লিখেছেন দাঁড়িপাল্লা ধমাধম
ইসলাম রক্ষাকারী সমিতির মহান সেবক আইসিস একটি ২৫টি প্রশ্নের FAQ-প্রশ্নোত্তর পর্ব প্রকাশ করছে। সেটার ভাবানুবাদ।
প্রশ্ন ১: আল-সাবি কী?
- গনিমতের মালদের মধ্যে যারা নারী, তাদেরকে আল-সাবি বলা হয়।
প্রশ্ন ২: আল-সাবি কীভাবে জায়েয হয়?
- গনিমতের মালের আওতায় থাকা নারীরা কাফের/অবিশ্বাসী/বিধর্মী হলে কোনো ইমাম তাদেরকে আমাদের মধ্যে বিলিবন্টন করে দেয়ার পরে জায়েজ হবে।
প্রশ্ন ৩: সব কাফের নারীদের গনিমতের মাল বানানো যাবে?
- মুশরিকদের (অর্থাৎ আহলে কিতাবগণ, ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে থেকে নারী) গনিমতের মাল বানানোর অনুমতি আছে, এ নিয়ে ইসলামি পণ্ডিতদের মধ্যে কোনো বিতর্ক নেই। কেউ কেউ আপত্তি তুললেও বেশিরভাগেই এটাকে জায়েজ মনে করে। আমরা আইসিসরাও বেশিরভাগ পণ্ডিতদের মতামত মেনে নিয়ে এটাকে জায়েজ হিসেবেই ধরেছি।
প্রশ্ন ৪: মহিলা গনিমতের মালদের যৌনদাসী বানানো কি জায়েজ?
- হ্যাঁ, মহিলা গনিমতের মালদের যৌনদাসী বানানো জায়েজ। সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেন: মুশরিকদের স্ত্রী অথবা বন্দী ও মালিকানাভুক্ত দাসীদের ক্ষেত্রে আমাদের যৌনাঙ্গকে সংযত না রাখলে আমরা তিরস্কৃত হবে না (কুরআন ২৩: ৫-৬)।
প্রশ্ন ৫: দখল নেয়ার সাথে সাথে মহিলা গনিমতের মাল ভোগ করা কি জায়েজ?
- গনিমতের মাল যদি কুমারী হয়, তাহলে দখল নেয়ার সাথে সাথে তাকে ভোগ করা জায়েজ। কুমারী না হলে আগে তার যৌনাঙ্গ হালাল করে নিতে হবে।
প্রশ্ন ৬: গনিমতের মাল বিক্রি করা যাবে কি?
- মুসলিম উম্মাহর জন্য ক্ষতিকর না হলে গনিমতের মাল, নারী বন্দী, ক্রীতদাসী, যৌনদাসীদের ক্রয়-বিক্রয় এবং উপহার হিসেবে দান করা জায়েজ আছে।
প্রশ্ন ৭: ক্রয় এবং বিক্রয় আইনে মহিলা গনিমতের মাল থেকে তাদের সন্তানদের আলাদা করা কি জায়েজ হবে?
- এটা জায়েজ নয়। তবে সন্তান বড় হয়ে গেলে জায়েজ আছে।
প্রশ্ন ৮: দুই বা ততোধিক পুরুষ একসঙ্গে একটি মহিলা গনিমতের মাল কিনে তাকে একত্রে ভোগ করা জায়েয আছে কি?
- একজন মালিক একচেটিয়াভাবে একজন মহিলা গনিমতের মালের অধিকারী না হলে একাধিক ক্রেতা তার সাথে যৌনক্রিয়ায় লিপ্ত হতে পারবে না। অন্য মালিক বা মালিকেরা যদি তাদের অংশীদারিত্ব ত্যাগ করলে তখন গনিমতের মাল শুধু একজনের মালিকানায় আসবে। তখন সেই একজন মালিক তাকে ভোগ করতে পারবে।
প্রশ্ন ৯: মালিক যদি তার অধিকৃত কোনো গনিমতের মালকে গর্ভবতী করে ফেলে, তারপর তিনি কি তাকে বিক্রি করতে পারেন?
- কোনো গনিমতের মাল যদি গর্ভবতী হয়ে যায়, তখন তাকে বিক্রি করা যাবে না।
প্রশ্ন ১০: মালিক মারা গেলে তার মালিকানাধীন মহিলা গনিমতের মাল সংক্রান্ত আইন কী?
- মালিকের অন্যান্য বিষয়সম্পত্তির সাথে তার অধিকৃত নারী গনিমতের মালও একইভাবে সম্পত্তি হিসাবে বিলিবন্টন করা হবে। যদি আগের মালিক অথবার মালিকের কোনো ছেলে এদেরকে আগেই ভোগ করে থাকে, অথবা একাধিক মালিকের অধীনে চলে যায়, তবে এরা শুধু ক্রীতদাসী হিসেবে সেবা দিতে পারবে, এদেরকে যৌনদাসী বানানো যাবে না।
প্রশ্ন ১১: একজন পুরুষ কি তার স্ত্রীর সেবাদাসীদের সাথে যৌন সম্পর্ক করতে পারবে?
- একজন পুরুষ তার স্ত্রীর সেবাদাসীদের সাথে যৌন সম্পর্ক করতে পারবে না, কারণ দাসীরা অন্য কারো (স্ত্রীর) অধীন।
প্রশ্ন ১২: একজন পুরুষ অনুমতি নিয়ে অন্য মালিকের অন্য যৌনদাসীদের চুম্বন করতে পারবে?
- কোনো যৌনদাসী একচেটিয়াভাবে নিজের অধীনে না আসা পর্যন্ত কেউ অন্য কারো যৌনদাসীকে তৃপ্তিলাভের উদ্দেশে চুম্মন বা জড়িয়ে ধরা নাজায়েজ।
প্রশ্ন ১৩: বয়ঃসন্ধিতে পৌঁছেনি যারা অর্থাৎ রজঃস্রাব হয়নি - এমন মহিলা ক্রীতদাসীদের সঙ্গে যৌনসংসর্গ কি অনুমোদনযোগ্য?
- রজঃস্রাব না হলেও যদি যৌনসংসর্গ করার উপযুক্ত হয়, তাহলে এটা জায়েজ। আর যদি যৌনসংসর্গ করার উপযুক্ত না হয়, তাহলে তার যৌনাঙ্গে লিঙ্গ প্রবেশ করানো ব্যতীত আর সব ভাবে ভোগ করা যাবে।
প্রশ্ন ১৪: সালাত আদায়ের সময় যৌনদাসীদের কোন কোন গোপনাঙ্গ ঢেকে রাখা আবশ্যক?
- অন্যান্যরা যেমন তাদের গোপনাঙ্গ ঢেকে রাখে, যৌনদাসীরাও সেভাবে সব গোপনাঙ্গ ঢেকে রাখবে, শুধু মাথা, ঘাড়, হাত ও পা অনাবৃত রাখতে পারবে।
প্রশ্ন ১৫: ক্রীতদাসীরা হিজাব ছাড়া ভিন পুরুষের সামনে যেতে পারবে কি?
- ক্রীতদাসীরা হিজাব ছাড়া ভিন পুরুষের সামনে যেতে পারবে, যদি ফিতনা এড়ানো যায়। ফিতনার সম্ভাবনা থাকলে শরীরের এসব অঙ্গ উন্মুক্ত রাখা নাজায়েজ।
প্রশ্ন ১৬: যৌনদাসীরা সম্পর্কে বোন হলে একত্রে তাদেরকে ভোগ করা যাবে?
- দুই বোন, বা কোন যৌনদাসী এবং সম্পর্কে তার ফুপু বা খালাকে ভোগ করা যাবে। তবে তাদেরকে একই সময়ে একত্রে ভোগ করা যাবে না।
প্রশ্ন ১৭: আল-আজল কী?
- আল-আজল হলো যৌনক্রিয়ার শেষে বীর্যপাতের সময় পুরুষাঙ্গ যৌনদাসীদের যৌনাঙ্গ থেকে বের করে বাইরে বীর্যপাত ঘটানো। দাসীরা যাতে গর্ভবতী না হয়, সেজন্য এটা করা হয়।
প্রশ্ন ১৮: কোনো মালিক কি তার যৌনদাসীদের সাথে যৌনক্রিয়ার সময় আল-আজল করতে পারবে?
- যৌনদাসীদের ইচ্ছা থাক বা না থাক, মালিক ইচ্ছা করলে আল-আজল করতে পারবে।
প্রশ্ন ১৯: যৌনদাসীদের প্রহার করা কি জায়েজ?
- হ্যাঁ, যৌনদাসীদের প্রহার করা জায়েজ। তবে সেটা শাস্তিপ্রদানের উদ্দেশ্যে হতে হবে। এছাড়া মানসিক তৃপ্তি লাভের জন্য অযথা প্রহার বা নির্যাতন করা যাবে না। এছাড়া মুখে আঘাত করা নিষিদ্ধ।
প্রশ্ন ২০: কোনো যৌনদাসী বা ক্রীতদাস-ক্রীতদাসী যদি তার মালিকের কাছ থেকে পালিয়ে যায়, তখন কী হবে?
- কোনো যৌনদাসী বা ক্রীতদাস-ক্রীতদাসী যদি তার মালিকের কাছ থেকে পালিয়ে যায়, তখন সেটা ভয়ঙ্কর পাপ হিসেবে গণ্য হবে।
প্রশ্ন ২১: কোনো যৌনদাসী বা ক্রীতদাসী যদি তার মালিকের কাছ থেকে পালিয়ে যায়, তখন তার পার্থিব শাস্তি কী?
- এক্ষেত্র শরিয়া আইনে কোনো শাস্তির বিধান নেই।
প্রশ্ন ২২: মুসলিম ক্রীতদাস-ক্রীতদাসী অথবা কিতবিয়া ক্রীতদাস-ক্রীতদাসী (অর্থাৎ, ইহুদি বা খ্রিষ্টান) বিয়ে করা জায়েয কি?
- ব্যভিচারের মত পাপ না করতে চাইলে একজন স্বাধীন মুসলমান পুরুষের জন্য মুসলিম অথবা কিতবিয়া ক্রীতদাসী বিয়ে করে নিষিদ্ধ।
প্রশ্ন ২৩: কোনো পুরুষ যদি অন্য কারো মালিকানাধীন ক্রীতদাসীকে বিয়ে করে, তাহলে সেই ক্রীতদাসীর সাথে কে বা কারা যৌনসম্পর্ক করতে পারবে?
- অন্যের বিবাহিত ক্রীতদাসীদের সাথে মালিকের যৌনক্রিয়া নিষিদ্ধ। তবে স্বামীদের সাথে যৌনক্রিয়াকালে মালিক ক্রীতদাসীদের সেবা নিতে পারে।
প্রশ্ন ২৪: হুদুদ আইন কি ক্রীতদাসীদের উপর প্রযোজ্য?
- (পরকীয়া এবং ধর্ষণ সংক্রান্ত) ক্রীতদাসীদের ওপর হুদুদ আইন প্রযোজ্য। এক্ষেত্রে হুদুদ প্রয়োগ হবে অর্ধেক।
প্রশ্ন ২৫: কোনো ক্রীতদাসীকে মুক্ত করে দিলে তার পুরস্কার কী?
- আল্লাহ কুরআনে বলেছেন: একজন ক্রীতদাসীকে মুক্ত করা মানে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত পাওয়া। এবং নবীজি বলেন: যে একজন বিশ্বাসীকে মুক্ত করে, আল্লাহ তার শরীরের সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে জাহান্নামের আগুন থেকে দূরে রাখে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন