লিখেছেন নাস্তিক ফিনিক্স
পশ্চিমবঙ্গে (ভারত) এখন ভোটের মরসুম। সন্ত্রাস ও নানাবিধ কারণে এখানে প্রায় দেড় মাস ধরে ভোট চলে। যদিও কে জিতবে, সেটা নির্ভর করে ২৭% সংখ্যালঘু (!) মুসলিমদের হাতে। মুসলিম ভোট যার দিকে, সেই জেতে। এমনকি বিরোধীদের পালে হাওয়া তখনই লাগে, যখন সংখ্যালঘু ভোট তাদের দিকে যেতে শুরু করে।
রাজনীতিতে কিভাবে মুসলিম ভোট প্রভাব ফেলে সেটা একটু বলবো। এক দীর্ঘস্থায়ী সরকার ছিল, সেই সরকার শেষ বেলায় ভোটের আগে মুখ ফসকে একটি সত্যি কথা বলে ফেলেছিল, "বর্ডার সংলগ্ন এলাকার মাদ্রাসাগুলো বাংলাদেশী জামাতের আখড়া হয়ে গেছে, এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।" কিন্তু ব্যবস্থাও কিছু হলো না, উপরন্তু পরের নির্বাচনে বর্ডার সংলগ্ন সমস্ত বিধানসভা বিপুল ভোটে হেরে গেল।
আরও একটু বলবো। বর্তমান সরকারের মুখ্যমন্ত্রী 'Islamic Studies' এ এম.এ। তিনি ভোটের আগে চলে গেলেন ভারতীয় একটি মডারেট জামাতি দলের সভায়। সেই মডারেট জামাতি দলের নেতা হলেন বাংলাদেশি জামাতের শিরদাঁড়া। Military Intelligence-এর ভাষায় যাকে বলে Local Support. এবার ব্যাখ্যা করবো 'ভোটব্যাংক' এর অর্থটা।
* পশ্চিমবঙ্গে অধিকাংশ মুসলিমই স্কুলের মুখ দেখেনি, দেখেছে মাদ্রাসার, তাই ইমাম কি হুকুম শর আঁখো পর। আর এই ইমাম সাহেবগুলিকে আগের রাজনৈতিক দল কিনে নিত। এখনকার সরকার 'ইমাম ভাতা' শুরু করেছে সরকারিভাবে। এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের এক মুক্তমনা মিরাতুন নাহার বলেছেন, 'ইমাম ভাতা লাগানো হয়েছে, মসজিদের মাইক কিনতে, কোনো উন্নয়নশীল কাজে নয়।'
* সাধারণ জ্ঞান ও শিক্ষার অভাবের জন্য অধিকাংশ মুসলিমই বাছবিচার করে ভোট দেয় না। যারা তাদের পেছনে তৈলমর্দন করবে, ভোট তাদেরই দেবে।
* ভারতের সংবিধান অনুযায়ী কোনও মৌলবাদী দল নির্বাচনে লড়তে পারবে না। এই নির্দেশকে কার্যত বূড়ো আঙুল দেখিয়ে সমস্ত মৌলবাদী দল নির্দেশিকা জারি করে যে কোন দলকে ভোট দেবেন।
পশ্চিমবঙ্গেও ব্যতিক্রম নেই। ফুরফুরা শরীফের পীরজাদা তাই ধর্মসভার নামে এক প্রকার রাজনৈতিক সভা করে বলে দিয়েছেন কোন দলকে ভোট দিতে হবে।
শেষ করবো একটি ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে। একটি Press Club-এর সদস্য হওয়ার দরুন এই ভোটের আগেই পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত এক সংবাদমাধ্যমের এক সাংবাদিক দাদার সাথে এক গোপন ডেরাতে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল, যে ডেরা থেকে ভোটের বাহুবলীরা অস্ত্রশস্ত্র কেনে।
ডেরাটি একটি বড় মফস্বলের মসজিদ। আর কিছু বলতে হবে?
পুনশ্চ: পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু মুসলিম বাদ দিয়ে আরো ৩% মানুষ আছে অন্য ধর্মের। কিন্তু স্বাধীনতার এত বছর পরেও তাদের নিয়ে 'ভোট ব্যাংক' বানানো গেল না। কোনও রাজনৈতিক দলই পারলো না। অথচ এই সব রাজনৈতিক দলগুলোই বলে, "২%-৩% ভোট সব কিছু উলটে-পালটে দিতে পারে।"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন