সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৪

ওহুদ যুদ্ধ - ৭: আহত মুহাম্মদ!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব-৬০): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – তেত্রিশ

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯

স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীরা যখন কুরাইশদের শিবিরের মালামাল “লুণ্ঠনকর্মে ব্যস্ত”, তখন কীরূপে খালিদ বিন ওয়ালিদের পরিচালনায় কুরাইশদের অশ্বারোহী বাহিনী ও অন্যান্য কুরাইশ পদাতিক বাহিনী পিছন দিক থেকে মুসলমানদের আক্রমণ করেছিলেন তার আলোচনা পর্ব ৫৮-তে করা হয়েছে।

অতর্কিত আক্রমণে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা সম্পূর্ণরূপে পর্যুদস্ত হয়ে পড়েন। কুরাইশরা তাদের বহু লোককে করেন হতাহত। মুহাম্মদ নিজেও গুরুতর আহত হন। যে-লোকটি মুহাম্মদকে আহত করেন, তাঁর নাম ওতবা বিন আবি ওয়াকাস।

আবু জাফর আল-তাবারীর (৮৩৮-৯২৩ সাল) বর্ণনা:

'মুসলমানেরা পিছন দিক থেকে আক্রান্ত হয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন, মুশরিকরা (polytheist) তাদের অনেককে করেন খুন। মুসলমানরা এই আকস্মিক বিপত্তির সম্মুখীন হয়ে দুর্দশাগ্রস্ত হন তিন ভাবে: কিছু লোক খুন হন, কিছু লোক হন আহত এবং কিছু লোক যান পালিয়ে। পলায়নরত লোকেরা যুদ্ধে এতই পরিশ্রান্ত ছিলেন যে, তাঁরা জানতেন না, তাঁরা কী করছেন।

আল্লাহর নবীর নিচের সারির পাশের কর্তন দন্ত (Lower lateral Incisor teeth) ভেঙে যায়, তাঁর ঠোঁট লম্বালম্বিভাবে যায় কেটে এবং তিনি তাঁর গালে ও মাথার চুলের নিচ বরাবর কপালে আঘাত প্রাপ্ত হোন।

ইবনে কামিয়াহ তরবারি সমেত তাঁর বাম পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। যে-লোকটি তাঁকে আহত করেন তার নাম ওতবা বিন আবি ওয়াকাস।’ [1]

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনা:

‘মুসলমানরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হন এবং শত্রুরা তাদের অনেককে করেন খুন। সেটি ছিল বিচার ও পরীক্ষার দিন যেদিন আল্লাহ বেশকিছু লোককে শহীদের মর্যাদায় সম্মানিত করে।

শত্রুরা আল্লাহর নবীর কাছে পৌঁছে এবং পাথরের আঘাতে তিনি ভূপাতিত হন,তাঁর একটা দাঁত থেঁতলে যায় ও মুখমণ্ডল ও ঠোঁটে হন আঘাতপ্রাপ্ত। ---

হুমায়েদ আল-তাওয়িল হইতে <আনাস বিন মালিক হইতে বর্ণিত তথ্যের ভিত্তিতে আমাকে [মুহাম্মদ ইবনে ইশাক] জানিয়েছেন:

ওহুদ যুদ্ধের দিন আল্লাহর নবীর কর্তনদন্ত ভেঙে যায় ও তিনি মুখমণ্ডলে আঘাতপ্রাপ্ত হোন। তাঁর মুখমণ্ডল থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয় ও তিনি তা মুছতে থাকেন এবং বলেন,

"যখন নবী লোকদের আল্লাহর দিকে আহ্বান করে, তখন তাঁর মুখমণ্ডল রক্তরঞ্জিত করে কীভাবে তারা উন্নতিলাভ করতে পারে?"

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ নাজিল করে,

৩:১২৮ – ‘হয় আল্লাহ তাদের ক্ষমা করবেন কিংবা তাদেরকে আযাব দেবেন। এ ব্যাপারে আপনার কোন করণীয় নাই। কারণ তারা রয়েছে অন্যায়ের উপর।’ [1][2]

'রুবাইয়া বিন আবদুর রহমান বিন আবু সাইদ আল-খুদরি হইতে < তার পিতা আবু সাইদ আল-খুদরি হইতে উদ্ধৃত:

ঐ দিন ওতবা বিন আবু ওয়াকাস আল্লাহর নবীকে ভূপাতিত করেন এবং তাঁর দাঁতের নিচের সারির ডান পাশের কর্তনদন্ত ভেঙে ফেলেন ও তাঁর নিচের ঠোঁট জখম করেন, আবদুল্লাহ বিন শিহাব আল-জুহরি তাঁর কপাল (forehead) জখম করেন এবং ইবনে কামিয়াহ জখম করেন তাঁর গালের হাড়।

আল্লাহর নবীর শিরস্ত্রাণের দু'টি আংটা তাঁর গালে ঢুকে যায় এবং তিনি একটি গর্তে পড়ে যান, যে-গর্তটি আবু আমির তৈরি করে রেখেছিলেন যাতে মুসলমানেরা অসাবধান অবস্থায় তাতে পড়ে যায়।

আলী আল্লাহর নবীর হাত ধরে রাখেন এবং তালহা ইবনে ওবায়েদুল্লাহ তাঁকে টেনে ওঠান যতক্ষণে না তিনি খাড়া হয়ে দাঁড়াতে পারেন।

আবু সাইদ আল-খুদরির পিতা মালিক বিন সিনান আল্লাহর নবীর মুখমণ্ডল থেকে রক্ত চুষে নেন। তারপর তিনি তা গিলে ফেলেন (--sucked the blood from apostle’s face. Then he swallowed it)।

আল্লাহর নবী বলেন, "যার রক্ত আমার রক্তের সাথে মিশ্রিত হয় (mingles) তাকে দোজখের আগুন স্পর্শ করবে না।"

আবদুল আজিজ বিন মুহাম্মদ আল-দারাওয়ার্দি বলেন যে আল্লাহর নবী বলেছেন,

"যদি কোনো লোক পৃথিবীর বুকে হাঁটাচলা করা কোন শহীদ (martyr)-কে দেখতে ইচ্ছা প্রকাশ করে, তবে সে যেন তালহা ইবনে ওবায়েদুল্লাহ কে তাকিয়ে দেখে।"

আবদুল আজিজ হইতে <ইশাক বিন ইয়াহিয়া হইতে <ইসা বিন তালহা হইতে <আয়েশা হইতে < আবু বকর হইতে বর্ণিত:

আবু ওবায়েদা বিন আল-যাররাহ ঐ আংটাগুলোর একটি আল্লাহর নবীর মুখমণ্ডল থেকে টেনে তুলে ফেলেন এবং তাঁর সামনের দাঁত খসে পড়ে। তিনি অন্য আংটাটি টেনে তুলে ফেলেন এবং তাঁর অন্য কর্তনদন্তটি খসে পড়ে।’ [3]

>>> মুহাম্মদের উপর মক্কার কুরাইশদের এই শারীরিক আক্রমণ ও তাঁকে রক্তাক্ত করার এই পর্যায়ে একটি প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সংক্ষিপ্ত আলোচনার (বিস্তারিত আইয়্যামে জাহিলিয়াত পর্বে) বিশেষ প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।   

পৃথিবীর প্রায় সকল ইসলাম বিশ্বাসী সাধারণ মুসলমান এবং পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন যে, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর মক্কায় অবস্থানকালীন নবী-জীবনে (৬১০- ৬২২ খৃষ্টাব্দ) মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মদের ওপর অমানুষিক ও অকথ্য নির্যাতন চালিয়েছিলেন।

তাঁদের এই বিশ্বাসের সপক্ষে যখন সুনির্দিষ্ট প্রমাণ(Specific evidence) দাবী করা হয়; অথবা তাঁদের কাছে যখন সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চাওয়া হয়,

“মক্কার কুরাইশরা মুহাম্মদের উপর কী ধরনের অকথ্য শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন?"

তখন তাঁরা প্রায় সঙ্গে সঙ্গে যে-উদাহরণটি হাজির করেন, তা হলো,

"তায়েফের লোকেরা নবীর উপর অকথ্য শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন, তাঁর শরীর থেকে এত রক্ত ঝরেছিল যে তাঁর পাদুকা মোবারক রক্তে ভর্তি হয়ে গিয়েছিল----!” (কী কারণে তায়েফবাসী মুহাম্মদকে মারধর করেছিলেন, তার বিশদ আলোচনা “মুহাম্মদের তায়েফ গমন" পর্বে করা হবে)। 

সুনির্দিষ্ট ("মক্কার কুরাইশরা") প্রশ্নের জবাবে এমন একটি অপ্রাসঙ্গিক উত্তর শোনার পর যখন তাঁদের আবারও জিজ্ঞাসা করা হয়,

"তায়েফবাসীরা নয়, মক্কাবাসী কুরাইশরাকী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর কখনো কোন অমানুষিক শারীরিক অত্যাচার চালিয়েছিলেন?"

তখন তাঁরা যে দুটি উদাহরণ পেশ করেন তা হলো:

১) জনৈক কুরাইশ মুহাম্মদের মাথায় ও মুখে ধুলা (ভেড়ার নাড়িভুঁড়ি) নিক্ষেপ করেন
২) কুরাইশরা মুহাম্মদের জামা-পায়জামা (গলায় কাপড়ের ফাঁস) ধরে টানা-টানি করেন ।

মক্কাবাসী কোনো কুরাইশ মুহাম্মদ কিংবা তাঁর কোনো অনুসারীকে কখনো কোনো হুমকি-শাসানী-ভীতি প্রদর্শন, অভিশাপ বর্ষণ, শারীরিক আক্রমণ অথবা খুন করেছেন; কিংবাতাঁদের সহায় সম্পত্তি ও মালামাল লুণ্ঠন ও ভাগাভাগি করেছেন, এমন কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য ইসলামের ইতিহাসের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য দলিল কুরানের কোথাও নেই।

অন্যদিকে, মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা অবিশ্বাসীদের উদ্দেশে যে কী পরিমাণ তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য, হুমকি-শাসানী-ভীতি প্রদর্শন ও অভিশাপ বর্ষণ করেছেন; কীভাবে তাঁদের আক্রমণ ও খুন করেছেন; কী প্রক্রিয়ায় তাঁদের ভিটেমাটি থেকে বিতাড়িত, সহায় সম্পত্তি ও মালামাল লুণ্ঠন ও ভাগাভাগি করেছেন - তা মুহাম্মদ নিজেই তাঁর স্বরচিত বাণী কুরানে বিভিন্নভাবে প্রকাশ করেছেন। এ সমস্ত বিষয়ের প্রাসঙ্গিক আলোচনা পর্ব ১১-১২, ২৬-২৭, ৩৩-৩৪, ৩৬-৩৭, ৫১-৫২ তে করা হয়েছে; পরবর্তী পর্বগুলোতেও তা ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা হবে।

যদিও কুরানে এরূপ কোনো ঘটনার সুনির্দিষ্ট বর্ণনা অনুপস্থিত, মুহাম্মদের মৃত্যুর বহু বছর পর ইসলামে নিবেদিতপ্রাণ আদি মুসলিম ঐতিহাসিকরা তাঁদের রচিত সিরাত ও হাদিস গ্রন্থে মক্কার কুরাইশদের দ্বারা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের উপর কিছু শারীরিক আক্রমণ ও “একজন” মুহাম্মদ অনুসারীকে খুনের উপাখ্যান বর্ণনা করেছেন।

ইসলামে নিবেদিত এ সকল আদি মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, জনৈক নবীন অভদ্র লোক (a young lout) মুহাম্মদের মুখে ধুলা (আল-তাবারী: ভেড়ার নাড়িভুঁড়ি) নিক্ষেপ করেছিলেন!

উক্ত ঘটনাটি ঘটেছিল মুহাম্মদের প্রথমা স্ত্রী খাদিজা ও চাচা আবু তালিবের মৃত্যুর পর; হিজরতের বছর তিনেক আগে (৬১৯ সাল)। চাচা আবু তালিবের জীবিত অবস্থায় কুরাইশরা আবু তালিবের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবশত মুহাম্মদের যাবতীয় তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও তাঁদের দেব-দেবী ও পূর্বপুরুষদের অপমান সহ্য করেছিলেন সুদীর্ঘ নয়টি বছর!

ইবনে ইশাকের বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, ঐ ঘটনার পর মুহাম্মদের স্বীকারোক্তি,

“--আবু তালিবের জীবিত অবস্থায় কুরাইশরা আমার সাথে কখনোই এমন ব্যবহার করে নাই (--Quraysh never treated me thus while Abu Talib was alive)।” [4][5][6] 

আদি উৎসের বর্ণনায় আমরা আরও জানতে পারি যে কুরাইশরা মুহাম্মদের পোশাক (Robe) ধরে টানাটানি [আল-তাবারী: তাঁর গলার চারিদিকে পোশাক জড়িয়ে টুঁটি টেপা (twisted his robe round his neck and throttled him violently)] করেছিলেন।

কারণ?

ইবনে ইশাকের বর্ণনা মতে, উক্ত ঘটনার আগের দিন কিছু কুরাইশ ক্বাবা শরিফের পাশে বসে মুহাম্মদের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করছিলেন। এমন অবস্থায় মুহাম্মদ যখন তাঁদের পাশ দিয়ে ক্বাবা ঘরের দিকে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁরা মুহাম্মদকে উপহাস করেন। জবাবে মুহাম্মদ ঘুরে দাঁড়িয়ে তাঁদের কে হুমকি দেন এই বলে:


“হে কুরাইশ, শুনে রাখ! 
কসম, যার হাতে আমার জীবন; ‘আমি তোদের জবাই করবো!” [7] [8]
(“Will you listen to me O Quraysh? By Him who holds my life in His hand, I bring you slaughter!”)

মুহাম্মদের এমন ব্যবহারে উপস্থিত কুরাইশরা স্তব্ধ হয়ে যান। পরের দিন ঐ কুরাইশরা পুনরায় মিলিত হোন; মুহাম্মদের ঐ হুমকির জবাবে তাঁর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান ও উক্ত ঘটনাটি ঘটান। 

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের বর্ণনা: 

‘মুহাম্মদের উপর কুরাইশদের সবচেয়ে নিকৃষ্ট অত্যাচারটি ছিল মুহাম্মদের পোশাক ধরে কুরাইশদের এই টানাটানি!" 
("--And I saw one of them seized his robe. That is the worst that I ever saw Quraysh do to him”. ) 

আল-তাবারীর বর্ণনা মতে এই ঘটনাটি ঘটিয়েছিলেন ওকবা বিন আবু মুয়ায়েত (Uqbah bin Abi Mu’ayt). এই সেই ওকবা বিন আবু মুয়ায়েত যাকে বদর যুদ্ধে মুহাম্মদ বন্দী করেছিলেন এবং মদিনায় প্রত্যাবর্তনের প্রাক্কালে মুহাম্মদ তাঁকে বন্দী অবস্থাতেই খুন করার আদেশ জারি করলে ওকবা তাঁর সন্তানদের ভবিষ্যৎ চিন্তায় মুহাম্মদের কাছে কাকুতি মিনতি করে বলেন, 

"হে মুহাম্মদ, তাহলে আমার সন্তানদের কে দেখাশোনা করবে?" 
মুহাম্মদ জবাবে বলেন, "জাহান্নাম"। (পর্ব-৩৫)

অর্থাৎ ওহুদ যুদ্ধের আগে কোনো মক্কাবাসী কুরাইশ মুহাম্মদকে কখনো কোনো শারীরিক আঘাতে রক্তাক্ত করেছেন, এমন একটি উদাহরণ ও আদি মুসলিম ঐতিহাসিকদের বর্ণনার কোথাও খুঁজে পাওয়া যায় না। 

শুধু তাইই নয়, মুহাম্মদের মক্কায় অবস্থানকালীন সেই দুর্বল অবস্থায়ও (পর্ব-৫৯) সর্বপ্রথম যে-ব্যক্তিটি শারীরিক আঘাতে প্রতিপক্ষের গায়ের রক্ত ঝরিয়েছিলেন, সেই আঘাতকারী ব্যক্তিটি ছিলেন একজন নিবেদিত প্রাণ মুহাম্মদ অনুসারী! কুরাইশরা নয়! আঘাতকারী সেই ব্যক্তিটির নাম সা’দ বিন আবি-ওয়াকাস

মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের বর্ণনা:

"Sa’d smote a polytheist with the jaw bone of a camel and wounded him. 
This was the first blood to be shed in Islam". [9]

(চলবে)

[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া; অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট অনুবাদকারীর পাশাপাশি অনুবাদ এখানে। 

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৩৮০

[2] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক:  আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৭, ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪০৩

[3] Ibid মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, পৃষ্ঠা-৭৫৪ (ইবনে হিশামের নোট -নম্বর ৫৯৮)

[4] Ibid মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, পৃষ্ঠা-১৯১
[5] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক:  আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৬, ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, Albany, ১৯৮৮; ISBN 0-88706-707-7; পৃষ্ঠা (Leiden) ১১৯৯-১২০০

[6] সহি বুখারী, ভলিউম ১, বই ৯, নম্বর ৪৯৯

[7] Ibid মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, পৃষ্ঠা-১৩০-১৩১
[8] Ibid আল-তাবারী, ভলুউম ৬, পৃষ্ঠা (Leiden) ১১৮৬

[9] Ibid মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, পৃষ্ঠা - ১১৮

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন