লিখেছেন সুবহ মহাপাতক
পৃথিবীতে অনেক মানুষ আত্মহত্যা করে, করতে চায়, করতে বাধ্য হয়। অনেকে তাদের রুচি মতে বিভিন্নভাবে আত্মহত্যা করে। কেউ বিষ খেয়ে, কেউ ফাঁসিতে ঝুলে, কেউ কেউ ট্রেনের ধাক্কা খেয়ে, কেউবা আবার বিদ্যুতায়িত হয়ে। যারা বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করতে চায় বা চেয়েছিল, তারা বলতে পারবে, এ পথে আত্মহত্যার সবচেয়ে কঠিন বিষয়টি হচ্ছে ঐ বিষ জোগাড় করা।
কোনো কারণে একবার আমারও খুব আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হলো। শান্তিপূর্ণভাবে কী করে আত্মহত্যা করা যায়? গুগলিং করে পেলাম - ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে। একদিন ফার্মেসিতে গেলাম। যিনি বসে ছিলেন, তাকে বললাম, "ভাই, তিনপাতা ঘুমের ট্যাবলেট দিন।" তিনি বললেন, "প্রেসক্রিপশন কই?" আমি বললাম, "প্রেসক্রিপশন! ওটা তো বাসায় ফেলে এসেছি!" (মিছা কথা) তিনি একটু বিরক্ত হয়ে বললেন, "আরে যান তো ভাই! ঘুমের ট্যাবলেট ডেঞ্জারাস জিনিস। একসাথে এতগুলা ঔষধ ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কেউ দিবে না।"
ফিরে এসে ভাবতে লাগলাম, কী করা যায়। আবার গুগল মামারে তলব করলাম। দেখলাম, অনেকে ইঁদুর মারার বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে।
মুদির দোকানে গেলাম। বললাম, "আমারে পাঁচ প্যাকেট ইঁদুর মারার বিষ দেন।" মাঝবয়সী দোকানদার একগাল হেসে বললেন, "ইন্দুরে খুব জ্বালায়, তাই না? এই লন, এক লম্বর ইন্দুর মারার বিষ!"
বাহ! ঘুমের ট্যাবলেট জোগাড় করা কত্ত কঠিন, অথচ ইঁদুর মারার বিষ ম্যানেজ করা ডালভাত। আমি খুশি হয়ে এক লম্বর ইন্দুর মারার বিষ নিয়ে বাসায় ফেরত গেলাম।
যেদিন ইঁদুর মারার বিষ খাওয়ার জন্য হাতে নিলাম, খুব চিন্তা হচ্ছিল। ইচ্ছে হচ্ছিল, না খেয়ে ফেলে দিই। তবুও সাহস করে সাড়ে চার প্যাকেট গিলে ফেললাম। একটু পর খিঁচুনি শুরু হলো। আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলো। কয়েকদিন পর সুস্থ হয়ে গেলাম। শালার ইঁদুর মারার বিষেও ভেজাল!
এরপর আবারো গুগল কাগুর দ্বারস্থ হলাম। কী খেলে মৃত্যু নিশ্চিত? উত্তর এলো, সায়ানাইড। সলিউশন পেয়ে খুশি হয়েছিলাম বটে, কিন্তু সায়ানাইড জোগাড় করা যে কতটা কঠিন, সেটাও বুঝতে পেরেছিলাম। আমার আর আত্মহত্যা করা হবে না- এ ভেবে প্রায় হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। হঠাৎই মহান আল্যাফাক বুদ্ধি দিয়ে দিল।
যারা আত্মহত্যা করতে বারবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন, তাঁদের জন্য এই পোষ্ট। মহান আল্যাফাকের প্রদত্ত বুদ্ধিটাই এখানে এরশাদ করা হলো। আত্মহত্যার অব্যর্থ চেষ্টা। বিফলে রক্ত ফেরত।
প্রথমে একটা ফেসবুক আইডি খুলবেন। আইডিতে ছবি, ঠিকানা ঠিকঠাকভাবে দেবেন, যাতে আপনার আত্মহত্যা সম্পন্ন হতে দেরি না হয়। তারপর বেছে বেছে মমিন মুসলমানদের অ্যাড করবেন। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান অ্যাড করলে কাজ হবে না। আনছাড় উল্লা কাংগাল টিমের সদস্য, বিষলামের খাদেমদের অ্যাড করতে ভুলবেন না। তারপর ইসলামবিরোধী কয়েকটা পোস্ট লিখুন। পোস্টগুলো যৌক্তিক হলে ভালো হয়। যত যুক্তি, মৃত্যু তত নিশ্চিত। ওরা যুক্তিকে বড্ড ভয় পায়। হিন্দুরা যেরকম অযৌক্তিকভাবে ইসলাম পোন্দায়, সেভাবে কটাক্ষ করলে মরার সম্ভাবনা কম। যুক্তিতেই তাদের যত বিপত্তি। ব্যস! আপনার কাজ শেষ! এবার নিশ্চিন্ত মনে বসে থাকুন। আপনাকে কিছুই করতে হবে না। যা করার ইসলামরক্ষকরাই করে দেবে। আপনার আত্মহত্যা নিশ্চিত। আগেই বলা হয়েছে, বিফলে রক্ত ফেরত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন