লিখেছেন জুলিয়াস সিজার
ইসলাম ধর্মানুযায়ী - বেহেশতে প্রত্যেক পুরুষ হুর পাবে ৭২ টি। এই সংখ্যাটি কুরান শরীফে নেই। রয়েছে রসুলের হাদিস তিরমিজি শরীফে। কেমন হবে এই হুরেরা দেখতে?
"এই হুরেরা সব আয়তনয়না, প্রেমময়ী, সুরক্ষিত ডিমের মতো উজ্জ্বল। যাদের আগে কোন পুরুষ বা জিন স্পর্শ করেনি। অক্ষত যোনি সব তারা। মুক্তা, প্রবাল ও পদ্মরাগমণির মতো। এই হুরদের সাথে জান্নাতে রয়েছে মিলন আর মিলন।"
এখন প্রশ্ন হচ্ছে একজন পুরুষ এর হুর কীভাবে সামাল দেবেন? - তার সমাধানও রয়েছে। জান্নাতে প্রবেশের পর একজন মুসলমান পুরুষ একশো জন পুরুষের সমান যৌন-সক্ষমতা লাভ করবেন। পৃথিবীতে তারা যে বয়সেই ত্যাগ করুক না কেন, জান্নাতে প্রবেশ করবে ৩০ বছরের যুবক হয়ে। তাদের বয়স আর বাড়বে না, যৌবন হবে অনন্ত। আর হুরেরাও হবে অনন্তযৌবনা।
জান্নাতে রয়েছে শুধু যৌনতা আর যৌনতা। যৌনতার মানসভূমি জান্নাত। ইমাম গাজ্জালিও এই হুরদের বর্ণনা দিয়েছেন যেভাবে তা চরম যৌনউত্তেজক: "সেখানে অপ্সরাসদৃশ সুন্দরী নারীরা রয়েছে আল্লাহ তাদের আলোক দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। জ্বিন ও মানবদের মধ্যে কেউ তাদের পূর্বে স্পর্শ করে নি। মিলনের সময় তাদের কুমারীর মতো দেখাবে। কাঁচের গেলাসে যেমন লাল শরাব বাইরে থেকে দেখা যায় তেমনি তাদের অস্থি, মাংস, চর্ম কন্ঠনালীর মধ্যে দিয়ে হুরদের সর্বাঙ্গ দেখা যাবে।"
ইরানের কবি হাফিজ তো বেহেশতের সেই যৌনতার স্বাদ পৃথিবীতেই পেতে চাইলেন কবিতায়:
কোরান হাদিস সবাই বলে,
পবিত্র সেই বেহেশত নাকি,
সেথায় গেলে মিলবে শরাব,
তন্বী হুরি ডাগর আঁখি।
শরাব এবং প্রিয়ায় মিলে,
দিন কাটে মোর দোষ কি তাতে?
বেহেশতে যা হারাম নহে,
মর্ত্যে হবে হারাম তা কি!
রসুল মোহাম্মদও বলেছেন, "জান্নাতের সুখ ও সৌন্দর্য্যের বর্ণনা দেওয়া কোন মানবসন্তানের পক্ষে সম্ভব নয়। সেখানে সবার হবে অনন্ত যৌবন। পুরুষদের বয়স হবে ৩০ আর হুর এবং নারীদের বয়স হবে ১৬ বছর।"
আচ্ছা, ১৬ বছরে মেয়েদের কি পূর্ণ যুবতী বলা যায়? তারা তো কিশোরী অথবা বাচ্চা। কিশোরীদের বয়স উল্লেখ করে এই লোভ দেখানোর কারণ কী? অনেক মানসিক উন্মাদ যেমন বিয়ের জন্য কচি মেয়ে খোঁজে, এটাও কি তেমনই লোভ দেখানো?
হাদীসে আছে - খোদ মানুষ তো কোন ছাড়, আল্লাহর প্রধান ফেরেশতা জিব্রাইল নাকি এক হুরকে দেখে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। তখন এক হুর বললেন, "আমরা তাদের দাসী। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন রসুল মোহাম্মদের উম্মতের মনোরঞ্জনের জন্য।" হুরদের যৌন আকর্ষণ এমনই যে, স্বয়ং ফেরেশতাকেও বেহুঁশ হয়ে পড়ে যেতে হয়!
তো এমন বেহেশতের লোভ, এমনই রগরগে যৌনতার লোভ, সেখানে আরবের পুরুষদের (!) জান্নাতের লোভ দেখিয়ে জঙ্গি বানানো খুব কঠিন কিছু কি? এমনিতেই আরবদের নারী আর শরাবের লোভ বিখ্যাত। নারী আর মদ নিয়েই তাদের জীবন। সেখানে এমন জান্নাতের লোভ দেখালে তারা তো উন্মত্ত হবেই।
যে কুরান-হাদিসে এই রগরগে বর্ণনা আছে, সেই কুরান-হাদিস নিয়ে কেউ কথা বলে না। সবাই দোষ দেয় আমেরিকা, ইসরাইল আর বিশ্বমোড়লদের। আর বাম বিপ্লবীরা - পুঁজিবাদীদের। হাতের মধ্যে এমন মোক্ষম অস্ত্র থাকলে সেই অস্ত্রের ব্যবহার কে না করবে, বলুন?
আলকায়েদা ছিল, তালেবান ছিল, এখন আইএস। আইএস যাওয়ার পর অন্য কোনো জঙ্গি সংগঠন আসবেই। লিখে রাখুন এই কথাটি:
যতদিন এই বেহেশত, হুর আর যৌনতার লোভনীয় বর্ণনা আরবদের মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না, ততদিন মধ্যেপ্রাচ্যে জঙ্গিবাদ বন্ধ হবে না। যেহেতু কুরান-হাদিসের এই অংশ সংশোধন সম্ভব নয়, জান্নাত আর নারীর লোভ থাকবেই, তাই আরব মরু অঞ্চলে জঙ্গিবাদও চলতেই থাকবে। শুধু কখনও আলকায়েদা, কখনও তালেবান, কখনও লস্কর-ই-তৈয়বা, আবার কখনও আইএস। নামটাই পাল্টাবে শুধু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন