লিখেছেন ওয়াশিকুর বাবু
বাঙালি মুসলিমরা সবাই সহজ, সরল, ভাল মানুষ। তারা সাম্প্রদায়িক না, মৌলবাদ লালন করে না, ধর্মান্ধ না। যে ঘটনাগুলো ঘটে, সব সাম্রাজ্যবাদী মার্কিনীদের চক্রান্তে হয় অথবা ব্রিটিশ 'ডিভাইড অ্যান্ড রুল' নীতির কারণে। তারা সহজ সরল মুসলিম বাঙালিকে ভুলিয়ে এসব কাজ করায়। বাঙালি মুসলিম হচ্ছে শিশুর মতো সরল। এদের কোনো দোষ নেই, তেমনি গুণও নেই। এরা ভাল-মন্দ প্রভেদ করতে পারে না।
তবে আপনি কখনোই তাদের সচেতনতা চাইতে পারবেন না, অন্ধবিশ্বাস ভাঙতে পারবেন না। তাহলে আপনি তাদের শত্রু হয়ে যাবেন। আপনাকে তাদের শিশু হয়ে থাকতে দিতে হবে। শিশুরা যেমন রাগ করে অনেক কিছু ভাঙে, তারাও মাঝে-মাঝে বিধর্মীদের ঘর বাড়ি পোড়াবে, নাস্তিকদের কতল করবে। আপনি কিছু বলবেন না বা বললেও ব্যালেন্স করে বলতে হবে। কারণ আপনি মডারেট, সুশীল, বুদ্ধিজীবী।
মা যেমন শিশুকে রসগোল্লার ভেতর ট্যাবলেট পুরে খাওয়াতে চায়, আপনাকেও তেমনি ইসলামের মোড়কে পুরে নৈতিকতা, মানবতা বাঙালি মুসলিমদের গেলানোর চেষ্টা করতে হবে। শিশুর মত তারাও ট্যাবলেটটুকু ফেলে দিয়ে শুধু ধর্মের রসগোল্লাটাই গিলবে বারবার, তারপরও আপনাকে এই প্রক্রিয়াতেই যেতে হবে।
সব কিছুর ইসলামী ভার্শন বের করতে হবে। ইসলামী সেক্যুলারিজম, ইসলামী ইতিহাস, ইসলামী নারীবাদ, ইসলামী বিজ্ঞান, ইসলামী বিবর্তন এরকম। এর জন্য নিজেদেরও ঈমানের পরীক্ষা দিতে হবে। মাথায় টুপি পরতে হবে; প্রয়োজনে খৎনা দেখাতে হবে। এভাবে গেলাতে গিয়ে মূল লক্ষ্যই বাদ পড়ে যাবে। তারপরও ইসলাম থাকা চাই। কোনোভাবেই বলা যাবে না অসাম্প্রদায়িকতার জন্যই সেক্যুলারিজম প্রয়োজন, নির্মোহভাবেই ইতিহাস জানা প্রয়োজন, মানুষ হিসেবেই নারীর সমতা প্রয়োজন, বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে বিজ্ঞান জানা প্রয়োজন।
আমেরিকা চাইলেই কেন কিছু মানুষকে ব্যবহার করে যা খুশি করাতে পারবে, সেই প্রশ্ন তুলবেন না। সেসব বললেই আপনি নাস্তিক, মুরতাদ হয়ে যাবেন। আপনাকে অবশ্যই ঈমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে আগে। এদের সুশিক্ষা দরকার নেই, বিজ্ঞান দরকার নেই, যুক্তি দরকার নেই। এদের দরকার শুধু ইসলাম। ইসলামের নামে যে কেউ এদের যা খুশি খাইয়ে দিতে পারে।
বাঘ যখন শিকার করে তখন হায়েনা, শিয়াল, শকুন অপেক্ষায় থাকে, কখন বাঘ আহার শেষ করবে, যাতে তারা কাড়াকাড়ি করে উচ্ছিষ্টটুকু সাবাড় করতে পারে। এদেশের মডারেট, সুশীল, বুদ্ধিজীবীরা হচ্ছে হায়েনা, শিয়াল, শকুনের দল। তারা সর্বক্ষণ আমেরিকা নামক বাঘটার অপসারন কামনা করে, যাতে নিজেরা মুসলিম নামক ভেড়াদের নিয়ে ইচ্ছেমতো খেলতে পারে। তাই কেউ মুসলিমদের অন্ধবিশ্বাস, মূর্খতা ভাঙতে চাইলে তারা সহ্য করতে পারে না।
মূর্খ শিকার-সচেতন হয়ে উঠলে তো রুটি-রুজি, খ্যাতি সব ভেসে যাবে!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন