লিখেছেন সেক্যুলার ফ্রাইডে
হজ্বকে বলা হয় ইসলাম ধর্মের পঞ্চম স্তম্ভ এবং আর্থিক ও শারীরিকভাবে সক্ষম প্রতিটি মুসলমানের জন্য জীবনে অন্তত একবার হজ্ব করা ফরজ বলেই বিবেচিত। মরু-সাংস্কৃতিক সাম্রাজ্যবাদ বেশ সুচারুরূপেই এই ধারণাটি মুসলমানদের মনে ঢুকিয়ে দিতে পেরেছে।
শুধুমাত্র ২০১২ সালেই হজ্ব ও উমরাহ মিলিয়ে সৌদি আরবের আয় ছিল এক হাজার ৬৫০ কোটি ডলারেরও বেশি, যা মোট জিডিপি'র প্রায় ৬ শতাংশ। গালফ নিউজ-এর সাম্প্রতিক বিশ্লেষণে অনুমান করা হয়েছে, হজ্বকেন্দ্রিক আর্থিক লেনদেনের পরিমাণ অন্তত তিন হাজার কোটি ডলার। বিজনেস মনিটর ইন্টারন্যাশনালের সমীক্ষা অনুসারে, হজ্বের সময় উপহারসামগ্রী ও স্মারক বেচাকেনার পরিমাণ অন্তত ১১০ কোটি ডলার। এসব সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে টুপি, তসবিহ, জায়নামাজ, স্কার্ফ, হিজাব ইত্যাদি।
বাংলাদেশ থেকে প্রতি বছর লক্ষাধিক হজ্বযাত্রী সৌদি আরবে যান; প্রতি জনে গড়ে ৩ লক্ষ টাকা ব্যয় নির্বাহ করলে এই খাতে মোট অর্থব্যয়ের পরিমান দাঁড়ায় ৩ হাজার কোটিরও বেশি, যা সম্পূর্ণ অনুৎপাদনশীল খাতে ব্যয় হয়। দরিদ্র এই রাষ্ট্রের জন্য অযাচিত এই ব্যয়ভার বহন অত্যন্ত অযৌক্তিক ও অপ্রয়োজনীয়।
ইসলামকে শান্তির ধর্ম দাবি করা মুসলমানদেরা ধারণাই নেই যে, প্রকৃত মুসলমানের জন্য হজ্ব করার চাইতে জিহাদ করা অনেক, অনেক বেশি জরুরি; ইসলামের নামে ধর্মের ডাণ্ডাবেড়ির প্রবর্তক যুদ্ধবাজ নবীর প্রদর্শিত প্রকৃত পথ এটিই।
মুহাম্মদ নিজেই হজ্বের চাইতে যুদ্ধ বেশি করেছেন। নিচের হাদিসগুলোয় তার প্রমাণ মেলে।
রিয়াযুস স্বা-লিহীন, বই ১২, হাদিস ১৩৪১
হযরত আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: যে ব্যক্তি জিহাদ করেনি এবং জিহাদের কোন চিন্তাও তার অন্তরে আসেনি এমন অবস্থায় মারা গেল, তার মৃত্যু হলো নিফাকের (মুনাফেকীর) এক শাখার ওপর। (মুসলিম)
রিয়াযুস স্বা-লিহীন, বই ১২, হাদিস ১২৮৫
আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) কে জিজ্ঞেস করা হলো, কোন্ কাজটি উত্তম? তিনি বললেনঃ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনা। বলা হলোঃ তারপর কোনটি? তিনি বললেনঃ আল্লাহর পথে জিহাদ করা। বলা হলোঃ তারপর কোনটি। তিনি বললেনঃ ‘মাবরুর’ (আল্লাহর নিকট মকবুল) হজ্ব। (বুখারী ও মুসলিম)
সর্বোপরি নিচের হাদিসটি মুহাম্মদের যুদ্ধবাজ চরিত্র আরও স্পষ্ট করে তোলে...
সহিহ মুসলিম, বই ১৯, হাদিস ৪৪৬৫
আবু বাকর ইবন শায়বা (র)......যায়দ ইবন আরকাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সা) ঊনিশটি যুদ্ধ করেছেন । হিজরতের পর একটি মাত্র হজ্জ করেছিলেন, যেটি ছাড়া আর কোন হজ্জ করেননি তা হল বিদায় হজ্জ।
এরপরও মুসলমানেরা কেনই বা হজ্ব পাগল, আর কেনই বা নিজ দেশের অর্থ অকাতরে ভিনদেশে বিলিয়ে আসে, তা বোঝা সত্যিই দুষ্কর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন