লিখেছেন নাস্তিক দস্যু
এক মালাউন ব্যক্তি একবার এক হুজুরের বয়ানে শুনল যে, বেহেস্তে সকল মুছলিম ব্যক্তিকে ৭২খানা করিয়া রোবট থুক্কু হুরী দেওয়া হবে। তাই সে হুরী পাওয়ার লোভে শান্তির ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করিল।
মানুষটা ইসলাম ধর্মে নতুন। এখনো নামাজ-কালাম শিখে উঠতে পারেনি। তবে সে ৩টি তাছবিহ শিখিয়া নিল, যাতে করে সে আপাতত থোরা থোরা করে হলেও ইপাদাত করতে পারে। তাছবিহ ৩টি হলো ছুবহান আল্লাহ, নাউযুবিল্লাহ এবং আলহামদু লিল্লাহ।
যে হুজুরের কাছে সে কালিমা পাঠ করেছে, সেই হুজুর তাকে বলেছিল যে, সে যেন বেশি করে ওয়াজ মাহফিলে বয়ান শোনে। বয়ান শুনলে নাকি তাকওয়া, ইসলামিক জ্ঞান ইত্যাদি বৃদ্ধি পায়।
একদিন নতুন মুছলিম ব্যক্তিটি একটা ওয়াজ মাহফিলে বয়ান শুনতে বসল। বয়ান শুনতে শুনতে সে আবিষ্কার করল, হুজুরের বয়ানের সময় শ্রোতারা মাঝে মাঝে বেশ উচ্চস্বরে আল্লাহু আকবার, ছুহভানাল্লা, আলহামদুলিল্লাহ, নাউযুবিল্লাহ ইত্যাদি তাছবিহ পড়ছে। মানুষটি ঠিক করল, সেও চিল্লিয়ে চিল্লিয়ে তাছবিহ পড়বে। তবে সে ঠিক করতে পারলো না, কোথায় কোন তাছবিহ পড়তে হয়।
হুজুর তখন আদমের সৃষ্টির কাহিনী বয়ান করছিলেন। "আল্লাহ তায়ালা আদমকে সৃষ্টি করার পর সকল ফেরেস্তাকে সিজদা করার নির্দেশ দিলেন। সকলে আদমকে সিজদা করল, কিন্তু ইবলিশ শয়তান অহংকারে সিজদা করল না..." সবাই এ কথা শুনে চিত্কার করে বলে উঠল, "নাউযুবিল্লাহ!" কিন্তু নব মুছলিম ব্যক্তিটি না জানার কারণে বলে ফেলল, "ছুবহানাল্লাহ!" অন্যরা সবাই তার দিকে এমন দৃষ্টিতে তাকাল, যার অর্থ, দু'পায়া গাধা আগে তো দেখিনি!
তো যাই হোক। হুজুর আবার বয়ান শুরু করলেন। বয়ান করতে করতে জিহাদের প্রসঙ্গ এল। হুজুর জিহাদের আবশ্যকতা বর্ণনা করে সবার উদ্দেশে বললেন, "আমরা সবাই বোমা হাতে নিয়ে জিহাদ করব..." সবাই তখন বলে উঠল, "হিংসাল্লাহ!" কিন্তু নতুন ইছলাম গ্রহণ করা ব্যক্তিটি বলে উঠল "নাউযুবিল্লাহ!" সবাই তখন তার দিকে বিষদৃষ্টিতে তাকাল।
হুজুর আবারো যথা নিয়মে বয়ান করতে লাগলেন। এবারে উহুদ যুদ্ধের কাহিনীর বর্ণনায় এলেন। "ইসলাম ধর্ম প্রতিষ্ঠা করতে সাহাবীদের অনেক রক্ত দিতে হয়েছে। উহুদের মাঠে কাফেররা আমাদের প্রাণের নবীজিকে পাথর মেরে রক্তাক্ত করেছিল..." এ কথা শুনে বেকুপ নব মুছলিমটি বলে উঠল, "আলহামদু লিল্লাহ!" এতক্ষণ মাহফিলে উপস্থিত অন্যান্য মুছলিমরা অনেক সহ্য করেছে। এবারে আর থাকতে পারলো না। তাদের সকলের ইমানী তেজ টগবগ করে ওঠল। এই ব্যাটা নিশ্চয়ই খাঁটি মালাউন! সবাই তখন নব্য মুছলিমটিকে মারার জন্য তেড়ে এল। নব মুছলিমটি তখনই অবস্থা বুঝতে পেরে প্রাণ নিয়ে দৌড়ানো শুরু করল। দৌড়াতে দৌড়াতে হাঁপিয়ে ওঠার জোগাড়। শেষতক প্রাণের ভয়ে মানুষটি পানিতেই ঝাঁপ দিল। এ যাত্রায় সে প্রাণে রক্ষা পেল।
এরপর মানুষটি আর ইছলাম ধর্মে থাকেনি। কারণ যারা তাছবিহ পড়লেও মারতে ওঠে, তাদের সাথে থাকা অসম্ভব। লোকটি তবুও নাস্তিক হলো না, তার বংশগতভাবে পাওয়া ধর্মে ফিরে গেল। নাস্তিকতা আরো কঠিন ব্যাপার। যে ব্যক্তি কোথায় চুদানাল্যা পড়বে, কোথায় বালহামদু লিল্লা পড়বে, এসবই বুঝতে পারে না, তার দ্বারা নাস্তিক হওয়া সম্ভব নয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন