শনিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

ফাতেমা দেবীর ফতোয়া - ২১

লিখেছেন ফাতেমা দেবী (সঃ)

১০১.
অনেক মুছলমান কোরবানির মানবিক ও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেয় এভাবে, তারা নাকি কোরবানির মাধ্যমে তাদের মনের পশুকে কোরবানি করে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, তাদের মনের পশু তাদের মনে না থেকে হাটে-বাজারে ও ফার্মগুলিতে থাকে কেন? তারা তাদের মনের পশুকে নিজেদের মন থেকে না নিয়ে হাট-বাজার ও ফার্ম থেকে কিনে নেয় কেন?

১০২.
নবী ইব্রাহীমকে আল্যা তার সবচেয়ে প্রিয় জিনিস আল্যার নামে হত্যা করতে বলেছিল। ইব্রাহীমের সবচেয়ে প্রিয় জিনিস ছিল তার পুত্র ইসমাইল। তাই সে নিজের পুত্র ইসমাইলকে পাহাড়ে নিয়ে চোখ বন্ধ করে জবাই করতে শুরু করে দিল। চোখ খুলে দেখলো, ইসমাইল নয়, একটি পশু জবাই হয়ে আছে। পশুটি তার নিজের তাজা রক্তের ওপর ছটফট করছে, গোঙাচ্ছে, কষ্টে তার চোখগুলি বের হয়ে যেতে চাইছে, তার জিহবা বেরিয়ে গেছে, রক্তে আর কাদায় মাখামাখি হয়ে গেছে, মৃত্যুর সাথে লড়ছে সে। কিছুক্ষণ পরে সে নিথর হয়ে গেছে। তাই দেখে আল্যা রাব্বুল আলামিন খুব খুশি হয়ে গেছে। এই হলো কোরবানির ইতিহাস। সামর্থ্যবান মুসলমানদের কোরবানি ফরজ। কোরবানি মানে, আল্যা রাব্বুল আলামিনকে খুশি করার জন্য নিরীহ অসহায় পশুদের খুন করা আল্যাকে মহান ঘোষণা করে।

এই কথাগুলি পড়ে আমাকে আপনারা প্রশ্ন করতে পারেন, আমি কি মাছ-মাংস খাই না? আমি কি গৌতম বুদ্ধ হয়ে গেছি? উত্তর হচ্ছে, আমি মাছ-মাংস শাক-সবজি সবই খাই। তবে তা ছওয়াব বা পূণ্য লাভের জন্য নয়, বাঁচার জন্য। পৃথিবীর সকল জীব খাদ্যচক্র ও ইকোসিস্টেমের অন্তর্গত। বেঁচে থাকার জন্য আমরা প্রত্যেকেই খাবারের জন্য একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। আমরা ভেজ বা ননভেজ যা-ই খাই না কেন, তার সবই প্রাণ কিন্তু। ভাত-রুটি-নুডুলসও প্রাণ থেকে আসে। আমরা যেটাই খাই, কোনো না কোনো প্রাণ আমাদেরকে হত্যা করতে হয়। নিষ্প্রাণ বস্তু যেমন; ইট বালু সিমেন্ট এসব আমরা খেতে পারি না। বাঁচার জন্য খাওয়া আর পুণ্যলাভের জন্য নিরীহ পশুদের নির্মমভাবে হত্যা করে হত্যোৎব পালন করা কি এক কথা হলো?

মাছ-মাংস যদিও খাই, মুরগি জবাইয়ের দৃশ্য এবং বড়শিতে মাছ ধরার দৃশ্যও আমি দেখতে পারি না। খুব কষ্ট লাগে। নিজেকে স্বার্থপর মনে হয়। কিন্তু বাঁচার জন্য ফুড চেইনের বাইরেও আমি যেতে পারি না। আল্যা নাকি এত মহানম নিরীহ পশুদের হত্যার দৃশ্য দেখে তিনি কীভাবে খুশি হন? কাউকে হত্যা কীভাবে ছওয়াবের ব্যাপার হতে পারে?

১০৩.
কোরবানি ঈদের দিন মুছলমানদের ঘরে ঘরে হত্যাযজ্ঞ মোবারক।

১০৪.
পশুদের যখন আল্যার আদেশে তাকে খুশি করার জন্য মুছলমানেরা কোরবানির নামে খুন করে, যখন পশুগুলি মৃত্যুযন্ত্রণায় ছটফট করে, নিজের রক্ত ও কাদায় মাখামাখি হয়ে ধরফর করে তখন মহান দয়ালু আল্যা সাত আসমানের উপরে আরসে বসে মহানন্দে খিকখিক করে হাসে ও ছওয়াবের লোভে পশু খুনি মুছলিমদের ছওয়াব দান করে। আল্লা কত দয়ালু ও মহান এইবার দেখেন। বলেন, আল্লা মহান।

১০৫.
আল্যার একমাত্র খাদ্য হচ্ছে রক্ত। আল্যা কোরবানির দিন হত্যা করা পশুর তাজা রক্তের বন্যার উপর গড়াগড়ি দিয়ে রক্ত খায়। সারা বছর বেচারা তেমন কিছুই খেতে পায় না। খিদের চোটে মাথা খারাপ হয়ে আবোলতাবোল কথা বলে। মোমিনাদের উচিত তাদের পিরিয়ডের রক্ত ফিডারে ভরে জমা করে আল্যার কাছে পাঠিয়ে দেয়া। আল্যা আরশে বসে বসে খেতে পারবে। মমিনাদের উচিত হচ্ছে না, তাদের পিরিয়ডের রক্ত অপচয় করা। আল্লা তো বলেছেন, অপচয়কারী শয়তানের ভ্রাতা। মমিনারা কি শয়তানের ভ্রাতা হতে চায়?

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন