লিখেছেন গোলাপ
"যে মুহাম্মদ (সাঃ) কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।"
'হুদাইবিয়া সন্ধি-চুক্তি' সম্পন্ন করার পর স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর সঙ্গে উপস্থিত অনুসারীদের হতাশা ও মর্মবেদনা লাঘব করতে ও সমালোচনার জবাবে 'আল ফাতহ' নামের এক পূর্ণ সুরা রচনা করে তিনি এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে 'সুস্পষ্ট বিজয়' অর্জন করেছেন বলে যে-দাবিটি করেছেন (৪৮:১), তা কী কারণে সত্য নয়; এই সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষরের আগে বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীরা প্রায়শই যুদ্ধ-বিগ্রহে লিপ্ত হতেন, কিন্তু এই চুক্তি-স্বাক্ষরের পর সেই পরিস্থিতির অবসান হয় ও অবিশ্বাসী জনগণ নিরাপদে বসবাস করেন বলে যে-দাবিটি মুহাম্মদের মৃত্যু-পরবর্তী সময়ের ইসলাম-বিশ্বাসী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা তাঁদের লেখনী-বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে শতাব্দীর পর শতাব্দী যাবত প্রচার করে আসছেন, তা কী কারণে মিথ্যাচার; এই চুক্তি-স্বাক্ষরের কারণেইপরবর্তী দুই বছর আগের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি লোক ইসলামে দীক্ষিত হয়েছিলেন বলে যে দাবিটি ইসলাম-বিশ্বাসী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা গত ১৪০০ বছর ধরে নিরলস প্রচার করে আসছেন, তা কী কারণে সত্য নয় ও মুহাম্মদের এই সফলতার প্রকৃত কারণটি কী ছিল; এই চুক্তি স্বাক্ষরের মাত্র দেড়-দুই মাস পরে অমানুষিক নৃশংসতায় কাদের ওপর আগ্রাসী আক্রমণের মাধ্যমে মুহাম্মদ তাঁর হুদাইবিয়া যাত্রায় অংশগ্রহণকারী অনুসারীদের দেয়া 'লুটের মালের ওয়াদা” পূরণ করেছিলেন; ইত্যাদি বিষয়ের আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে। উল্লেখ্য, হুদাইবিয়া সন্ধি-পরবর্তী দুই বছরে এই যে আঠারটি হামলা, অর্থাৎ গড়ে প্রতি ৪০ দিনে একটি, এর প্রত্যেকটিই ছিল বিস্তীর্ণ অঞ্চলের অবিশ্বাসী জনপদের ওপর মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের আগ্রাসী হামলা। কেউ তাঁদেরকে আক্রমণ করেননি! বরাবরের মতই আক্রমণকারী দলটি সর্বদাই মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীরা, আর আক্রান্ত জনপদ-বাসী করেছেন তাঁদের জান ও মাল রক্ষার চেষ্টা!
হুদাইবিয়া সন্ধিচুক্তি ছিল মুসলমানদের জন্য এক “সুস্পষ্ট বিজয়", মুহাম্মদের এই দাবিটি প্রমাণ করার জন্য ইসলাম বিশ্বাসী পণ্ডিত ও অপণ্ডিতরা (অধিকাংশই না জেনে) আর যে-যুক্তিটির অবতারণা করেন, তা হলো মোটামুটি এ রকম:
‘হুদাইবিয়ায় মুহাম্মদ যে-চুক্তিটি স্বাক্ষর করেছিলেন, তা ছিল কুরাইশদের সঙ্গে, অন্যান্য অবিশ্বাসী জনপদবাসীদের সঙ্গে নয়। আল-যুহরীর উদ্ধৃতি সাপেক্ষে মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, আল-তাবারী, আল-ওয়াকিদি, ইবনে হিশাম প্রমুখ আদি মুসলিম ঐতিহাসিকরা এই সন্ধির পর "যুদ্ধ হয় রহিত, ---জনগণ নিরাপদে একে অপরের সাথে মিলিত হয়, --সত্যিই সেখানে বাইশ মাস যাবত শান্তি বজায় ছিল যতক্ষণে না তারা চুক্তি ভঙ্গ করে (পর্ব:১২৪)"ইত্যাদি যা উল্লেখ করেছেন, তা ছিল মুসলমান ও কুরাইশদের উদ্দেশে; অন্যান্য অবিশ্বাসীদের উদ্দেশে নয়। এই চুক্তির মাধ্যমে কুরাইশরা যেন অন্যান্য অবিশ্বাসীদের সঙ্গে মিলিত হয়ে মুসলমানদের আক্রমণ করতে না পারে, খন্দক যুদ্ধকালে যেমনটি তাঁরা করেছিলেন (পর্ব: ৭৭-৮৬), হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সেই ব্যবস্থাই করেছিলেন। এই সন্ধির কারণে হুযুরে পাক হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তাঁর অন্যান্য শত্রুদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পেরেছিলেন, তাঁর শক্তি বৃদ্ধি করার সুযোগ পেয়েছিলেন, যা পরবর্তীতে কুরাইশদের বিরুদ্ধে বিজয়ী হবার এক অন্যতম যুদ্ধকৌশল! হুদাইবিয়া সন্ধির গুরুত্ব এখানেই! তাই আল্লাহ পাক বলেছেন, "নিশ্চয় আমি আপনার জন্যে এমন একটা ফয়সালা করে দিয়েছি, যা সুস্পষ্ট(৪৮:১)।" হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হুদাইবিয়া সন্ধি-চুক্তির প্রত্যকেটি শর্তের প্রতি পূর্ণ বিশ্বস্ত ছিলেন, তাই কুরাইশরা মুসলমানদের ওপর আক্রমণের চেষ্টা থেকে ছিলেন বিরত।‘
আপাতদৃষ্টিতে এমন একটি যুক্তিকে যৌক্তিক বলেই মনে হয়! মুহাম্মদ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন কুরাইশদের সাথে, অতঃপর তিনি সেই চুক্তির শর্তগুলোর প্রতি ছিলেন পূর্ণ বিশ্বস্ত; এমত অবস্থায় মুহাম্মদ কুরাইশ ছাড়া অন্যান্য অবিশ্বাসী ইসলামের শত্রুদের শায়েস্তা করার জন্য যত কঠোরই হোন না কেন, তাঁদের ওপর যত আগ্রাসী হামলাই চালান না কেন, হুদাইবিয়া চুক্তির শর্ত অনুযায়ী কুরাইশদের কোনো নৈতিক অধিকারই ছিল না যে, তাঁরা একক বা সম্মিলিতভাবে মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ আক্রমণাত্মক ব্যবস্থা নেন! ব্যস! প্রমাণ হয়ে গেলো 'বিজয়' অর্জনে হুদাইবিয়া সন্ধির গুরুত্ব 'সুস্পষ্ট!'
ইসলামের ইতিহাস সম্বন্ধে স্বচ্ছ ধারণা না থাকলে এমন একটি চিত্তাকর্ষক (Impressive) যুক্তির মারপ্যাঁচে যে কোনো ব্যক্তিই বিভ্রান্ত হতে বাধ্য! এই যুক্তির ফাঁকটি কোথায় ও কী কারণে তা একটি 'সহি ইসলামী মিথ্যাচার', তা আমরা নিশ্চিতরূপেই জানতে পারি মুহাম্মদের স্বরচিত কুরান ও আদি-উৎসের মুসলিম ঐতিহাসিকদেরই রচিত সিরাত (মুহাম্মদের জীবনী-গ্রন্থ) ও হাদিসের আলোকে হুদাইবিয়া সন্ধি পরবর্তী মুহাম্মদের কর্মকাণ্ড পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণের মাধ্যমে। “The Devil is in the Detail (পর্ব ১১৩)!"
মুহাম্মদ ইবনে ইশাকের বর্ণনার পুনরারম্ভ (আল-তাবারী, আল-ওয়াকিদি ও ইবনে কাথিরের বর্ণনা, ইবনে ইশাকের বর্ণনারই অনুরূপ): [1] [2] [3] [4]
পূর্ব প্রকাশিতের (পর্ব: ১২৪) পর:
'এই সময় উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা বিন আবু মুয়াত দেশান্তরিত হয়ে আল্লাহর নবীর কাছে আসেন। উমারা ও আল-ওয়ালিদ নামের উকবার দুই পুত্র আল্লাহর নবীর কাছে আসেন ও হুদাইবিয়াই তাঁর ও কুরাইশদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সন্ধিচুক্তি মোতাবেক তাঁকে ফেরত দেওয়ার জন্য তাঁরা আল্লাহর নবীকে অনুরোধ করেন; কিন্তু তিনি তা করেন না। আল্লাহ তা নিষেধ করেছেন।
উরওয়া বিন আল-যুবায়েরের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমাকে আল-যুহরী যা বলেছেন তা হলো: "তিনি যখন ইবনে আবু হুনয়েদ নামের আল-ওয়ালিদ বিন আবু মালিকের এক বন্ধুর চিঠির জবাব লিখছিলেন, তখন আমি তাঁর কাছে আসি; সে তাঁর কাছে যা জানতে চেয়েছিল, তা হলো আল্লাহর এই বাণী:
[৬০:১০] –‘মুমিনগণ, যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে আগমন করে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ তাদের ঈমান সম্পর্কে সম্যক অবগত আছেন। যদি তোমরা জান যে, তারা ঈমানদার, তবে আর তাদেরকে কাফেরদের কাছে ফেরত পাঠিও না। এরা কাফেরদের জন্যে হালাল নয় এবং কাফেররা এদের জন্যে হালাল নয়। কাফেররা যা ব্যয় করেছে, তা তাদের দিয়ে দাও। তোমরা, এই নারীদেরকে প্রাপ্য মোহরানা দিয়ে বিবাহ করলে তোমাদের অপরাধ হবে না। তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না।তোমরা যা ব্যয় করেছ, তা চেয়ে নাও এবং তারাও চেয়ে নিবে যা তারা ব্যয় করেছে। এটা আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।’
উরওয়া বিন আল-যুবায়ের তার কাছে যা লিখেছিলেন তা হলো, "হুদাইবিয়ার দিনে আল্লাহর নবী কুরাইশদের সঙ্গে যে-চুক্তি করেছিলেন, তার এক শর্ত ছিল এই যে, যদি কোনো ব্যক্তি তার অভিভাবকদের অনুমতি ব্যতিরেকে মুহাম্মদের কাছে আসে, তবে তিনি তাকে তাঁদের কাছে ফেরত দেবেন। কিন্তু যখন মহিলারা দেশান্তরিত হয়ে আল্লাহর নবীর কাছে এসেছিল ও ইসলামে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, আল্লাহতাদেরকে মুশরিকদের কাছে ফেরত পাঠানোর অনুমতি অস্বীকার করে যদি তারা ইসলামের পরীক্ষায় পরীক্ষিত হয় ও যদি তারা জানে যে, তারা এসেছে শুধুমাত্র ইসলামের অভিপ্রায়ে; তার আদেশ এই যে, তাদের মহিলাদেরকে যদি তাদের কাছে ফেরত দেয়া না হয়, তবে যেন তাদেরকে তাদের মোহরানার (dowries) অর্থ ফেরত দেয়া হয়, যদি মুসলমানদের কোনো মহিলাকে তারা আটক রাখে, তবে তার মোহরানার অর্থ তারা মুসলমানদের কাছে ফেরত দেয়। ‘এটা আল্লাহর বিধান; তিনি তোমাদের মধ্যে ফয়সালা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ প্রজ্ঞাময়।"
তাই আল্লাহর নবী ঐ মহিলাটিকে ফেরত না দিয়ে ঐ লোকদের ফেরত পাঠান, আর তাদের কোনো মহিলাকে ফেরত না দিলে তার মোহরনার অর্থ তাদেরকে ফেরত দেয়ার ব্যাপারে আল্লাহ তাঁকে যে-নির্দেশ দিয়েছে, তা তাদেরকে জানান এবং বলেন যে, তারা তাদের প্রাপ্য অর্থ ফেরত দেবে, যদি তাদের পক্ষের লোকেরাও তাই করে। যদি এটি আল্লাহর হুকুম না হতো, তবে আল্লাহর নবী এই মহিলাটিকে ফেরত পাঠাতেন, যেমন তিনি পুরুষদের ফেরত পাঠিয়েছিলেন। আর এটি যদি হুদাইবিয়ার দিনে তাদের মধ্যে সন্ধিচুক্তি শর্তের অন্তর্ভুক্ত না হতো, তবে তিনি মহিলাটিকে ফেরত পাঠাতেন না, এবং তার মোহরানা অর্থও ফেরত দিতেন না; কারণ এই চুক্তির আগে কোনো মুসলমান মহিলা তাঁর কাছে এলে তিনি এমনটিই করতেন।’
আমি আল-যুহরীকে এই আয়াত সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করি:
[৬০:১১] - 'তোমাদের স্ত্রীদের মধ্যে যদি কেউ হাতছাড়া হয়ে কাফেরদের কাছে থেকে যায়, অতঃপর তোমরা সুযোগ পাও, তখন যাদের স্ত্রী হাতছাড়া হয়ে গেছে, তাদেরকে তাদের ব্যয়কৃত অর্থের সমপরিমাণ অর্থ প্রদান কর এবং আল্লাহকে ভয় কর, যার প্রতি তোমরা বিশ্বাস রাখ।'
তিনি বলেন, 'যদি তোমাদের পরিবারের কেউ অবিশ্বাসীদের কাছে যায় ও তাদের কোনো মহিলা তোমাদের কাছে না আসে, তোমরা তার জন্য তাদের কাছ থেকে সেই পরিমাণ অর্থ নিতে পারবে, যা তারা তোমাদের কাছ থেকে নিতে পারতো, অতঃপর তাদের কাছ থেকে যে কোনো লুণ্ঠিত সম্পদ (booty)আহরণের মাধ্যমে তার ক্ষতিপূরণ করো। (আল-ওয়াকিদি: 'যদি তোমাদের পরিবারের কেউ পলায়ন করে অবিশ্বাসীদের কাছে যায়; ও তাদের কোনো মহিলা তোমাদের কাছে আসে, তবে তোমাদের পাওনা মোহরানার অর্থ এই মহিলার পাওনা মোহরানার অর্থে পরিশোধ হবে। বিশ্বাসীরা আল্লাহর নির্দেশ পালন করে। মুশরিকদের কাছ থেকে মুসলমানদের কাছে আসা কোনো মহিলার মোহরানার অর্থ মুসলমানদের পরিশোধ করতে হবে, এমন দাবি মুসলমানদের কাছে জানাতে মুশরিকরা অস্বীকার করে।’)
যখন এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয়, "মুমিনগণ, যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে আগমন করে", এখান থেকে এই বাক্য পর্যন্ত, "তোমরা কাফের নারীদের সাথে দাম্পত্য সম্পর্ক বজায় রেখো না [৬০:১০]," উমর তাঁর স্ত্রী কুরাইবা বিনতে আবু উমাইয়া বিন আল-মুঘিরাকে তালাক দেন। তারপর মুয়াবিয়া বিন আবু সুফিয়ান তাঁকে বিবাহ করেন, তাঁরা দু'জনেই মুশরিক হিসাবে ছিলেন মক্কায়। উমর তাঁর উম্মে কুলসুম বিনতে জারওয়াল আল-খুযায়ি নামের আর এক স্ত্রীকেও তালাক দেন, যিনি ছিলেন উবায়েদুল্লাহ বিন উমরের মাতা; উমরের গোত্রের আবু জাহাম বিন হুদায়েফা বিন ঘানিম নামের এক লোক তাঁকে বিবাহ করেন, তাঁরা উভয়েই ছিলেন মুশরিক।'
- অনুবাদ, টাইটেল, ও [**] যোগ - লেখক।
ইমাম বুখারীর (৮১০-৮৭০ সাল) বর্ণনা: [5] [6]
এই প্রসঙ্গে ইমাম বুখারীর বর্ণনা (৫:৫৯:৪৯৬ ও ৩:৫০:৮৯১) ইবনে ইশাক, আল-তাবারী, আল-ওয়াকিদি ও ইবনে কাথিরের বর্ণনারই অনুরূপ, কিন্তু সেখানে ঘটনাপ্রবাহের ধারাবাহিকতা ও তার পূর্ণ বিবরণ অনুপস্থিত। মুহাম্মদের রচিত কুরান ও তাঁর অনুসারীদের রচিত 'হাদিস' গ্রন্থে মুহাম্মদের জীবনের ঘটনাপ্রবাহের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হয়নি ও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সম্পূর্ণ ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ একক কোনো নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদে লিপিবদ্ধ নেই। অন্যদিকে আদি উৎসের 'সিরাত' লেখকগণ মুহাম্মদের জীবনের ঘটনার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ একই অনুচ্ছেদে লিপিবদ্ধ করেছেন। সে-কারণেই ‘সিরাত'-এর সাহায্য ব্যতিরেকে, শুধুমাত্র কুরান ও হাদিস গ্রন্থ পড়ে মুহাম্মদের চরিত্র ও তাঁর মনস্তত্ত্বের স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া অত্যন্ত দুরূহ, প্রায় অসম্ভব!
>>> উরওয়া বিন আল-যুবায়ের বিন আল-আওয়াম (মৃত্যু ৭১৩ সাল) ছিলেন মুহাম্মদের মৃত্যু-পরবর্তী প্রথম প্রজন্মের একজন প্রথম সারির ইসলামী স্কলার। তাঁর পিতা আল-যুবায়ের বিন আল-আওয়াম (যিনি খায়বার হামলায় কিনানা বিন আল-রাবি-কে অমানুষিক নির্যাতন করেছিলেন) ছিলেন মুহাম্মদের ফুপাতো ভাই, মুহাম্মদের ফুপু সাফিয়া বিনতে আবদ আল-মুত্তালিবের পুত্র (পর্ব: ১২); তাঁর মাতা ছিলেন আবু বকর কন্যা আসমা বিনতে আবু বকর। তিনি তাঁর খালা আয়েশা বিনতে আবু বকরের সঙ্গে ছিলেন খুবই ঘনিষ্ঠ।
আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনার বিস্তারিত আলোচনা শুরুর আগে হুদাইবিয়া সন্ধি প্রাক্কালে সংঘটিত গুরুত্বপূর্ণ প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো স্মরণ করা যাক:
ক) হুদাইবিয়া সন্ধিচুক্তি আলোচনার শুরুতেইকুরাইশ প্রতিনিধি সুহায়েল বিন আমর অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় মুহাম্মদকে জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তাঁরা মুহাম্মদকে নবী হিসাবে স্বীকার করেন না ও "তাঁর আল্লাহ"-কে বিশ্বাস করেন না, যার বিস্তারিত আলোচনা 'চুক্তি প্রস্তুতি (পর্ব: ১১৮)' পর্বে করা হয়েছে।
খ) মুহাম্মদ কুরাইশদের সঙ্গে যে-লিখিত সন্ধিচুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিলেন, তার শর্তগুলোর বিস্তারিত আলোচনা 'চুক্তি স্বাক্ষর (পর্ব-১২২)'পর্বে করা হয়েছে। এই পর্বের আলোচনায় সেই চুক্তির প্রাসঙ্গিক শর্তগুলো হলো:
‘তারা আগামী দশ বছর যুদ্ধ বন্ধ রাখবে যাতে জনগণ সহিংসতা পরিহার করে নিরাপদে থাকতে পারে এই শর্তে যে:
১) “যদি কোনো ব্যক্তি তার অভিভাবকদের অনুমতি ব্যতিরেকে মুহাম্মদের কাছে আসে তবে তিনি তাকে তাঁদের কাছে ফেরত দেবেন।”
> একদম সোজা-সহজ বক্তব্য! এখানে কোনো 'যদি, তবে, কিন্তুর' অবকাশ নেই! লিঙ্গভেদে পুরুষ ও নারীদের মধ্যে কোনোরূপ তারতম্য করা হবে, তার কোন সামান্য আভাসও নেই! এ বিষয়ে কোনোরূপ আলোচনাও হয়নি।
২) “মুহাম্মদের পক্ষের কোনো ব্যক্তি যদি কুরাইশদের কাছে আসে, তবে কুরাইশরা তাকে তাঁর কাছে ফেরত দেবেননা”।
> সোজা-সহজ বক্তব্য! এই শর্তেরও কোথাও 'যদি, তবে, কিন্তুর' অবকাশ নেই, এ বিষয়ে কোনোরূপ আলোচনাও হয়নি।
৩) "তারা একে অপরের প্রতি শত্রুতা প্রদর্শন করবেন না।"
৪) "তারা একে অপরের প্রতি কোনোরূপ গোপন অভিসন্ধি বা প্রতারণার আশ্রয় নেবেন না।”’
>>> মুহাম্মদের স্বরচিত জবানবন্দি কুরান, তাঁর মৃত্যু-পরবর্তী প্রথম প্রজন্মের প্রথম শ্রেণীর ইসলামী স্কলার উরওয়া বিন আল-যুবায়ের ও দ্বিতীয় প্রজন্মের বিশিষ্ট মুহাদ্দিস আল-যুহরীর উদ্ধৃতি সাপেক্ষে মুহাম্মদ ইবনে ইশাক, আল-তাবারী, আল-ওয়াকিদি, ইবনে কাথির ও ইমাম বুখারীর ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আমরা যা জানতে পারি, তা হলো:
মুহাম্মদ কুরাইশদের সাথে হুদাইবিয়ায় সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষর করার পর উম্মে কুলসুম বিনতে উকবা বিন আবু মুয়াত নামের এক মহিলা তাঁর অভিভাবকদের অনুমতি ব্যতিরেকে মক্কা থেকে পালিয়ে মদিনায় মুহাম্মদের কাছে আসেন। খবরটি জানার পর উমারা বিন উকবা ও আল-ওয়ালিদ বিন উকবা নামের এই মহিলাটির দুই ভাই মদিনায় মুহাম্মদের কাছে এসে হুদাইবিয়া সন্ধিচুক্তির শর্ত অনুযায়ী তাঁদের এই বোনকে ফেরত দেয়ার অনুরোধ করেন।
কিন্তু চুক্তির শর্ত অনুযায়ী উম্মে কুলসুমকে মুহাম্মদ তাঁর ভাইদের কাছে ফেরত দেননি।
তাঁকে ফেরত না দিয়ে মুহাম্মদ কী করেছিলেন?
তিনি "তাঁর আল্লাহর নামে" শ্লোক রচনা করেছিলেন, সূরা আল মুমতাহিনার (চ্যাপ্টার ৬০) ১০ ও ১১নম্বর শ্লোক!
উরওয়া বিন আল-যুবায়ের ও আল-যুহরীর ব্যাখ্যার আলোকে মুহাম্মদের এই শ্লোক দু'টির সরল অর্থ হলো: কোনো ইমানদার নারী যদি মক্কা থেকে পালিয়ে মুহাম্মদের কাছে আসে ও তাকে পরীক্ষা করে যদি জানা যায় যে, সেই মহিলাটি সত্যিই ইমানদার, তবে মুহাম্মদ সেই মহিলাটিকে আর কুরাইশদের কাছে ফেরত পাঠাবেন না! যা ওপরে উল্লেখিত এক নম্বর শর্তের নগ্ন বরখেলাপ! কারণ শর্তটি ছিল, কুরাইশদের পক্ষের কোনো ব্যক্তি যদি মুহাম্মদের কাছে আসে, তবে মুহাম্মদ তাকে কুরাইশদের কাছে ফেরত দেবেন! এই শর্তের মধ্যে কোনো 'যদি, তবে, কিন্তুর' অবকাশ নেই!
তার পরিবর্তে মুহাম্মদ কী করবেন?
তার পরিবর্তে মুহাম্মদ মহিলাটির কুরাইশ স্বামী বা পরিবারের কাছে অর্থ পাঠাবেন!
কী পরিমাণ অর্থ?
ঐ পরিমাণ অর্থ, যা মহিলাটির কুরাইশ স্বামী বা পরিবার তাঁর জন্য ব্যয় করেছেন। কিন্তু, এখানে একটি "কিন্তু শর্ত" মুহাম্মদ জুড়ে দিয়েছেন!
কী সেই "কিন্তু?"
শর্ত হলো কুরাইশদেরও একই নিয়ম পালন করতে হবে! অর্থাৎ যদি মুসলমানদের কোনো মহিলা মক্কায় কুরাইশদের কাছে পালিয়ে যায়, তবে সেই মহিলাটির পেছনে তার মুসলমান স্বামী বা পরিবার যে অর্থ ব্যয় করেছেন, কুরাইশদেরকেও তা ফেরত দিতে হবে! যা ওপরে উল্লেখিত দুই নম্বর শর্তের নগ্ন বরখেলাপ! কারণ শর্তটি ছিল, মুহাম্মদের পক্ষের কোনো ব্যক্তি যদি কুরাইশদের কাছে আসে, তবে কুরাইশরা তাকে মুহাম্মদের কাছে ফেরত দেবেন না! এই শর্তের মধ্যে কোনো 'যদি, তবে, কিন্তুর' অবকাশ ছিল না!
শুধু তাইই নয়!
উরওয়া বিন আল-যুবায়ের মুহাম্মদের এই "৬০:১০" বক্তব্যের যে-ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা হলো, যদি কুরাইশরা মুসলমানদেরকে সেই অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকার করে, তবে যখনই সুযোগ হয়, তখনই কুরাইশদের মালামাল লুণ্ঠন করে তা উশুল করা যাবে!
>>> আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় যা স্পষ্ট তা হলো, এই ঘটনায় মুহাম্মদ হুদাইবিয়া সন্ধিচুক্তির কমপক্ষে চারটি শর্ত ভঙ্গ করেছিলেন! সেগুলো হলো:
১) শর্ত ছিল, “যদি কোন ব্যক্তি তার অভিভাবকদের অনুমতি ব্যতিরেকে মুহাম্মদের কাছে আসে তবে তিনি তাকে তাঁদের কাছে ফেরত দেবেন”
>> উম্মে কুলসুমকে মক্কায় ফেরত না পাঠিয়ে মুহাম্মদ এই শর্ত ভঙ্গ করেছিলেন। কারণ ঐ শর্তের কোথাও নারী বা পুরুষের কোনো উল্লেখ ছিল না।
২)শর্ত ছিল, “মুহাম্মদের পক্ষের কোন ব্যক্তি যদি কুরাইশদের কাছে আসে তবে কুরাইশরা তাকে তাঁর কাছে ফেরত দেবেন না”
>> মুহাম্মদ এই সহজ-সরল শর্তের মধ্যে "নতুন" শর্ত যোগ করে শর্ত ভঙ্গ করেছিলেন।
৩)শর্ত ছিল, “তারা একে অপরের প্রতি শত্রুতা প্রদর্শন করবেন না”
>> কুরাইশদের কাছে প্রতিশ্রুত চুক্তি ভঙ্গ করে মুহাম্মদ কুরাইশদের সাথে নতুন করে শত্রুতা শুরু করেছিলেন, কিংবা তা বৃদ্ধি করেছিলেন। মুহাম্মদের এই আচরণে কুরাইশদের খুশি হওয়ার কোনো কারণ নেই!
৪) শর্ত ছিল, "তারা কোনোরূপ গোপন অভিসন্ধি বা প্রতারণার আশ্রয় নেবেন না।”
>> "যে আল্লাহকে" কুরাইশরা বিশ্বাসই করেন না, উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে সেই আল্লাহর নামে শ্লোক রচনা করে চুক্তিভঙ্গ করা নিঃসন্দেহে অভিসন্ধিমূলক ও প্রতারণা! কুরাইশরা কেন তা মেনে নেবেন? যে মুহাম্মদকে কুরাইশরা নবী হিসাবে স্বীকারই করেন না, সেই মুহাম্মাদের ওহী নাজিল কিচ্ছা কুরাইশরা কেন বিশ্বাস করবেন?
কুরাইশরা মুহাম্মদকে জানতেন এক মিথ্যাবাদী, প্রতারক ও ভণ্ড রূপে (পর্ব: ১৮); এই ঘটনায়মুহাম্মদ তাঁর "আল্লাহর নামে" ওহী নাজিল করে তাঁদের সাথে প্রতিশ্রুত শর্ত ভঙ্গ করে, নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে কুরাইশদেরকে তা মেনে নিতে বাধ্য করার চেষ্টা করে তাঁদের জানা তাঁর সেই চরিত্রেরই প্রমাণ হাজির করেছিলেন। আর তাঁরা যদি তা মেনে না নেন, তবে 'যখনই সুযোগ পাওয়া যাবে, তখনই তাঁদের মালামাল লুণ্ঠনকরে তাঁর সেই আরোপিত শর্ত উশুল করে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মুহাম্মদ তাঁদের জানা তাঁর সেই চরিত্রেরই নগ্ন বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন।
'মুহাম্মদ হুদাইবিয়া সন্ধিচুক্তির শর্তগুলোর প্রতি পূর্ণ বিশ্বস্ত ছিলেন, তাই চুক্তির শর্ত অনুযায়ী মুহাম্মদ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে কোনোরূপ আক্রমণাত্মক ব্যবস্থা নেয়ার কোনো নৈতিক অধিকারই কুরাইশদের ছিল না,' এমন দাবির কোনো ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই। এমন দাবি অসত্য ও তা ইসলামের ইতিহাসের হাজারো মিথ্যাচারের একটি!
ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে মূল ইংরেজি অনুবাদের অংশটিও সংযুক্ত করছি।
The narrative of Muhammad Ibne Ishaq: [1] [2] [3] [4]
‘Umm Kulthum d. 'Uqba b. Abu Mu'ayt migrated to the apostle during this period. Her two brothers 'Umara and al-Walid sons of 'Uqba came and asked the apostle to return her to them in accordance with the agreement between him and Quraysh at Hudaybiya, but he would not. God forbade it.
Al-Zuhri from 'Urwa b. al-Zubayr told me: I came in to him as he was writing a letter to Ibn Abu Hunayda, the friend of al-Walid b. Abdu'l-Malik who had written to ask him about the word of God: 'O you who believe, when believing women come to you as emigrants test them. God knows best about their faith. If you know that they are believers do not send them back to the unbelievers. They are not lawful to them nor vice versa. And give them (the unbelievers) what they have spent on them. It is no sin for you to marry them when you have given them their dues, and hold not to the ties of unbelieving women'. Ask for what you have spent and let them ask for what they have spent. That is the judgement of Allah who judges between you. God is a knower, wise.'
'Urwa b. al-Zubayr wrote to him: The apostle made peace with Quraysh on the day of al-Hudaybiya on condition that he should return to them those who came without the permission of their guardians. But when women migrated to the apostle and to Islam God refused to allow them to be returned to the polytheists if they had been tested by the test of Islam, and they knew that they came only out of desire for Islam, and He ordered that their dowries should be returned to Quraysh if their women were withheld from them if they returned to the Muslims the dowries of the women they had withheld from them. 'That is the judgement of God which He judges between you, and Allah is knowing, wise.' So the apostle withheld the women and returned the men, and he asked what God ordered him to ask of the dowries of the women who were withheld from them, and that they should return what was due if the other side did the same. Had it not been for this judgement of God's the apostle would have returned the women as he returned the men. And had it not been for the armistice and covenant between them on the day of al-Hudaybiya he would have kept the women and not returned the dowries, for that is what he used to do with the Muslim women who came to him before the covenant.
I asked al-Zuhri about this passage: 'And if any of your wives have gone to the unbelievers and you have your turn of triumph, then give those whose wives have gone the like of what they spent, and fear Allah in whom you believe.' He said, If one of you loses his family to the unbelievers and a woman does not come to you you may take for her the like of what they take from you, then compensate them from any booty that you secure. (Al-Waqidi: ‘If one of his family escapes to the disbeleivers; and if a woman comes to you from them, you gain and reimburse from what you gain from the mahr of the woman who come to you. The beleivers obeyed the law of God. The polytheists refuse to confirm what was due to the polytheist from the Muslim, the mahr of those who emigrated from the polytheist’s wives.’)-
(চলবে)
[কুরানের উদ্ধৃতি সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হারাম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা থেকে নেয়া, অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর। কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট ইংরেজি অনুবাদকারীর ও চৌত্রিশ-টি বিভিন্ন ভাষায় পাশাপাশি অনুবাদ এখানে।]
তথ্যসূত্র ও পাদটীকা:
[1] “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৫০৯-৫১০ http://www.justislam.co.uk/images/Ibn%20Ishaq%20-%20Sirat%20Rasul%20Allah.pdf
[2] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮, ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৫৩-১৫৫৪
[3] অনুরূপ বর্ণনা (Parallel): “কিতাব আল-মাগাজি”- লেখক: আল-ওয়াকিদি (৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ), ed. Marsden Jones, লন্ডন ১৯৬৬; ভলুম ২, পৃষ্ঠা ৬২৯-৬৩৩ http://www.britannica.com/biography/al-Waqidi
ইংরেজি অনুবাদ: Rizwi Faizer, Amal Ismail and Abdul Kader Tayob; ISBN: 978-0-415-86485-5 (pbk); পৃষ্ঠা ৩১০-৩১১
[4] অনুরূপ বর্ণনা -ইবনে কাথিরের কুরান তফসির: http://www.qtafsir.com/index.php?option=com_content&task=view&id=1533&Itemid=116
[5] সহি বুখারী: ভলিউম ৫, বই ৫৯, নম্বর ৪৯৬
(বড় হাদিস, এই পর্বের প্রাসঙ্গিক অংশ)
The believing women Emigrants came (to Medina) and Um Kulthum, the daughter of 'Uqba bin Abi Mu'ait was one of those who came to Allah's Apostle and she was an adult at that time. Her relatives came, asking Allah's Apostle to return her to them, and in this connection, Allah revealed the Verses dealing with the believing (women). 'Aisha said, "Allah's Apostle used to test all the believing women who migrated to him, with the following Verse: "O Prophet! When the believing Women come to you, to give the pledge of allegiance to you." (60.12) ----
http://www.hadithcollection.com/sahihbukhari/92--sp-608/5560-sahih-bukhari-volume-005-book-059-hadith-number-496.html
http://www.hadithcollection.com/sahihbukhari/92--sp-608/5560-sahih-bukhari-volume-005-book-059-hadith-number-496.html
[6] অনুরূপ বর্ণনা- সহি বুখারী: ভলিউম ৩, বই ৫০, নম্বর ৮৯১
অনেক বড় হাদিস, এই পর্বের প্রাসঙ্গিক অংশ:
‘---Then some believing women came (to the Prophet); and Allah revealed the following Divine Verses: "O you who believe, when the believing women come to you as emigrants examine them..." (60.10) Umar then divorced two wives of his who were infidels. Later on Muawiya bin Abu Sufyan married one of them, and Safwan bin Umaya married the other. -------
Narrated Az-Zuhri: Urwa said, "'Aisha told me that Allah's Apostle used to examine the women emigrants. We have been told also that when Allah revealed the order that the Muslims should return to the pagans what they had spent on their wives who emigrated (after embracing Islam) and that the Muslims should not keep unbelieving women as their wives, 'Umar divorced two of his wives, Qariba, the daughter of Abu Urhaiya and the daughter of Jarwal Al-Khuza'i. Later on Mu'awlya married Qariba and Abu Jahm married the other." When the pagans refused to pay what the Muslims had spent on their wives, Allah revealed: "And if any of your wives have gone from you to the unbelievers and you have an accession (By the coming over of a woman from the other side) (Then pay to those whose wives have gone) The equivalent of what they had spent (On their Mahr)." (60.11). ---- So, Allah ordered that the Muslim whose wife, has gone, should be given, as a compensation of the Mahr he had given to his wife, from the Mahr of the wives of the pagans who had emigrated deserting their husbands. We do not know any of the women emigrants who deserted Islam after embracing it.
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন