লিখেছেন ক্যাটম্যান
মুক্তচিন্তা চর্চা, প্রচার ও প্রসারের কারণে ধর্মান্ধ মৌলবাদী জঙ্গীগোষ্ঠীর নৃশংস হামলার শিকার হুমায়ুন আজাদ, রাজিব হায়দার, অভিজিৎ রায়, ওয়াশিকুর রহমান বাবু, অনন্ত বিজয় দাশ, নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় নিলয়, ফয়সল আরেফিন দীপন ও নাজিমুদ্দিন সামাদ সহ নিহত ও আহত সকল মুক্তচিন্তকের স্মরণে এই লেখাটি অপরিমেয় ভালোবাসার স্মারক স্বরূপ নিবেদন করছি।
এ ছাড়া আল-কুরআনে ঐশী বর্ণনার বিবেচনায় ভুল সর্বনাম ও ক্রিয়াপদ বিশিষ্ট বহু আয়াত বিদ্যমান; আল-কুরআনে বিন্যস্ত সূরাসমূহের প্রথম সূরা ‘সূরা ফাতিহা’ যার অন্যতম উদাহরণ। যে সূরাতে মুহম্মদ তার কল্পিত আল্লাহর প্রতি স্তুতি জ্ঞাপনপূর্বক কতিপয় প্রার্থনা নিবেদন করেছেন। অথচ স্বীয় আকাঙ্ক্ষা প্রকাশক উক্ত বাণীসমূহকেই আল্লাহ প্রদত্ত ঐশী বাণীরূপে আল-কুরআনের প্রথমে অন্তর্ভুক্ত করেছেন মুহম্মদ।
তবে মুহম্মদ তার আনীত আল-কুরআনে অজস্র ঐশী আয়াতের ভিড়ে নিজের দু'-একটি বাণী আল্লাহ প্রদত্ত ঐশী বাণীরূপে চালিয়ে দিয়েছেন, বিষয়টি এমন নয়। বস্তুত আল-কুরআনের ওই সব আয়াতের বর্ণনা-কৌশল ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় তা মুহম্মদি হাদিস হিসাবে সহজেই নির্ণেয়। আদপে আল-কুরআনে বর্ণিত একটি বাণীও ঐশী বাণী নয়। আল-কুরআনের সকল বাণী মূলত মুহম্মদের নিজস্ব বাণী। কারণ কল্পিত আল্লাহর ভূমিকায় ঐশী বাণী নাযিলের দায়িত্ব প্রতারক মুহম্মদকেই পালন করতে হয়েছে; যেমন ঐশী বাণী নাযিলের দায়িত্ব প্রতারক মূসা তার কল্পিত পরমেশ্বরের ভূমিকায় অতীতে পালন করেছেন। তাই হিব্রু বাইবেলের বর্ণনায় মূসার কল্পিত পরমেশ্বরকে যেমন মূসার আজ্ঞাবহ দাসের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়, তেমনি আল-কুরআনের বর্ণনায় মুহম্মদের কল্পিত আল্লাহকেও মুহম্মদের আজ্ঞাবহ দাসের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়।
এ কারণে মুহম্মদ নিজের মনগড়া বাণী দ্বারা সমগ্র আল-কুরআন প্রণয়ন করলেও সেই আল-কুরআনেই মুহম্মদের প্রতারণামূলক বাণীসমূহকে আল্লাহ প্রদত্ত ঐশী বাণীর স্বীকৃতি প্রদান করেছেন মুহম্মদের আজ্ঞাবহ দাস আল্লাহ। অর্থাৎ মুহম্মদ তার প্রতারণামূলক বাণীর সপক্ষে স্বীয় আজ্ঞাবহ দাস আল্লাহর নিকট থেকে ঐশী স্বীকৃতিজ্ঞাপক প্রতারণামূলক ঐশী সনদও আদায় করেছেন। আল-কুরআনে বর্ণিত সেই প্রতারণামূলক ঐশী সনদে যা ব্যক্ত হয়েছে তা নিম্নরূপ:
তারকারাজির শপথ যখন তা অস্তমিত হলো। তোমাদের বন্ধু পথভ্রষ্ট হয়নি বা বিপথগামীও হয়নি। সে নিজের খেয়ালখুশি মতো কথা বলে না। যা তার কাছে নাযিল করা হয় তা অহী ছাড়া আর কিছুই নয়। [সূরা আন নাজম: ১-৪ আয়াত]
উক্ত আয়াতসমূহের ভাষ্য এই যে, মুহম্মদ নিজের খেয়ালখুশি মতো কোনো কথা বলেন না; তিনি শুধু আল্লাহর খেয়ালখুশি মতো কথা বলেন। অর্থাৎ তিনি যা কিছু বলেন, তা শুধু আল্লাহর ইচ্ছাতেই বলেন। আল্লাহর ইচ্ছা ব্যতিরেকে ওনার মুখ দিয়ে কোনো কথা ব্যক্ত হয় না। তাই এক্ষেত্রে কথা বলার মুখটি মুহম্মদের হলেও ওই মুখে ব্যক্ত যাবতীয় কথাই আল্লাহর কথা। কারণ আল্লাহ যা কিছু বলতে চান, তা তার নিজের মুখে ব্যক্ত না করে মুহম্মদের মুখে ব্যক্ত করেন। এক্ষেত্রে মুহম্মদের মুখ আল্লাহর মুখ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। তাই তার মুখে যা কিছু ব্যক্ত হয়, তা আল্লাহর অহী ছাড়া আর কিছুই নয়। এই বিবেচনায় মুহম্মদের মুখনিঃসৃত সকল বাণী একান্ত আল্লাহর বাণী হিসাবে স্বীকৃত। অর্থাৎ আল-কুরআনের বাইরে মুহম্মদের হাদিসসমূহও আল্লাহ প্রদত্ত অহী। সাধু রীতিতে বলতে গেলে, ‘যাহা আল-কুরআনের বাণী, তাহাই মুহম্মদি হাদিস; তদ্রূপ যাহা মুহম্মদি হাদিস, তাহাই আল-কুরআনের বাণী।’
তাই আমাদের বিবেচনায় সমগ্র ‘আল-কুরআন’ মুহম্মদের মনগড়া বাণীর সংকলন হলেও উক্ত আয়াতসমূহের ব্যাখ্যানুযায়ী তা মুহম্মদের কল্পিত আল্লাহ প্রদত্ত মনগড়া বাণীর ঐশী সংকলন।
একইভাবে মুহম্মদের হাদিসসমূহ আল্লাহ প্রদত্ত অহী বলে স্বীকৃত হওয়ায় আমরা তা আল-কুরআনের বাণীর সদৃশ বাণী বিবেচনা করতে বাধ্য। তাই আমরা আমাদের আলোচনায় প্রামাণ্য উপাত্ত উপস্থাপনের প্রয়োজনে আল-কুরআনের বাণীর ন্যায় মুহম্মদি হাদিসের অবতারণা করব।
(চলবে)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন