লিখেছেন নাস্তিক ফিনিক্স
ভারতে শিক্ষায় গৈরিকীকরণের আরো এক কদর্য ধাপ ঘোষিত হয়েছে। স্কুল-সিলেবাসে নাকি নীতিশিক্ষা বিষয় হিসেবে রামায়ণ ও মহাভারত অবশ্যপাঠ্য হিসেবে যুক্ত হবে।
আসুন দেখি, রামায়ন থেকে কী কী নীতিশিক্ষা আমরা পাই:
১. সদ্যোজাত মেয়েদের গাছের নিচে, মাঠের ধারে কুড়িয়ে পাওয়া ভারতের প্রাচীন সংস্কৃতির অঙ্গ।
২. রাজ্যে বৃষ্টি আনতে চাইলে ঘরের মেয়েদের তুলে দিতে হয় ব্রাহ্মণদের হাতে।
৩. পেটে বেছে বেছে ছেলে আনবার পদ্ধতি রামদেবের আবিষ্কার নয়, অনেক দিন থেকেই ছিল।
৪. দু'জনের ডুয়েল লড়াই চলাকালীন পেছন থেকে লুকিয়ে হত্যা করলেই আপনি মর্যাদা-পুরুষোত্তম।
৫. প্রেম নিবেদনকারিণীর শ্লীলতাহানি ও অঙ্গহানি পবিত্র ধর্ম।
৬. নিরস্ত্র মানুষকে পুজোর ঘরে ঢুকে হত্যা করাতেও অপরাধ নেই, যদি আপনি একটা মহাকাব্যের হিরোর ভাই হন।
৭. অপহৃতা স্ত্রীকে উদ্ধারের পর তার সতীত্বের পরীক্ষা নেওয়াও জায়েজ।.
৮. নিজের বিরহিণী স্ত্রীকে অপরাপর পুরুষদের মধ্যে কাউকে বেছে নিতে বলা মর্যাদা-পুরুষোত্তমের যোগ্য কাজ।
৯. অন্যের কথা শুনে নিজের গর্ভবতী স্ত্রীকে কুলটা অপবাদ দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়াই প্রকৃত পুরুষধর্ম।
১০. নাস্তিক ও বৌদ্ধরা তস্করের ন্যায় শাস্তিযোগ্য। (এটা পড়ে রাম-কে জামাতী জামাতী মনে হলে কিছু করার নেই)
১১. নীচুজাতের মানুষের পড়াশোনা করার অধিকার নেই।
১২. রাজত্বের লোভে নিজের দেশের পেছনে ছুরি মারায় মীরজাফর প্রথম নন। মহাকাব্যের হিরোর সাথে মিতালী পাকাতে পারলে এই গাদ্দারির জন্য আপনার নাম ধার্মিক শিবিরে খোদাই করা থাকবে।
১৩. বাচ্চা পয়দা করে তাদের খোঁজখবর না করা আদর্শ পিতার ধর্ম।
১৪. মেয়েদের জন্য একটি স্পেশাল শিক্ষাসিরিজ আছে:
- অ্যাবর্শন ক্লিনিকের মুখে ছাই দিয়ে তুমি জন্ম নিতেও পারো, তবে জন্মের পর মায়ের কোল পাবে, এমন নিশ্চয়তা নেই, মাঠঘাটেও তোমায় ছেড়ে রেখে আসা হতে পারে ।
- তোমার বিয়ে তোমার পছন্দে নয়, তা ঠিক তরা হবে পাত্রের কিছু যোগ্যতার (যেমন ধনুর্ভঙ্গ) ভিত্তিতে।
- বরের খেয়ালে তোমাকেও তার সঙ্গে জঙ্গলে গিয়ে কাটাতে হতে পারে ।
- তোমায় কেউ চুরি করে নিয়ে যেতে পারে, তবে উদ্ধার পেলেও তোমার পরিবারে ঠাঁই জোটার সম্ভাবনা কম।
- হাইমেন টেস্টে পাশ না করলে তোমার ঠাঁই হবে হয়তো যৌনপল্লীতে।
- চরিত্র নিয়ে অপবাদ দিয়ে স্বামী বাড়ির থেকে তাড়িয়ে দিলে থানা-পুলিশে যেয়ো না, বাপের বাড়ীতেও ফিরে যেয়ো না। সহ্য করো। স্বামী আবার রাজসভায় ডেকে এনে অপমান করলে আত্মহত্যা করো, কিন্তু প্রতিবাদ করো না।
মহাভারতের নীতিশিক্ষাগুলি কী কী:
১. এক বুড়ো বাপের যৌনক্ষুধা নিবৃত্তির জন্য জোয়ান ছেলের নিজের জীবন পুরো বরবাদ করা উচিত।
২. তীর-ধনুক চালানোর প্রতিযোগিতার পুরস্কার হিসেবে একটা মেয়ে পাওয়া যায়।
৩. এক মা তার ছেলেদের বলছে, এক ভাইয়ের বৌকে সবাই মিলে সম্ভোগ করো।
৪. নিচু জাতের ছেলেরা শিক্ষালাভ করতে পারবে না, এদিকে শিক্ষাদান না করেও তাদের থেকে গুরুদক্ষিণা নেওয়া জায়েজ।
৫. এক স্বামী বিভিন্ন লোককে ডেকে ডেকে তার স্ত্রীকে গর্ভবতী করাচ্ছে।
৬. স্বামী অন্ধ হলে নিজেকেও অন্ধ সাজতে হবে।
৭. রাজার জন্য প্রাসাদ বানাতে পুরো একটা জঙ্গলকে পুড়িয়ে খাক করে দাও।
৮. জুয়োয় নিজের বৌকে অন্যের হাতে তুলে দিলে তবেই তোমায় লোকে ধর্মপুত্তুর বলবে।
৯. তোমার সাথে একজন বুদ্ধিমান ড্রাইভার থাকলে তুমি সম্পত্তি নিয়ে মারদাঙ্গাকেও দিব্যি ধর্মযুদ্ধ বলে চালিয়ে দিতে পারো।
১০. নিজের সামান্য স্বার্থসিদ্ধির জন্য নীচুজাতের লোকজনকে পুড়িয়ে মারাও জায়েজ।
এগুলো পড়ার পরে হিন্দু বন্ধুরা বলতেই পারেন, "এ তো একতরফা লেখা, মাদ্রাসায় কোরানশিক্ষা নিয়ে এক বর্ণও তো নেই!" তাদের বলি, কোরান শিক্ষা নিয়ে এক বর্ণ লেখার প্রয়োজনও নেই। হাতের সামনে কোরানশিক্ষার সবচেয়ে বড় উদাহরণ তো আছে: ভারতের পশ্চিমবঙ্গের "লালগোলা খাগড়াগড় RDX Blast", যেই বিস্ফোরণে গ্রেফতার খোদ "লালগোলা মোকিমনগর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মফাজুল শেখ।"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন