আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

বুধবার, ২০ মে, ২০১৫

খন্দক যুদ্ধ -২: খন্দক খনন কুরানে বিগ্যান (পর্ব- ৭৮): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – বাহান্ন

লিখেছেন গোলাপ

পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯ > পর্ব ৬০ > পর্ব ৬১ > পর্ব ৬২ > পর্ব ৬৩ > পর্ব ৬৪ > পর্ব ৬৫ > পর্ব ৬৬ > পর্ব ৬৭ > পর্ব ৬৮ > পর্ব ৬৯ > পর্ব ৭০ > পর্ব ৭১ > পর্ব ৭২ > পর্ব ৭৩ > পর্ব ৭৪ > পর্ব ৭৫ > পর্ব ৭৬ > পর্ব ৭৭

স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও তাঁর অনুসারীদের অমানবিক নির্মম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে চরম ক্ষতিগ্রস্ত ইহুদি বনি নাদির গোত্রের কতিপয় লোকের উদ্যোগে আক্রান্ত, ক্ষতিগ্রস্ত ও সংক্ষুব্ধ মক্কাবাসী কুরাইশ সম্প্রদায় ও ঘাতাফান গোত্রের লোকেরা প্রতিশোধ ও প্রতিরক্ষা স্পৃহায় কীভাবে তাঁদের সাথে একাত্ম হয়ে মুসলমানদের প্রতি আক্রমণের (Counter attack) অভিপ্রায়ে মদিনার উদ্দেশে অগ্রসর হয়েছিলেন, তার আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।

খন্দক যুদ্ধের বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, তখন মদিনার পূর্ব, পশ্চিম ও দক্ষিণ দিক ছিল গিরি-লাভা, পাহাড়-পর্বত ও বৃক্ষরাজি সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক নিরাপত্তা বলয়ের সুবিধায়। উত্তর দিকটি ছিল অরক্ষিত।

সালমান ফারসী (Salman al-Farisi) নামের এক আদি পারস্যবাসী মুহাম্মদকে পরামর্শ দেন যে, যদি তারা মদিনার উত্তর দিকে খন্দক খনন করতে পারে, তবে তার মাধ্যমে তারা মিত্র-বাহিনীর (Army of the Confederates) আক্রমণকে প্রতিহত করতে পারবে। তাঁর এই পরামর্শ মুহাম্মদের মনঃপুত হয়।

মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা মদিনার উত্তর দিকে এক খন্দক খনন করেন। এই খন্দকটি তাঁরা দুর্গম স্থানগুলোর (পাহাড় ও বৃক্ষ-জলাভূমি) সাথে সংযুক্ত করে দেন।(নীচের চিত্র)


মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনা:

[প্রাসঙ্গিক বিষয়, অলৌকিক কিচ্ছা (পর্ব-৩৮) পরিহার।]
'যখন আল্লাহর নবী তাদের অভিসন্ধি জানতে পারেন, তখন তিনি মদিনার পাশে এক খন্দক খনন করেন; তিনি নিজেও সে কাজে অংশ গ্রহণ করেন ও মুসলমানদের বেহেশতের পুরষ্কারের আশা দিয়ে এই কাজে উত্সাহিত করেন।

মুসলমানরা তাঁর সাথে কঠোর পরিশ্রম করে, কিন্তু কিছু আনুগত্যহীন লোকতাদের কাছ থেকে দূরে দূরে থাকে ও আল্লাহর নবীর অজ্ঞাতে ও তাঁর অনুমতি ছাড়াই কাজে ফাঁকি দিয়ে গোপনে তাদের পরিবারের সাথে সময় কাটাতে শুরু করে। [1]

কোনো জরুরী কাজে যদি কোনো মুসলমানের এই কাজ ছেড়ে চলে যাওয়ার প্রয়োজন হয়, তবে সে আল্লাহর নবীর কাছে তার অনুমতি প্রার্থনা করে ও তিনি তা মনজুর করেন। সঠিক কাজের প্রতি বাসনা ও সম্মানবোধের কারণে সে তার সেই জরুরি কাজটি সম্পন্ন করে পুনরায় এই কাজে যোগদান করে। 

এই প্রসঙ্গে আল্লাহ নাযিল করে:

[যা ঘটেছিল]
২৪:৬২- "মুমিন তো তারাই; যারা আল্লাহর ও রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং রসূলের সাথে কোন সমষ্টিগত কাজে শরীক হলে তাঁর কাছ থেকে অনুমতি গ্রহণ ব্যতীত চলে যায় না। যারা আপনার কাছে অনুমতি প্রার্থনা করে, তারাই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে। অতএব তারা আপনার কাছে তাদের কোন কাজের জন্যে অনুমতি চাইলে আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা অনুমতি দিন এবং তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহ ক্ষমাশীল, মেহেরবান।"  
এই অংশটি নাজিল হয় ঐ মুসলমানদের বিষয়ে যারা আল্লাহ ও তার নবীর আদেশ মান্য করতো এবং শুভ ফলের আশা ও তার সম্মান করতো।

তারপর যারা কাজে গাফিলতি করে দূরে অবস্থান করতো ও আল্লাহর নবীর অনুমতি ছাড়া কাজ ছেড়ে চলে যেতো, সেই মুনাফিকদের উদ্দেশে আল্লাহ বলে:

[হুমকি]
২৪:৬৩-৬৪“রসূলের আহবানকে তোমরা তোমাদের একে অপরকে আহ্বানের মত গণ্য করো না। আল্লাহ তাদেরকে জানেন, যারা তোমাদের মধ্যে চুপিসারে সরে পড়ে। অতএব যারা তাঁর আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা এ বিষয়ে সতর্ক হোক যে, বিপর্যয় তাদেরকে স্পর্শ করবে অথবা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি তাদেরকে গ্রাস করবে। (৬৪) মনে রেখো নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা আছে, তা আল্লাহরই। তোমরা যে অবস্থায় আছ তা তিনি জানেন। যেদিন তারা তাঁর কাছে প্রত্যাবর্তিত হবে, সেদিন তিনি বলে দেবেন তারা যা করেছে। আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ই জানেন।” 

মুসলমানেরা খন্দক খনন শেষ হওয়া পর্যন্ত এই কাজে নিয়োজিত থাকে। এই কাজটি করার সময় তারা জুয়ায়েল নামের এক মুসলমানকে নিয়ে, যাকে আল্লাহর নবী 'আমর' নামে নামকরণ করে, এক ছন্দময় পদ্য (work song) রচনা করেন; যার বচন ছিল: 

"পরিবর্তন করেছে সে নাম তার জুয়ায়েল থেকে আমর যেদিন;
সেই কাঙ্গালের সাহায্য হয়েছে সেদিন।"
(‘He changed his name from Ju'ayl to 'Amr;
And was a help to the poor man that day.’)

যখন তারা 'আমর' শব্দটি উচ্চারণের কাছে আসে, আল্লাহর নবী বলেন 'আমর'; এবং যখন তারা 'সাহায্য' শব্দটি উচ্চারণের কাছে আসে, আল্লাহর নবী বলেন 'সাহায্য'।
[---- এরপর ‘সিরাতে’ কিছু অলৌকিক কিচ্ছার বর্ণনা---]

আল্লাহর নবীর খন্দক খনন সম্পন্ন হওয়ার পর; আল-জুরুফ ও জাঘাবার [Zaghaba (al-Ghaba)] যে স্থানটিতে রুমার জলস্রোত প্রবাহিত, সেই স্থানটিতে এসে কুরাইশরাতাদের শিবির স্থাপন করে। তাদের সঙ্গে ছিল দশ হাজার সৈন্য; যাদের মধ্যে ছিল তাদের ভাড়াটে কালো লোক এবং তাদের পক্ষে যোগদানকারী বানু কিনানা ও তিহামারজনগণ। [2]

ঘাতাফান গোত্রের লোকেরাও তাদের পক্ষে যোগদানকারী নাজাদের লোকদের নিয়ে ওহুদের দিকে ধানাব নাকমা (Dhanab Naqma) স্থানটিতে এসে থামে।

আল্লাহর নবী ও মুসলমানেরা সা'ল [মধ্য মদিনার এক পাহাড়] কে পেছনে ফেলে তিন হাজার সৈন্য সহকারে বের হয়ে আসেন। খন্দকটি তাঁর ও শত্রুবাহিনীর মাঝখানে রেখে তিনি সেখানে তাঁর শিবির স্থাপন করেন এবং মহিলা ও শিশুদেরকে দুর্গের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার আদেশ জারি করেন।’ [3]

আল তাবারীর (৮৩৯-৯২৩ সাল) অতিরিক্ত বর্ণনা:

‘মুহাম্মদ বিন উমর [আল-ওয়াকিদি] হইতে বর্ণিত, যে লোকটি আল্লাহর নবীকে এই খন্দক খননের পরামর্শ দেন, তিনি হলেন সালমান। আল্লাহর নবীর সাথে সালমান এই যুদ্ধটিতেই প্রথম অংশগ্রহণ করেন। সেই সময় তিনি ছিলেন একজন মুক্ত মানুষ (a free man)।

তিনি বলেন, "হে আল্লাহর নবী, পারস্য দেশে যদি কখনও আমরা পরিবেষ্টিত হয়ে যাই; তখন খন্দক খনন করে আমরা নিজেদের রক্ষা করি।"'

মুহাম্মদ বিন বাশশার [মৃত্যু: ৮৬৬ সাল] < মুহাম্মদ বিন খালিদ ইবনে আথমান <কাথির বিন আবদুল্লাহ বিন আমর বিন আউফ আল-মুযানি [মৃত্যু: ৭৬৭-৭৭৭ সালের মধ্যে] < তার পিতা (আবদুল্লাহ বিন আমর) < তার পিতা (আমর বিন আউফ) হইতে বর্ণিত:

'আল্লাহর নবী 'আল-আহযাব বছরে বানু হারিথা গোত্রের দুই শেখের দুর্গ থেকে শুরু করে আল-মাধাদ (al-Madhad) পর্যন্ত খন্দক খনন করেন[4] [5]

প্রতি ৪০ কিউবিট [প্রায় ৬০ ফুট] অংশের কার্যভার তিনি দশ জন মুসলমানের উপর ন্যস্ত করেন। মুহাজির ও আনসাররা সালমানকে নিয়ে বিতর্কে নামে। আনসাররা বলে, "সালমান আমাদেরই একজন।" মুহাজিররা বলে, "সালমান আমাদেরই একজন।" তাই আল্লাহর নবী বলেন, "সালমান আমাদেরই একজন, নবীর উম্মতের একজন।"’ [6]

- (অনুবাদ, < ও [**] যোগ – লেখক)

>>> আদি উৎসের ইসলামে নিবেদিতপ্রাণ বিশিষ্ট মুসলিম ঐতিহাসিকদেরই ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, মিত্র বাহিনীর দশ হাজার সৈন্যের সেনা ছাউনিটি ছিল খন্দকটির উত্তর দিকে; আর তাদের পিঠ ছিল ওহুদ পাহাড়ের দিকে।

“তাঁদের সরাসরি সম্মুখে ছিল ‘খন্দকের বাধা’ ও খন্দকের ওপারে মুসলমান বাহিনী। খন্দকের এই বাধাটি অতিক্রম করা মিত্র বাহিনীর পক্ষে সম্ভব ছিল না; যে কারণে তাঁরা সদল বলে মুসলমানদের সরাসরি আক্রমণ করতে পারেননি।" (নীচের চিত্র)। [7]


অন্যদিকে,

মুহাম্মদের নেতৃত্বে মুসলমান বাহিনীর তিন হাজার সৈন্যের সেনা ছাউনিটি ছিল খন্দকটির দক্ষিণে।

“তাঁদের সরাসরি সম্মুখে ছিল তাঁদের খননকৃত 'প্রতিরক্ষা খন্দক' ও খন্দকের ওপারে মিত্র বাহিনী; যে খন্দকটির কারণে তাঁরা মিত্র বাহিনীর সরাসরি আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছিলেন। আর তাঁদের পেছনটি ছিল মদিনার দিকে:

তাঁদের সরাসরি পিছনেই ছিল সাল পর্বত (Sal’/Sala/Sali), তার পিছনে মদিনা এবং তারও পিছনে বনি কুরাইজাগোত্রের লোকেরা।"

>>> মদিনায় অবস্থিত সম্পদশালী তিনটি বড় ইহুদী গোত্রের দুইটিকে অনেক আগেই মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা বিতাড়িত করে তাঁদের সর্বস্ব লুণ্ঠন করেছেন; বদর যুদ্ধের অল্প কিছুদিন পর বনি কেউনুকা গোত্রকে (পর্ব: ৫১) ও ওহুদ যুদ্ধের মাস ছয়েক পর বনি নাদির গোত্রকে (পর্ব: ৫২ ও ৭৫)। অবশিষ্ট আছে শুধু 'বনি কুরাইজা' গোত্র।

একমাত্র অবশিষ্ট এই 'বনি কুরাইজা গোত্রের অবস্থান' ছিল মদিনার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে। তাঁদের সম্মুখটি ছিল মুসলমান বাহিনীর পিছন দিকে।
“তাঁদের সম্মুখে ছিল পর্যায়ক্রমে মদিনা শহর, তার সামনে সাল পর্বত ও মুসলমান বাহিনী, তারও সামনে খন্দক এবং তারও সামনে কুরাইশ ও ঘাতাফানের নেতৃত্বে মিত্র বাহিনী। যৌনাঙ্গের কেশ দেখে সনাক্তকরণ পদ্ধতিতে তাঁদের সক্ষম প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ সদস্য সংখ্যা ছিল সর্বমোট ৭০০- ৯০০ জন।"

খন্দক যুদ্ধ শেষ হওয়ার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা মদিনায় একমাত্র অবশিষ্ট এই সম্পদশালী বনি কুরাইজা গোত্রের সমস্ত সক্ষম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সদস্য ও একজন মহিলাকে একটা একটা করে গলা কেটে হত্যা করে তাঁদের সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি লুণ্ঠন ও তাঁদের সমস্ত মহিলা ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানদের দাস ও যৌন-দাসী তে রূপান্তরিত করে নিজেদের মধ্যে কীভাবে ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন, তার আংশিক আলোচনা 'আবু-লাহাব তত্ত্বে (পর্ব ১২)’ করা হয়েছে।

মুহাম্মদের নেতৃত্বে ৬২৭ সালে সংঘটিত এই "নৃশংস গণহত্যার" ন্যায্যতার সপক্ষে মুহাম্মদের অনুসারীরা তাঁদের রচিত মুহাম্মদের জীবনী গ্রন্থ (সিরাত) ও হাদিস গ্রন্থে যে অজুহাত পেশ করেন, ত হলো:

"তাহারা চুক্তি ভঙ্গ করিয়া মিত্রবাহিনীকে সাহায্য করিয়াছিল!"

কিন্তু,

"কী ছিল সেই চুক্তি এবং কী ছিল তার শর্তাবলী?", সে ব্যাপারে সিরাত বা হাদিসের কোথাও কোনো উল্লেখ নেই। এটি কি সেই চুক্তি যা ইসলামের ইতিহাসে "মদিনা সনদ" নামে বিখ্যাত? এই প্রশ্নের উত্তর যদি হয় ‘হ্যাঁ’, তবে অনেক আগেই মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ “স্বয়ং” কীভাবে সেই চুক্তি ভঙ্গ করেছিলেন, তার বিস্তারিত আলোচনা ‘মদিনা সনদ তত্ত্বে (পর্ব- ৫৩) করা হয়েছে।

"তাহারা মিত্রবাহিনীকে সাহায্য করিয়াছিল!" এই অজুহাত প্রসঙ্গের আলোচনায় সর্বদাই যে-বিষয়টি মনে রাখা একান্ত প্রয়োজন, তা হলো:

"মিত্রবাহিনীর অবস্থান খন্দকের ওপারে, তাঁরা খন্দক অতিক্রমে ব্যর্থ। এমতাবস্থায়, ইচ্ছা করলেও তাঁরা বনি কুরাইজা গোত্রকে সৈন্যবলে সাহায্য করতে অসমর্থ।"

উৎসাহী পাঠকদের কাছে আমার অনুরোধ এই যে, তাঁরা যেন আদি উৎসে বর্ণিত খন্দক যুদ্ধের পরবর্তী পর্বগুলোর বিস্তারিত আলোচনা নিরপেক্ষভাবে মনোযোগের সাথে পর্যবেক্ষণ করেন;

এবং,

মিত্রবাহিনীর কোনো লোকের প্ররোচনায় বনি কুরাইজা গোত্রের মানুষরা তাঁদের ৬০০-৯০০ জন সক্ষম জনবল নিয়ে তাঁদের চেয়ে চার গুণের অধিক সুসজ্জিত মুসলমান সেনাবাহিনীকে পেছন দিক থেকে আক্রমণ করার আত্মঘাতী চেষ্টা করেছিলেন কি না; কিংবা তাঁরা তাঁদের সম্মুখে অবস্থানরত মদিনায় অবশিষ্ট মুসলমান (মহিলা, শিশু ও অন্যান্য) ও অস্ত্রসজ্জিত তিন হাজার মুসলমান সেনাবাহিনী এবং খন্দকের বাধা অতিক্রম করে খন্দকের ওপারের মিত্র বাহিনীকে গোপনে কোনোরূপ সাহায্য করেছিলেন কি না, তা জানার চেষ্টা করেন।

এ বিষয়ের বিস্তারিত পর্যালোচনা 'বনি কুরাইজা গণহত্যা' পর্বে করা হবে।

(চলবে)

[কুরানের উদ্ধৃতিগুলো সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হেরেম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া, অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট অনুবাদকারীর পাশাপাশি অনুবাদ এখানে।] 

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:

[1] ‘আনুগত্যহীন লোক’ - অর্থাৎ 'মুনাফিক' (Disaffected); নামেমাত্র মুসলমান, যারা গোপনে মুহাম্মদের অনেক কর্মপন্থার বিরোধিতা করতেন। বলা হয়, তাদের নেতা ছিলেন আবদুল্লাহ বিন উবাই।

[2]‘তিহামা’: আরব উপদ্বীপের লোহিত সাগর উপকূলীয় সমভূমি।

[3] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ:  A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৪৫১-৪৫২
[4] ‘বানু হারিথা গোত্র’: আল আউস গোত্রের অন্তর্ভুক্ত, যাদের অবস্থান ছিল মদিনার উত্তর-পূর্ব দিকে।

[5] ‘আল-মাধাদ’: আল-খাযরাজ গোত্রের অধীনে বানু সালিমাহ গোত্রের অন্তর্ভুক্ত বানু-হারাম গোত্রের দুর্গ, যার অবস্থান ছিল সা'ল পাহাড়ের পশ্চিমে।

[6] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮,ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৪৬৫-১৪৭১

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন