এরপর হাজার বছরের অন্ধকারময় যুগ, যে যুগে অন্ধ কুসংস্কার আর ধর্মীয় বিশ্বাস বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে দাপিয়ে বেড়ালো। আরবদের সংগ্রহে না থাকলে এই সময়ে বিশ্বের অনেক প্রাচীন জ্ঞান লুপ্ত হয়ে যেত। ইতিহাসটা হলো, ইসলাম ধর্মের গোড়ার যুগের কিছুটা সময় একটা তরতাজা অবস্থা ছিল। নবী-আল্লা জাতীয় গোঁড়ামি তখনও চেপে বসেনি আরবে। সেই সময়কালে তারা প্রাচ্যের ও পাশ্চাত্যের অনেক নথি আরবি ভাষায় অনুবাদ ও লিপিবদ্ধ করেছিল। তার ফলে হারিয়ে যাওয়া বিপুল জ্ঞানভাণ্ডার আরব মারফত ফিরে পাওয়া গেছে |
অবশেষে দীর্ঘ অন্ধকার যুগের অবসান ঘটিয়ে এলো কোপারনিকাস (১৪৭৩-১৫৪৩ খ্রিষ্টাব্দ), গ্যালিলিও (১৫৬৪-১৬৪২ খ্রিষ্টাব্দ), কেপলারের (১৫৭১-১৬৩০ খ্রিষ্টাব্দ) যুগ, যখন ধর্মের বিধিনিষেধ তোয়াক্কা না করে বিজ্ঞান আবার তার নিজস্ব পথে হাঁটতে শুরু করলো | তাঁরা দেখালেন ধর্মের সমর্থন সত্ত্বেও টলেমির মত ভুল। আসলে পৃথিবী সমেত সব গ্রহ সূর্যের চারদিকে ঘুরছে।
প্রযুক্তির উন্নতি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষাকে আরো উন্নত স্তরে নিয়ে যায়। গ্যালিলিওর টেলিস্কোপ এমন এক নতুন প্রযুক্তির দরজা খুলে দিল, যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা করল।
আজকের জ্যোতির্বিজ্ঞান শুধু বিশাল বিশাল চোখে দেখার টেলিস্কোপে সীমাবদ্ধ নেই। অন্য সব তরঙ্গ-দৈর্ঘ্যে দেখার জন্যে রেডিও টেলিস্কোপ থেকে শুরু করে ইনফ্রারেড, আলট্রাভায়োলেট, এক্স-রে, গামা-রে - এ সব রকম টেলিস্কোপ তৈরি হয়েছে এবং তার সদ্ব্যবহার হচ্ছে।
সব টেলিস্কোপ অবশ্য পৃথিবীর জমিতে বসানো হয়নি। দরকার অনুযায়ী বেশ কিছু টেলিস্কোপ মহাকাশে পাঠানো হয়েছে। এই সব টেলিস্কোপ জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষণার এক বিশাল দিগন্ত উন্মুক্ত করে চলেছে।
(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন