লিখেছেন নিলয় নীল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের খেলার মাঠে প্রতিটি বিভাগ আলাদা আলাদাভাবে সরস্বতী পুজা করে থাকে। প্রতিটি বিভাগ তাদের দেবীকে সাজাতে তাদের বিভাগের কনসেপ্ট মাথায় রাখে। কোন বিভাগের দেবী কতো সুন্দর, এ নিয়ে হয় প্রতিযোগিতা। এইতো গত বছরও কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ তার দেবীকে ডিজিটালভাবে সাজিয়েছে, দেবীর হাতে বইয়ের বদলে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ তুলে দিয়েছে। আশ্চর্য হলেও সত্য, ভক্তদের কারো অনুভূতিতে আঘাত লাগেনি, বরং ভক্তিভরে সেই ডিজিটাল সরস্বতীকে পুজা করেছে তারা।
গীতায় ভগবান বলেছেন, ভক্তরা যেভাবে ভগবানকে কল্পনা করেন, ভগবান সেই রূপেই ভক্তের আরাধনা গ্রহণ করেন। তাহলে কেউ কেউ যদি তার ঈশ্বরকে সানি লিওনের রূপে কল্পনা করে ঈশ্বরের হাতে ডিলডো দিয়ে পুজা করেন, তাহলে ঈশ্বর তাদের পুজা নেবে না কেন? আর যদি বিকৃত ডিজিটাল সরস্বতী দেখে কারো অনুভূতিতে আঘাত না লাগে, তাহলে সেক্সি সরস্বতী দেখলে অনুভূতিতে আঘাত কেন লাগবে?
বানিয়েছেন দাঁড়িপাল্লা ধমাধম
সরস্বতী বিদ্যার দেবী আর সানিস্বতী যৌনবিদ্যার দেবী বলে যারা তুলনা দিচ্ছেন তাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, সানি লিওনকে অন্তত তার পিতার সাথে যৌনতায় লিপ্ত হতে হয়নি, পুরাণমতে যা করতে বাধ্য হয়েছিলেন দেবী সরস্বতী। সরস্বতী পুরানে দুইভাবে সরস্বতীর জন্মবৃত্তান্ত পাওয়া যায়। প্রথম কাহিনী মতে, সরস্বতী ব্রহ্মার নাতনী হলেও পরবর্তী কাহিনী অনুযায়ী সরস্বতী ব্রহ্মার কন্যা। পৌরাণিক এইসব কাহিনীর বিস্তর মতপার্থক্য থাকলেও অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ সরস্বতীকে ব্রহ্মার কন্যা হিসেবেই স্বীকৃতি দেন।
প্রথমেই বলে রাখি, বিজ্ঞান আমাদের যে শিক্ষা দেয়, যেমন - সন্তানের জন্মের জন্য মায়ের প্রয়োজন অপরিহার্য, বৈঘ্যানিক হিন্দুধর্ম তা ভ্রান্ত প্রমাণ করেছে ইতিমধ্যেই। আপনি বিজ্ঞানে আস্থা রাখবেন, নাকি হিন্দুধর্মে আস্থা রাখবেন, এটা আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার হলেও আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, দেবী সরস্বতীর কোনো মা ছিলো না। অর্থাৎ দেবী সরস্বতী কোনো মায়ের গর্ভে জন্ম নেননি। এমনকি তার জন্মপ্রক্রিয়ার কোনোখানেই নারীর সামান্য অবদানের নজির নেই।
সরস্বতী পুরাণের সরস্বতী-জন্মের প্রথম কাহিনী অনুযায়ী, আজকালকার ছেলেরা সানি লিওনকে দেখে যেমন হস্তের দ্বারস্থ হয়, ঠিক তেমনি ঊর্বশীকে দেখে স্বমেহন করতেন ব্রহ্মা। ব্রহ্মার শুক্রাণু জমা হত একটি পাত্রে। সেই পাত্রেই জন্ম হয় ঋষি অগস্ত্যর এবং পরবর্তীতে অগস্ত্য জন্ম দেন সরস্বতীর। এই সূত্র অনুযায়ী - সরস্বতী ব্রহ্মার নাতনি।
আবার অন্য সূত্র বলে, ব্রহ্মার শুক্রাণু থেকে সরাসরি জন্ম হয় সরস্বতীর। কিন্তু আত্মজার রূপ দেখে মুগ্ধ হন পিতা প্রজাপতি ব্রহ্মা। তিনি সরস্বতী বড় হলে তাঁর সঙ্গে যৌনসঙ্গম করতে চান। জন্মদাতার কামনা থেকে বাঁচতে পালিয়ে যান সরস্বতী। কিন্তু শেষ অবধি হার মানতে হয় ব্রহ্মার কামনার কাছে।
আজকালকার ছেলেমেয়েরা ধর্ম থেকে অনেক কিছু শিখলেও তারা স্বীকার করে না, এটাই সমস্যা। এই যেমন ধরুন, লিভ টুগেদার যা আমাদের কাছে নতুন, কিন্তু হাজার হাজার বছর আগে ব্রহ্মা এবং সরস্বতী পরস্পর পিতা ও কন্যা হয়েও স্বামী-স্ত্রীর মতো পদ্মফুলে লিভ টুগেদার করেন ১০০ বছর ধরে। আসলে এটা লিভ টুগেদারও বলা যায় না, কারণ লিভ টুগেদারে দু'জনার সম্মতি থাকতে হয়। সহজভাবে বললে - এই ১০০ বছর ধরে ব্রহ্মা সরস্বতীকে ধর্ষণ করেছিলেন, সরস্বতী এই কাজ কখনোই করতে চাননি। কিন্তু এরপরেও ব্রহ্মার বিকৃত কামনা কমেনি।
ব্রহ্মার বিকৃতি এতো চরম পর্যায়ে চলে গিয়েছিলো যে, দেবী সরস্বতী অভিশাপ দিতে বাধ্য হন ব্রহ্মাকে। অভিশাপ দিয়ে বলেন, দেবতাদের মূলস্রোতে থাকবেন না প্রজাপতি ব্রহ্মা অর্থাৎ তিনি পূজিত হবেন না। সত্যি হিন্দু দেবতাদের মূলধারার মধ্যে পূজিত হন না ব্রহ্মা। রাজস্থানের পুষ্কর ছাড়া তাঁর মন্দির এবং অর্চনা বিরল।
কুপিত হয়ে সরস্বতী তাঁকে ছেড়েও চলে যান। দেবী থেকে রূপান্তরিত হন নদীতে। সেখান থেকেই বৈদিক যুগের সরস্বতী নদী। কৃষিপ্রধান সভ্যতার মূলে থাকা উর্বরতার উৎস এই নদীর উৎসমুখ ও প্রবাহ নিয়ে এখনও চলে গবেষণা।
যাদের এই কাহিনী পড়ে সংশয়বোধ হবে, তাদেরকে বলবো, দয়া করে আমার চোদ্দগুষ্ঠি নিয়ে চণ্ডীপাঠ করার আগে সরস্বতী পুরাণে সরস্বতীর জন্মবৃত্তান্তটা পড়ে নেবেন।
আজকাল তরুণদের সরস্বতী নিয়ে মধ্যে খুব একটা মাথাব্যথা দেখা যায় না, তারপরও বছরে একবার সরস্বতী পূজা এলে তখন তাদের আয়োজন শুরু হয়। সারাবছর সানি লিওন অর্থাৎ দেবী সানিস্বতীর আরাধনা করে বছরে একদিন দেবী সরস্বতীর আরাধনা ভণ্ডামি ছাড়া আর কিছু নয়। তাই আসুন, সারা বছর যার আরাধনা করি, বছরের একটা দিন একমাত্র তারই পূজা করি আমরা। চলুন, আমরা মন্ত্রজপে দেবী সানিস্বতীকে আহবান করি এভাবে:
চুমো সানিস্বতী উর্বশী সাজে
আঃ কি যাদু তব চাহনে,
ন্যাংটারূপে বিশালবক্ষী
সদাই দেখি পর্ণমুভিতে।
আয় আয়, সানি, মন চায় তোরে….
কটিদেশদুলিত হিপহপ গানে,
সেক্সিনন্দিত কামুক বাণে
আগত স্বাগত সানি বিনাবস্ত্রে।
দেবীকে এভাবে আহবানের পর সবাই সম্মিলিতভাবে দেবীর অঞ্জলি দেবো এভাবে:
জয় জয় দেবি চরাচরসারে
কুচযুগশোভিত বস্ত্র ব্যতিহারে,
বীণারঞ্জিত চটি হস্তে
কামুকরতি দেবি নমোঃহস্তমৈথুনে।
ওঁ সানিস্বতী মহাভোগে
পর্ণবিদ্যে কোমল ঠাপনে
বিশ্বরূপে বিশালবক্ষা
যৌনাং দেহি নমোহস্তুতে।
* তথ্যগুলো সরস্বতী পুরান থেকে নেয়া ও মন্ত্রগুলো সংগ্রহের পর পরিমার্জিত করা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন