লিখেছেন গোলাপ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯> পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯ > পর্ব ৬০ > পর্ব ৬১ > পর্ব ৬২ > পর্ব ৬৩ > পর্ব ৬৪ > পর্ব ৬৫ > পর্ব ৬৬
[2] Ibid মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, পৃষ্ঠা ৩৮৯
[3] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৭, ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪২৫-১৪২৬ http://books.google.com/books?id=efOFhaeNhAwC&printsec=frontcover&source=gbs_ge_summary_r&cad=0#v=onepage&q&f=false
[4] Ibid মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, ইবনে হিশামের নোট - নম্বর ৬১৬, পৃষ্ঠা ৭৫৬
হামজা ইবনে আবদুল মুত্তালিবের নৃশংস পরিণতি ও তার পেট চেরা, কলিজা উধাত্ত এবং নাক ও কান কাটা বিকৃত লাশ প্রত্যক্ষ করে স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কী পরিমাণ আবেগে আপ্লুত ও ক্রোধান্বিত হয়েছিলেন, তার বর্ণনা আগের পর্বে করা হয়েছে।
ওহুদ যুদ্ধ শেষে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা মদিনায় প্রত্যাবর্তনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। তাঁরা যখন মদিনায় নিকটবর্তী হন, তখন তাঁরা শুনতে পান যে, শোকাহত মদিনার লোকেরা তাঁদের নিহত পরিবার সদস্য, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের জন্য হাহাকার ও ক্রন্দন করছেন।
এই দৃশ্য অবলোকন করে মুহাম্মদ তাঁর চাচা হামজার শোকে আবারও ভীষণ আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। তিনি তাঁর চোখের পানি সম্বরণ করতে পারেন না। তিনি কান্না জড়িত কণ্ঠে আক্ষেপ করে বলেন যে, হামজার শোকে ক্রন্দন করে এমন কোনো মহিলা আজ নেই।
নবীর এই মনঃকষ্ট লাঘবে তাঁর কিছু মদিনাবাসী অনুসারী (আনসার) তাদের পরিবারের মহিলাদের নবীর কাছে এই আদেশ সহকারে পাঠিয়ে দেন যে, তারা যেন নবীর কাছে যায় ও নবীর সান্ত্বনার জন্য তাঁর চাচার শোকে ক্রন্দন করে।
মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনা:
'আল্লাহর নবী মদিনায় প্রত্যাবর্তনের উদ্দেশ্যে রওনা হন।
আমাকে [মুহাম্মদ ইবনে ইশাক] বলা হয়েছে যে, পথিমধ্যে হামনা বিনতে জাহাশ তাঁর সাথে সাক্ষাত করেন; যখন তিনি সৈন্যবাহিনীর সম্মুখীন হন, তখন তাঁকে জানানো হয় যে, তাঁর ভাই আবদুল্লাহ নিহত হয়েছেন। তিনি চীৎকার করে বলেন (exclaimed), "আমরা আল্লাহর কাছ থেকে এসেছি ও তার কাছেই আমরা ফিরে যাব", এবং তিনি তার মাগফেরাতের জন্য দোয়া করেন।
তারপর তাঁকে জানানো হয় যে, তাঁর মামাতো ভাই হামজা নিহত হয়েছেন; তিনি একই বাক্য উচ্চারণ করেন।
তারপর তাঁকে যখন জানানো হয় যে, তাঁর স্বামী মুসাব বিন উমায়ের নিহত হয়েছেন, তখন তিনি উচ্চকণ্ঠে চীৎকার ও ক্রন্দন (Shrieked and wailed) করেন।
আল্লাহর নবী বলেন, "মহিলাটির হৃদয়ে তাঁর স্বামী এক বিশেষ স্থান দখল করে আছে; যার নমুনা হলো ভাইয়ের মৃত্যুতে তার আত্ম সম্বরণ ও স্বামীর মৃত্যুতে তার তীক্ষ্ণ চিৎকার ও বিলাপ।"
আল্লাহর নবী বানু আবদুল-আশহাল ও বানু জাফর গোত্রের এক আনসারদের জনবসতির পাশ দিয়ে যাত্রাকালে নিহতের শোকে শোকার্তদের হাহাকার ও ক্রন্দনের শব্দ শুনতে পান।
আল্লাহর নবীর চোখ হয় জলে পরিপূর্ণ এবং তিনি ক্রন্দন করেন ও বলেন, "কিন্তু ক্রন্দনরতা কোনো মহিলা নাই যে, হামজার জন্য ক্রন্দন করে।"
যখন সা'দ বিন মুয়াদ ও উসায়েদ বিন হুদায়ের তাদের বাসস্থানে ফিরে আসেন, তারা তাদের মহিলাদের আদেশ করেন যে তারা যেন নিজেদের কাপড়ে আবৃত করে যায় ও নবীর চাচার জন্য ক্রন্দন করে (they ordered their women to gird themselves and go and weep for the apostle's uncle)।
বনি আবদুল-আশাল গোত্রের একজন লোকের বর্ণিত তথ্যের ভিত্তিতে হাকিম বিন হাকিম বিন আববাদ বিন হুনায়েফ আমাকে বলেছেন:
যখন আল্লাহর নবী তাঁর মসজিদের দরজায় হামজার জন্যে তাদের ক্রন্দনের আওয়াজ শুনতে পান, তিনি বলেন, "ঘরে যাও; আল্লাহ যেন তোমাদের কৃপা করে; তোমরা তোমাদের উপস্থিতির মাধ্যমে সত্যিই সাহায্য করেছ।"
(ঐ দিন আল্লাহর নবী শোক প্রকাশে বিলাপ (lamentation) নিষিদ্ধ করেন। আবু ওবায়েদা আমাকে বলেছেন যে যখন আল্লাহর নবী তাদের কান্নার শব্দ শুনতে পান, তিনি বলেন, "আল্লাহ যেন আনসারদের কৃপা করে; কারণ তাদের বহু বছরের রীতি এই যে, তারা অপরকে সান্ত্বনা দেয়। মহিলাদের বলে দাও, তারা যেন চলে যায়।" [1])
যখন আল্লাহর নবী তাঁর পরিবারের সঙ্গে মিলিত হন, তিনি তাঁর তরবারি তাঁর কন্যা ফাতেমাকে প্রদান করেন ও বলেন, "এর রক্ত পরিষ্কার করো;আল্লাহর কসম, এটা আজ আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছে।"
আলী তাঁর তরবারিও তাঁকে দেন ও বলেন, "এটাও, এর রক্তও পরিষ্কার করো; আল্লাহর কসম, এটা আজ আমাকে অনেক সাহায্য করেছে।"
আল্লাহর নবী বলেন, "যদি তুমি ভাল যুদ্ধ করে থাকো, সাহল বিন হুনায়েফ ও আবু দুযানাও তোমার সাথে ভাল যুদ্ধ করেছে।"’ [2][3]
আল্লাহর নবীর তরবারির নামকরণ ছিল 'ধুল-ফাকার (Dhul-Faqar)'। [4]
(চলবে)
তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:
[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, ইবনে হিশামের নোট - নম্বর ৬১৪, পৃষ্ঠা ৭৫৬ http://www.justislam.co.uk/images/Ibn%20Ishaq%20-%20Sirat%20Rasul%20Allah.pdf
[2] Ibid মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, পৃষ্ঠা ৩৮৯
[3] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৭, ইংরেজী অনুবাদ: W. Montogomery Watt and M.V. McDonald, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪২৫-১৪২৬ http://books.google.com/books?id=efOFhaeNhAwC&printsec=frontcover&source=gbs_ge_summary_r&cad=0#v=onepage&q&f=false
[4] Ibid মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, ইবনে হিশামের নোট - নম্বর ৬১৬, পৃষ্ঠা ৭৫৬
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন