লিখেছেন পুতুল হক
৫১.
জীবনভর ইহুদি আর নারীকে নবী হেয় করে গেলেন, অভিসম্পাত করে গেলেন, শেষে ইহুদি নারীর হাতেই নবী প্রাণ হারালেন।
৫২.
আল্লাহতে বিশ্বাস করলে মুসলমান, না করলে মুসলমান না। ব্যাপারটা কঠিন কিছু নয়। আল্লাহ্ যদি বলতেন, "হে মানব, তোমরা তোমাদের অবস্থান থেকে শুধু বিশ্বাস করবে - আদি ও অনন্ত আমি আছি, থাকবো। আমি আল্লাহ্ তোমাদের সৃষ্টিকর্তা। তোমাদের উপাসনার কোনো প্রয়োজন আমার নেই। তোমরা শুধু আমাতে বিশ্বাস করবে, যে কোনো নামে আমাকে স্মরণ করবে। তোমাদের জন্য যা ভালো, তোমরা তা গ্রহন করবে। তোমাদের জন্য যা মন্দ, তোমরা তা বর্জন করবে। তোমরা সুখী হলেই আমার সুখ।" তাহলে কিন্তু ল্যাঠা চুকে যেত। আল্লাহ্ নামের মহান কারো এমনই হওয়া উচিত ছিল। মানুষের উপাসনার মুখাপেক্ষী কোনো স্রষ্টা হতে পারেন না। কিন্তু আল্লাহ্ তা করলেন না। তিনি বললেন, শুধু তাঁকে বিশ্বাস করলে হবে না, মোহাম্মদকেও বিশ্বাস করতে হবে। ঘুম থেকে উঠে আবার ঘুমানো পর্যন্ত প্রতি পদে পদে তাঁকে স্মরণ করতে হবে। তাঁর নামে পশু হত্যা করতে হবে, মানুষ হত্যা করতে হবে। তাঁর জন্য ঘর বানাতে হবে। তাঁর জন্য সিংহাসন বানাতে হবে। এভাবে আল্লাহ্ স্রস্টা হয়েও সৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লেন।
৫৩.
হাই স্কুলে ধর্ম ক্লাসে বিভিন্ন ধর্ম নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে হিন্দুদের হনুমান গড নিয়ে বলা শুরু হয়। সেখানে উপস্থিত ছিল একটি হিন্দু শিক্ষার্থী। হনুমান গডের কথায় সে খুব লজ্জিত হয়, প্রায় কেঁদে ফেলার অবস্থা। তাঁর বাসায় একটি ঐ গডের মূর্তি এবং অনেকগুলো ছবি আছে। বাড়ি ফিরে ঘোষণা দেয়, সে আর হনুমান গডের পূজা করবে না, সে আর হিন্দু থাকবে না। -- ইহা একটি সত্য ঘটনা। আসলে "আমি কী করছি" - সে বোধটুকু সজাগ থাকলেই যথেষ্ট।
৫৪.
পুলিশ যখন কিছুদিন পরপর জঙ্গি ধরে আনে তখন তাদের সাথে জিহাদি বই জব্দ করে। পড়ছে জিহাদি বই, হচ্ছে জঙ্গি - ব্যপারটা কেমন যেন! ডাক্তারী বই পড়ে লোকে ডাক্তার হয়, ইঞ্জিনিয়ারিং বই পড়ে লোকে ইঞ্জিনিয়ার হয় আর জিহাদি বই পড়ে লোকে জঙ্গি হয়। জিহাদি বইয়ে থাকে কোরআনের আয়াত, রাসুলুল্লাহর হাদিস। তার মানে কোরআনের আয়াত এবং রাসুলুল্লাহর হাদিস পড়ে লোকে জিহাদি হয়। জিহাদিকে আবার জঙ্গি বলা হয়। যারা কোরআন এবং হাদিস পড়ে, তারা সবাই জিহাদি হয় না; কিন্তু যারা জিহাদি হয়, তারা সবাই কোরআন এবং হাদিস পড়েই হয়। যে জিহাদি শরীরে বোমা বেঁধে নিজেকে উড়িয়ে দেয় সাথে আরো কিছু লোক, সে কিন্তু কোনো ভাড়াটে খুনি নয়। সে স্ব-ইচ্ছায়, সুস্থ মস্তিষ্কে ইসলাম ধর্মের নির্দেশ পালন করে মাত্র। ইসলামের সাথে জঙ্গিবাদ তথা জিহাদের কোনো সম্পর্ক নেই - কথাটা অনেকটা "জীবের সাথে প্রাণের কোনো সম্পর্ক নেই"-এর মতো। জিহাদের প্রাণ ইসলাম। যে কোরআন এবং হাদিস থেকে জিহাদি তৈরি হয়, সেসবকে না আটকিয়ে জিহাদি ধরে কী লাভ! ইসলামী জঙ্গিবাদের জন্য কেউ পেট্রো ডলারকে কেউ বা ইউএস ডলারকে দোষ দেয়। পেট্রো ডলার কিংবা ইউএস ডলারের কিন্তু ক্ষমতা নেই কোরআনের একটা আয়াত কিংবা রাসুলুল্লাহর হাদিস বদলাবে।
৫৫.
মাঝে মাঝে মনে হয় শুধু সুন্নতি দায়ে মন্দির ভাঙা হয় না। এর পেছনে থাকে পাকিস্তান ভেঙে ফেলার জন্য ভারতকে দায়ী করে চাপা আক্রোশ মেটানোর ইচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন