লিখেছেন আশরাফুল ইসলাম রাতুল
অভিজিৎদা'র মৃত্যুর পর যারা হাঁপ ছেড়েছেন, মুচকি হেসেছেন অথবা ভেবেছেন, যাহ, শালা নাস্তিকতার মৃত্যু না হলেও মুমূর্ষু হয়ে পড়েছে; তাঁদের জন্য বলছি - বর্তমান বিশ্ব প্ররিপেক্ষিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এবং জাতীয় পর্যায়ে ইসলাম সমালোচনা কমবে না তো বটেই, বরং বাড়বে।
ধর্মীয় উগ্রবাদীদের কারণে সারা দুনিয়ার মানুষ আরও সচেতন হয়ে উঠছে। যেখানেে ইসলামের নাম করে আইএস-এর মত ভয়ংকর নরপশুর পাল প্রতিদিন আল্লাহ হুয়াকবার বলে বিশ্ব মিডিয়ার সামনে কল্লা কেটে ইসলামের পশ্চাতে বাঁশ গুঁজে দিচ্ছে, সেখানে এক অভিজিৎ-কে হত্যা করে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পর্যায়ে ইসলাম-বলাৎকার ঠেকানো যাবে, এমন ভাবার কোনো কারন নেই।
একটা বিষয় আমার মতো আর কেউ খেয়াল করেছেন কি না, জানি না, তবে যে-বিষয়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো - আইএস-এর উত্থানের পর থেকে ইসলামে ধর্মান্তর অনেক কমে গেছে। আগে প্রতিদিন নয়া দিগন্ত, সংগ্রাম জাতীয় পত্রিকায় নিয়মিতই এমন কিছু খবর আসতো: অমুক ধর্ম থেকে অমুক মুসলিম হয়েছে। এমন খবর এখন আর দেখি না। এর পেছনে আইএস যে বিশাল ভূমিকা পালন করছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
তেমনি আর একটা ঘটনা হলো শার্লি এবদো'র ওপর ইসলামীদের হামলা। ওই হামলার পর থেকে সেই পত্রিকার সার্কুলেশন এখন তুঙ্গে।মানুষের একটা স্বভাব হলো - কোনোকিছু ধামাচাপা দিতে গিয়ে সেটা আরও ছড়িয়ে দেয়া। কোনোকিছুর সমালোচনা করে সেটার পরিচিতি আরো বাড়িয়ে তোলা।
'শার্লি এবদো' পত্রিকার প্রচারসংখ্যা - ইছলামীদের হামলার আগে ও পরে
এই একই ব্যাপার ঘটছে অভিজিৎ রায়কে নিয়ে। অভিজিৎ রায়কে আগে হয়ত বড় জোর অনলাইনের কয়েক লক্ষ লোক চিনত। পাঠকের সংখ্যাও ছিল সীমাবদ্ধ।
তবে অভিজিৎকে নৃশংসভাবে খুন করে উগ্রবাদীরা আসলে উল্টো ঘটনা ঘটাল। এখন অনেক অনেক বেশি লোক তাঁর নাম জানে। তাঁর লেখা বইগুলোর বিক্রির হার বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। তাঁর বানানো ব্লগ মুক্তমনায় পাঠকদের ভিড়, এছাড়া বিভিন্ন ব্লগে, ফেইসবুক গ্রুপে, প্রোফাইলে তাঁর লেখার লিংক শেয়ার হচ্ছে। অভিজিৎ-চর্চা শুরু হয়েছে বিপুলভাবে! জীবিত অভিজিৎ-এর চেয়ে মৃত অভিজিৎ এখন অনেক বেশি শক্তিশালী।
তাই মুমিন ভাইদের বলব, শুধু বিচি না খাটিয়ে মাথাটাও একটু খাটান। একটু চিন্তা করুন। পশ্চাতে হাত দিয়ে দেখুন না, কাপড়টা ঠিক জায়গায় আছে কি না? নিজের কাপড় নিজে ছিঁড়ে খুলে অন্যের ওপর বলাৎকারের অভিযোগ আনা কতটা শোভন?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন