আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারী, ২০১৫

মুমিনের স্ববিরোধিতা

লিখেছেন ঈশ্বরের প্রেতাত্মা

আমাদের ধার্মিক সমাজে বলতে শোনা যায়, দুনিয়াতে মানুষের যে সমস্ত রোগ/অসুখ হয়ে থাকে, সবকিছুই আল্লা দিয়েছেন। গত তিন দিন পুর্বে রাতে (মধ্যভাগে) হঠাৎ আমি খুব অসুস্থ হয়ে পড়ি। বমি, জ্বর সব একসাথে! মা কারণ ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে বললেন: আমি নাকি দিন দিন নাফরমান হয়ে যাচ্ছি, নামাজ-দোয়া ছেড়ে দিয়েছি, তাই আল্লা আমার উপর রাগান্বিত হয়ে শাস্তিস্বরূপ রোগ দিচ্ছেন কিংবা আমাকে কষ্ট দিচ্ছেন! কিন্তু আজ থেকে ঠিক দুই সপ্তাহ আগে আব্বু একই উপসর্গে কষ্ট পেয়েছিলেন। তখন মাকে আমার দৃষ্টিসম্মুখে বলতে শুনলাম: "আপনি তো একজন আলেম মানুষ! আপনি আল্লাহর প্রিয় বান্দা, তাই আল্লাহ আপনাকে রোগ দিয়ে পরীক্ষা করছেন।"

হয়তো আমার মা শুধু নয়, আরো অনেক ধার্মিকেরাই এ সব প্রলাপ বকেন!! কিন্তু লক্ষ্য করেন না তাঁদের চমৎকার স্ববিরোধিতা!

এই যেমন আমি যে-ওষুধ গ্রহণ করে সুস্থ হয়েছি, আব্বু ঠিক একই ওষুধ (শুধু ব্র্যান্ড পার্থক্য) গ্রহণ করে সুস্থ হয়েছেন। অথচ তবুও আব্বুর উপসর্গ (অসুখ) হয়ে গেলো ঈশ্বরের প্রিয়জনের প্রতি পরীক্ষা! আর আমার ব্যাপারে তা হলো শাস্তি!

অপারেশন থিয়েটারে রোগীকে প্রবেশ করানোর পর আমাদের মুমিন সমাজ হুলস্থুল কান্ড ঘটান! কেউ আল্লার কাছে কাঁদতে কাঁদতে চক্ষুজোড়া রক্তিম করে ফেলেন, কেউবা আবার নামাজ পড়তে পড়তে কপাল কালো করেও ক্ষান্ত হোন না! অথবা কেউ আল্লাকে ডাকতে ডাকতে যেন সাত আসমানের ওপর থেকে নামিয়ে ফেলেন! কিন্তু না! আল্লা নামে না, আল্লা ওদের ডাকে সাড়াও দেয় না! কেমন নিষ্ঠুর সে আল্লা, ভেবে দেখুন! সে অপারেশন থিয়েটার থেকে রোগীকে যখন সুস্থ অবস্থায় বের করে আনা হয়, তখন আল্লাকে ধন্যবাদ দেওয়ার দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়ে যায়। যে-ডাক্তার ভালোভাবে অপারেশন সমাপ্ত করলো, তার সাথে রোগীর সম্পর্ক যেন শেষ! রোগীর আত্মীয় অকৃতজ্ঞ মুমিনরা সে ডাক্তারের কথা বেমালুম ভুলে বসেন। বলা হয়ে থাকে, "সুস্থ করার মালিক একমাত্র আল্লা, রোগও যেমন আল্লা দেন, সুস্থও তিনি করেন।" আমার প্রশ্ন ঠিক এখানেই! আল্লাহই যদি আপনাকে সুস্থ করতে পারতো, তবে ঐ ডাক্তারের শরণাপন্ন হলেন কেন? সারাক্ষণ আল্লাহর কাছে নামাজ/ইবাদাত করে কান্নাকাটি করে রোগমুক্তি চাইলে আপনার রহমান আল্লাহ তো আপনাকে ফিরিয়ে দিতেন না!

আমার এই বক্তব্যে আবার কোন কোন মুমিন হয়তো আবার পঙ্গু যুক্তি দেখাবেন, সব তো আল্লাহ করেন ঠিক আছে, তবে একজন উছিলা'র দরকার হয়। ডাক্তার একজন উছিলা মাত্র!!

তাহলে কিন্তু শেষ হয়ে যায় না। ডাক্তারের যদি কোনো মুখ্য ভুমিকা নাই বা থাকে, তবে তো উছিলা হিশেবে আপনি একজন কুলি/কামারকে বিবেচনা করতে পারতেন! অথবা আপনার ঐ বড় ছেলেটা যে ঢাকা ইউনিভার্সিটির নামকরা অধ্যাপক, তাকেই তো উছিলা বানাতে পারতেন! কিন্তু তা না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন কোন যুক্তিতে?

বলছিলাম অপারেশন থিয়েটারের রোগীর কথা! আপনার ঐ রোগী সুস্থভাবে ফিরলে আপনি বলেন, তাকে সুস্থ করেছে আল্লাহ! আল্লাকে ধন্যবাদ প্রদান করতে করতে মুখ ব্যথা করে ফেলেন, অথচ ডাক্তারকে কিঞ্চিৎ কৃতজ্ঞতা স্বরূপ ধন্যবাদ দেওয়া প্রয়োজন মনে করেন না!

আপনারা এও স্বীকার করেন যে, আল্লা চাইলে সুস্থ করতে পারেন, আবার আজরাইল পাঠিয়ে প্রাণও নিয়ে নিতে পারেন। দুনিয়াতে যতো প্রাণী মারা যায়, সবটাই আল্লার অনুমতিতে আযরাঈল এসে প্রাণ নিয়ে যায় ।

কিন্তু,

যখন সে অপারেশন থিয়েটার থেকে রোগীকে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসা হয়, অর্থাৎ অপারেশন করার সময় রোগী মারা যায়... আচ্ছা বাদই দেন অপারেশন থিয়েটার বা অপারেশন এর কথা! যখন কোনো ডাক্তার চিকিৎসার সামান্য ত্রুটি করার কারণে রোগী মারা যায়, তখন আপনারা ভুলে যান কেন যে, আল্লাহই একমাত্র প্রাণ সংহারক? তখন আপনারা রোগী মারা যাওয়ার সমস্ত দায়ভার আল্লার ওপর না চাপিয়ে ডাক্তারের ওপর চাপাতে চেষ্টা করেন কেন? ডাক্তারের বিরুদ্ধে রোগী মেরে ফেলার অভিযোগ এনে আদালতে মামলা দায়ের করেন কেন? এতে কি প্রাণ সংহারক হিশেবে আপনি ঈশ্বরের পরিবর্তে ডাক্তারকে দায়ী করলেন না? এই আচরণ কি তবে শিরকের পর্যায়ে পড়ে না?

রোগী সুস্থ হলে ধন্যবাদ দিবেন আল্লাকে, আবার মারা গেলে গালিগালাজ করবেন ডাক্তারকে! এ এক জঘন্যতম স্ববিরোধী আচরণ!

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন