লিখেছেন গোলাপ
পর্ব ১ > পর্ব ২ > পর্ব ৩ > পর্ব ৪ > পর্ব ৫ > পর্ব ৬ > পর্ব ৭ > পর্ব ৮ > পর্ব ৯ > পর্ব ১০ > পর্ব ১১ > পর্ব ১২ > পর্ব ১৩ > পর্ব ১৪ > পর্ব ১৫ > পর্ব ১৬ > পর্ব ১৭ > পর্ব ১৮ > পর্ব ১৯ > পর্ব ২০ > পর্ব ২১ > পর্ব ২২ > পর্ব ২৩ > পর্ব ২৪ > পর্ব ২৫ > পর্ব ২৬ > পর্ব ২৭ > পর্ব ২৮ > পর্ব ২৯ > পর্ব ৩০ > পর্ব ৩১ > পর্ব ৩২ > পর্ব ৩৩ > পর্ব ৩৪ > পর্ব ৩৫ > পর্ব ৩৬ > পর্ব ৩৭ > পর্ব ৩৮ > পর্ব ৩৯ > পর্ব ৪০ > পর্ব ৪১ > পর্ব ৪২ > পর্ব ৪৩ > পর্ব ৪৪ > পর্ব ৪৫ > পর্ব ৪৬ > পর্ব ৪৭ > পর্ব ৪৮ > পর্ব ৪৯ > পর্ব ৫০ > পর্ব ৫১ > পর্ব ৫২ > পর্ব ৫৩ > পর্ব ৫৪ > পর্ব ৫৫ > পর্ব ৫৬ > পর্ব ৫৭ > পর্ব ৫৮ > পর্ব ৫৯ > পর্ব ৬০ > পর্ব ৬১ > পর্ব ৬২ > পর্ব ৬৩ > পর্ব ৬৪ > পর্ব ৬৫ > পর্ব ৬৬ > পর্ব ৬৭ > পর্ব ৬৮ > পর্ব ৬৯ > পর্ব ৭০ > পর্ব ৭১ > পর্ব ৭২ > পর্ব ৭৩ > পর্ব ৭৪ > পর্ব ৭৫ > পর্ব ৭৬ > পর্ব ৭৭ > পর্ব ৭৮ > পর্ব ৭৯ > পর্ব ৮০ > পর্ব ৮১ > পর্ব ৮২ > পর্ব ৮৩ > পর্ব ৮৪ > পর্ব ৮৫ > পর্ব ৮৬ > পর্ব ৮৭ > পর্ব ৮৮ > পর্ব ৮৯ > পর্ব ৯০ > পর্ব ৯১ > পর্ব ৯২ > পর্ব ৯৩ > পর্ব ৯৪ > পর্ব ৯৫ > পর্ব ৯৬ > পর্ব ৯৭ > পর্ব ৯৮ > পর্ব ৯৯
স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কী উদ্দেশ্যে আল্লাহর রেফারেন্সে সুরা মুনাফিকুন হাজির করেছিলেন, এই রচনাটি হাজির করার পর আবদুল্লাহ বিন উবাইয়ের মিত্র ও তাঁর প্রতি সহানুভূতিশীল আনসাররা আবদুল্লাহ বিন উবাইয়ের প্রতি কীরূপ বিরূপ আচরণ করা শুরু করেছিলেন, আবদুল্লাহ বিন উবাইয়ের পুত্র আবদুল্লাহ তার জন্মদাতা পিতাকে নিজ হাতে কেন খুন করতে চেয়েছিলেন, এই সকল পরিস্থিতি অবলোকন করে উৎফুল্ল মুহাম্মদ তাঁর প্রিয় অনুসারী উমর ইবনে খাত্তাবকে কী বলেছিলেন - ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।
মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের (৭০৪-৭৬৮ সাল) বর্ণনা: [1] [2] [3]
পূর্ব প্রকাশিতের (পর্ব: ৯৮) পর:
‘মিকায়াস বিন সুবাবা (Miqyas b. Subaba) মক্কা থেকে আগমন করেন ও ঘোষণা দেন যে, তিনি মুসলমান হয়েছেন এবং [মুহাম্মদকে] বলেন, "আমি মুসলমান হিসাবে আমার ভাইয়ের খুনের রক্তমূল্য পরিশোধের দাবি নিয়ে আপনার কাছে এসেছি, তাকে ভুলক্রমে হত্যা করা হয়েছে [পর্ব: ৯৭]।"
আল্লাহর নবী আদেশ করেন যে, তার ভাই হিশামের রক্তমুল্য যেন তাকে দেওয়া হয়, তিনি অল্প কিছু সময় আল্লাহর নবীর সাথে কাটান। তারপর তিনি তার ভাইয়ের হত্যাকারীকে আক্রমণ করেন, তাকে খুন করেন ও ধর্মত্যাগী (apostate) অবস্থায় মক্কায় প্রত্যাবর্তন করেন।
বানু মুসতালিক গোত্রের যে-লোকদের খুন করা হয়েছিল: আলী খুন করে দুই মালিক ও তার পুত্রকে। আবদুর রহমান বিন আউফ খুন করে তাদের এক অশ্বারোহীকে, যার নাম ছিল আহমার অথবা উহাইমির।
আল্লাহর নবী বহু যুদ্ধবন্দী হস্তগত করেন ও তাদেরকে মুসলমানদের মধ্যে বণ্টন করেন। তাদের একজন ছিলেন জুয়াইরিয়া বিনতে আল-হারিথ বিন আবু দিরার (Juwayriya d. al-Harith b. Abu Dirar), আল্লাহর নবীর স্ত্রী।’
ইবনে হিশামের নোট:
‘বানু মুসতালিক হামলার দিনে মুসলমানদের সিংহনাদ (war cry) ছিল, "হে বিজয়ীরা, হত্যা কর, হত্যা কর (O victorious one, slay, slay)!”’ [4]
ইমাম মুসলিমের (৮১৯ - ৮৭৫ সাল) বর্ণনা - সহি মুসলিম ১৯:৪২৯২:
‘ইবনে আউন হইতে বর্ণিত: আমি নাফির কাছে লিখেছিলাম এটি জানতে যে, (অবিশ্বাসীদের উপর) হামলা করার পূর্বে তাদের কাছে (ইসলামের) দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার প্রয়োজন ছিল কি না। (জবাবে) তিনি আমাকে লিখেছিলেন যে, ইসলামের প্রাথমিক সময়ে এটির প্রয়োজন ছিল। আল্লাহর নবী (তার উপর শান্তি বর্ষিত হউক) বানু মুসতালিক গোত্রের লোকদের উপর যে-হামলাটি চালিয়েছিলেন, তা ছিল তাদের অজ্ঞাতে; যখন তারা এক পানি-পূর্ণ স্থানে তাদের গৃহপালিত পশুদের পানি পান করাচ্ছিল। তাদের যে সমস্ত লোক যুদ্ধে জড়িত হয়েছিল, তিনি তাদেরকে করেছিলেন হত্যা ও অন্যদের করেছিলেন বন্দী। ঐ একই দিনে তিনি জুয়াইরিয়া বিনতে আল-হারিথ-কে বন্দী করেন। নাফি জানিয়েছেন যে, এই উপাখ্যানটি তাঁকে বর্ণনা করেছেন আবদুল্লাহ বিন উমর, যিনি (নিজে) ছিলেন সেই হামলাকারী সৈন্যদের একজন।’ [5]
- অনুবাদ, টাইটেল, ও [**] যোগ - লেখক।]
>>>
>>> আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, বানু মুসতালিক গোত্রের ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের এই হামলাটি ছিল অতর্কিতে, বিনা নোটিশে। এই অতর্কিত হামলার বিরুদ্ধে এই জনগোষ্ঠীর যারাই আত্মরক্ষার চেষ্টায় যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিলেন, তাঁদেরকেই করা হয়েছিল খুন। অন্যদের করা হয়েছিল বন্দী, অতঃপর দাস ও যৌনদাসী রূপে নিজেদের মধ্যে করা হয়েছিল ভাগাভাগি। অল্প কিছুক্ষণ আগেই যে জনপদের প্রতিটি ব্যক্তি ছিলেন এক একজন মুক্ত মানুষ, যারা বসবাস করতেন তাঁদের নিজ নিজ পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবদের সাথে মুক্ত বিহঙ্গের মত, কিছুক্ষণ পরেই মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের করাল গ্রাসে সেই মানুষগুলোই রূপান্তরিত হলো লাশে, অথবা মুক্ত মানুষ থেকে পরিবর্তিত হলো দাস ও যৌনদাসী রূপে! তাঁদের সমস্ত পরিবারকে করা হলো তছনছ ও তাঁদের সমস্ত সম্পত্তি করা হলো লুণ্ঠন। মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের এই সন্ত্রাসী, নৃশংস ও পাশবিক কর্মকাণ্ডের বৈধতা প্রদানের জন্য যে সমস্ত লোক গত ১৪০০ বছর যাবত বিভিন্ন কলা-কৌশল অবলম্বন করে আসছেন, অন্য কোনো অপশক্তি যদি অনুরূপ উপায়ে তাকে ও তার পরিবার সদস্যদের একইভাবে খুন, জখম ও দাস ও যৌনদাসীতে রূপান্তরিত করেন, তবেই বুঝি তারা মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের পাশবিকতার প্রকৃত স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারবেন।
তথাকথিত মডারেট (ইসলামে কোন "কোমল, মডারেট বা উগ্র" শ্রেণী বিভাগ নেই) পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা (অধিকাংশই না জেনে) যে-দাবি প্রায় সব ক্ষেত্রেই করে থাকেন তা হলো, "মুহাম্মদ অবিশ্বাসীদের বিরুদ্ধে হামলা পরিচালনার আগে তাদেরকে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দিতেন। যখন তারা ইসলামের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করতো, কেবল তখনই আল্লাহর নবী তাদেরকে আক্রমণ করতেন।" তাদের এই দাবি যে সম্পূর্ণ মিথ্যা, তা মুহাম্মদের স্বরচিত গ্রন্থ কুরান (বিস্তারিত আলোচনা করবো 'জিহাদ' অধ্যায়ে) এবং আদি উৎসে বর্ণিত 'সিরাত' ও হাদিসের বর্ণনায় অত্যন্ত স্পষ্ট। মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ও তাঁর অনুসারীরা মদিনার বাইরে অবিশ্বাসী জনপদের ওপর যে সমস্ত অমানুষিক নৃশংস হামলা সংঘটিত করেছিলেন, তার প্রায় সবগুলোই ছিল বিনা নোটিশে, অতর্কিতে, রাতের অন্ধকারে অথবা অতি প্রত্যুষে। আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা জানতে পারি যে, বানু আল-মুসতালিক গোত্রের লোকদের উপর এই পাশবিক হামলাও তার ব্যতিক্রম ছিল না।
তা সত্ত্বেও যদি আলোচনার খাতিরে ধরে নেওয়া হয় যে, তাদের এই দাবি এক শতভাগ সত্যি, তথাপিমুহাম্মদের আদর্শ প্রত্যাখ্যানকারী জনপদবাসীর ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের এই সকল আগ্রাসী হামলা ও কার্যকলাপ সম্পূর্ণভাবে অনৈতিক, অবৈধ ও ন্যাক্কারজনক!একজন লোকের প্রচারিত মতবাদে অবিশ্বাসী জনপদের বিরুদ্ধে সেই প্রচারক ও তাঁর সাগরেদদের অমানুষিক নৃশংস হামলা, খুন, রাহাজানি, দাস ও যৌনদাসীকরণ, লুণ্ঠন; ইত্যাদি অপকর্মকে যে ব্যক্তি বা জনগোষ্ঠী বিভিন্ন কুটকৌশল ও ত্যানা-প্যাঁচানো বাক-চতুরতায় বৈধতা প্রদানের চেষ্টা করেন, তাদেরকে কি কোনভাবেই সুস্থ-মস্তিষ্কের মানুষ বলে অভিহিত করা যায়?
(চলবে)
তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:
[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৪৯২-৪৯৩
[2] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮, ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫১৫-১৫১৮
[3] অনুরূপ বর্ণনা (Parallal): কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক: আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ১, পৃষ্ঠা ৪১১-৪১২
ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ২০১-২০২
[4] Ibid “সিরাত রসুল আল্লাহ”, ইবনে হিশামের নোট নম্বর ৭৩৮- পৃষ্ঠা ৭৬৮
[5] সহি মুসলিম - বই নম্বর ১৯, হাদিস নম্বর ৪২৯২:
Ibn 'Aun reported: I wrote to Nafi' inquiring from him whether it was necessary to extend (to the disbelievers) an invitation to accept (Islam) before making them in fight. He wrote (in reply) to me that it was necessary in the early days of Islam. The Messenger of Allah (may peace be upon him) made a raid upon Banu Mustaliq while they were unaware and their cattle were having a drink at the water. He killed those who fought and imprisoned others. On that very day, he captured Juwairiya bint al-Harith. Nafi' said that this tradition was related to him by Abdullah b. Umar who (himself) was among the raiding troops.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন