আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

শনিবার, ৭ মার্চ, ২০১৫

অর্থহীন ব্যর্থ প্রার্থনা

লিখেছেন শোভন

ধার্মিকদের রং-ঢং দেখে আর বাঁচি না। দোয়া করা নিয়ে এমন আদিখ্যেতা করে, মনে হয়, যেন দোয়া ছাড়া আর পৃথিবীর অন্য কিছুতে কোনো সমস্যার সমাধান হয় না। পরীক্ষার আগে "ভাই, দোয়া কইরেন আজ পরিক্ষা।" পরীক্ষা যেমনই দিক, রেজাল্টের দিন "ভাই, দোয়া কইরেন, আজকে রেজাল্ট।" কেউ অসুস্থ হইলে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে চিকিৎসার জন্য, ওদিকে সবার কাছে বলে বেড়াবে, "ওর জন্য একটু দোয়া করবেন যেন সুস্থ হয়ে ওঠে।"

আদিখ্যেতা নয় তো কী? এরা কী ভাবে, তা খোদ তাদের আল্লা-ভগবানই জানে। সারা বছর পড়ালেখা করবে না, আর পরীক্ষার আগের দিন সারা জাহানের মানুষ একসাথে দোয়া করে দিবে, আর অমনি সে এক্কেরে পরিক্ষার হল ফাটায়ে দিয়ে আসবে, তাই না? হুঁ!


আইচ্ছা, তাইলে কোন সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করলে দোয়া কাজে লাগে? আল্লার কাছে দোয়া করলে পরীক্ষা ভালো হয়, নাকি সরস্বতীর কাছে দোয়া করলে? যারা আল্লার কাছে দোয়া না করে সরস্বতীর কাছে দোয়া করে, তাদের পরিক্ষা কি খারাপ হয়? যারা সরস্বতীর কাছে দোয়া না চেয়ে যিশুর কাছে দোয়া চায়, তাদের পরীক্ষা কি খারাপ হয়? যাদের জন্য কেউ দোয়া করে না, যারা নিজেরাও দোয়া-ফোয়া করে না, তারা কি পরীক্ষায় ফেল করে? নাকি? যত্তসব আদিখ্যেতা । পরীক্ষা দেবার আগে যে পড়াশোনা করে যাবে, তার পরীক্ষা ভালো হবে, যে পড়াশোনা না করে যাবে, সারাদিন আল্লা-যিশুর পা ধরে কুকুরের মত চাটাচাটি করলেও পরীক্ষায় সুবিধা হবে না। দোয়া-ফোয়া করলেও কিছু যায় আসে না, না করলেও কিছু যায় আসে না। দোয়ার কোনো মুল্যই নাই।


পরীক্ষার দুই মাস পর রেজাল্ট। পরীক্ষা যেমন দিছে, রেজাল্টও তেমনই আসবে, তারপরও তারা আদিখ্যেতামি করে বলবেই "কাকু, দোয়া কইরেন, আজকে রেজাল্ট।" এসবের মানে কী? কাকুর দোয়ায় কি ওদের খারাপ রেজাল্ট একদিনেই ভালো হয়ে যাবে? কার কাছে দোয়া করবে কাকু? আল্লার কাছে দোয়া করার অপরাধে কি সরস্বতী ক্ষেপে গিয়ে রেজাল্ট খারাপ করে দিবে? নাকি যিশুর কাছে দোয়া করল বলে শিরকের দোষে আল্লা ফেল করায়ে দিবে? যারা কারোর কাছে দোয়া ফোয়া চায় না, তারা কি ফেল করে? কই, তা তো করে না। তার মানে দেখা যাচ্ছে যে, দোয়া-ফোয়া কেউ করুক বা না করুক, যেমন কর্ম হবে তেমন ফল। তাইলে দোয়ার কী মূল্য? কানাকড়িও না।

একজন অসুস্থ। তাড়াতাড়ি অ্যাম্বুলেন্স-এ ফোন দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেল তার বাবা মা। তারপর চাইতে লাগলো দোয়া, সবার কাছে দোয়া, "দোয়া কইরেন, ও যেন ভালো হয়ে যায়।" আরে ভাই, দোয়া করলে ভালো হয়ে যাবে? তাইলে ডাক্তারের কাছে নেবার কী দরকার, সবাই মিলে বাড়ি বসায়ে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করলেই তো সব অসুখ সেরে যায়। যাদের জন্য কেউ দোয়া করে না, তারা কি সকলেই মারা যায়? যারা আল্লাহর কাছে দোয়া না চেয়ে যিশুর কাছে অথবা দুর্গার কাছে চায় তারা কি বেঁচে থাকে না? নাকি শুধুমাত্র আল্লার কাছে দোয়া করলেই কেউ বাঁচে ,নইলে বাঁচে না? আসল কথা হল প্রয়োজনীয় চিকিৎসা না দিয়ে দোয়া করে মুখে ফেনা উঠায়ে ফেললেও কিচ্ছু হবে না। দোয়া-ফোয়ার কোনো ক্ষমতাই নাই। অনেকে তর্ক করে যে "ডাক্তার তো উছিলা মাত্র, ওপরআলায় চাইছে, তাই ভালো হইছে।" আরে ভাইয়া, ওপরআলা চাইছে, তাই ঠিক হইছে, তাইলে ডাক্তার ডাকো কেন? ওপরআলা চাইলে তো ডাক্তার আসুক আর নাই আসুক, ঠিক হয়ে যাবার কথা, তাই না? ডাক্তার না ডেকে ওপরআলাকে ডেকে দেখ তো রোগী বাঁচে কি না!


আমার যা মনে হয়, এই দোয়া-ফোয়া আর কাল্পনিক ঈশ্বরের পা চাটার কারনেই মানুষ আরো কর্মের প্রতি বিমুখ হয়ে যায়। তারা কর্মের নামে কিছুই না করে ভাবতে থাকে যে, অমুক ঈশ্বরের পা চাটলেই আমি সব পেয়ে যাবো। আমিও ছোটবেলায় তাইই করতাম। পড়ালেখায় মস্তবড় ফাঁকিবাজ ছিলাম। পরীক্ষার আগের দিন নামাজ-টামাজ পড়ে অস্থির করে দিতাম। আল্লাকে বলতাম, আল্লা এইবারকার মত দেখ, এর পরের বার থেকে লেখা পড়া করব। রেজাল্ট খুব একটা খারাপও হত না পরীক্ষার। তবে এখন আমি বুঝতে পারি যে, আল্লার পা চাটা বন্ধ করে যদি মন দিয়ে চেষ্টা করতাম তো রেজাল্ট প্রত্যাশিতই পেতাম। আল্লা-ভগবানের কোনো ক্ষমতা নেই, যা করার নিজে করে নিতে হবে - যেদিন থেকে এই সত্যটা উপলব্ধি করতে শিখলাম, সেদিন থেকেই আমার জীবনের অন্যতম সফলতাময় অধ্যয় শুরু। এখন এখন আমি অন্যের গড়া ভাগ্যে বিশ্বাস করি না। আমি এখন নিজের ভাগ্য নিজে গড়ি, এটা যে সম্ভব, তার প্রমাণও পেয়ে গেছি আমি। তাই আর কোনোদিন কোনো আল্লা-দেবতাদের মুখের দিকেও তাকাই না। পুড়ে মরুক সব অকর্মার ঢেকি আল্লা-ভগবান-ঈশ্বর।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন