মুহাম্মদের শিশুবধূ আয়েশাকে পেটানোর কথা, সেখানে নেই তার মৃত্যুর রহস্যের কথা।
একটা শিশুর কাছে মোহাম্মদের জীবনকে ভুলহীন, পাপহীন, বিশুদ্ধ, যে কোন প্রশ্নের ঊর্ধ্বে এমন একজন দেবতা হিসেবে তুলে ধরা হয় যে, মোহাম্মদ শিশুদের মনে পায় দেবতার স্থান। তাই তো মুহাম্মদকে নিয়ে কার্টুন আঁকলে, ছবি বানালে, তার সত্যিকারের কুকীর্তির কথাগুলো, সত্য গুলো প্রকাশ করলে দেবতার বিরুদ্ধাচরণে মুমিন সমাজ ফুঁসলে ওঠে, আগুন জ্বালায়, ভাংচুর করে, এদিক সেদিকে ছিটকে পড়ে রক্ত, বোমার আওয়াজে শন শন করে কান, ধুলোর মাঝে পড়ে থাকে দেবতার সম্মান রক্ষার্থে উৎসর্গ করা দেহহীন মস্তকগুলো...
২.
RadioShongi নামের একটা পেজে একটা সাদাকালো ছবি দেয়া আছে: কাবা শরীফের ১০০০ বছর আগের ছবি, এর জন্য কয়টি লাইক?
ওই ছবিতে এক লক্ষ পচিশ হাজার লাইকই প্রমাণ করে যে, ধর্মে অন্ধবিশ্বাস মানুষকে কতটা বোকাচোদা বানাতে পারে। সুবহানাল্লাহ বইলা লাইক দেয়ার আগে ওই বোকাচুদাগুলা একবারও ভেবে দেখে নাই যে, ১০০০ বছর আগে ক্যামেরা ছিল না।
ঠিক একইভাবে ধর্ম বিষয়ক যে কোনো জিনিসে অন্ধবিশ্বাস, কোনো ধরনের লজিকাল বিবেচনা, প্রশ্ন না করেই মেনে নেয়ার যে মানসিক সমস্যাটা, সেটার কারণেই ধার্মিকরা নিজেদের ধর্মের কিতাবের ভুলগুলো, প্রকট ও প্রকাশ্য ব্লাণ্ডারগুলো ধরতে পারে না। কোনো কিছু খটকা লাগলেও নিজেকে একটা কিছু বুঝ দিয়ে ঠিকই একটা সমাধান বুঝে নেয়। নিজেই নিজেকে বুঝ দেয় যে, খটকা লাগার কিছু নাই, এইটা আমার ঈমানদণ্ডের সমস্যা। আমার ঈমানদণ্ড যথেষ্ট খাড়া ও শক্ত না, তাই খটকা লাগতেছে। ধর্মের অন্ধবিশ্বাসে নিজেকে নিজে বুঝ দেয়ার এই ব্যাপারটাকে বলা হয় "Self affirming faith" যার ভাবানুবাদ করা যায় - "ছেলেভোলানো বিশ্বাস"।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন