লিখেছেন নরমপন্থী
মনে পড়ে, একটা সময়ে "আল্লাহর একটা অলৌকিক ঘটনা" ধার্মিক মহলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খুব প্রচার পেয়েছিল। বিষয়টা হল - সুনামির টানে যখন চারপাশের সব কিছু ভেসে গিয়েছিল, তারপরও বেশ কিছু মসজিদ দণ্ডায়মান ছিল। এই দৃশ্য দেখার পর মমিনবান্দারা সুভানাল্লাহ-সুভানালাহর সুনামি বইয়ে দিলো।
মনোবিজ্ঞানের প্রেক্ষাপটে "কনফার্মেশন বায়াস"-এর বিষয়টা কমবেশি সবার জানা । তবে আমার মেজাজ খারাপ হলো অন্য কারণে। আমার কথা হল - চারপাশের দুর্বল কাঠামোর ঘরবাড়ির মাঝে মাঝখানে মসজিদগুলো শক্ত ভিত্তিতে বানানো হলো কীভাবে? এই "শক্তিমত্তার" কারণ, খুব সম্ভবত, মসজিদ বানানোর সময় মসজিদগুলোর চারপাশের মানুষেদের থেকে অর্থ চুষে খাবার ক্ষমতার ভেতরে নিহিত।
আমার পরিচিত এক ব্যক্তি সমাজকর্ম করেন গ্রামের লোকজনকে একত্র করে সবার কাছ থেকে টাকা তুলে। ভদ্রলোক একটা বয়সের পর ধর্মকর্মেও মেতে উঠেছিলেন। প্রাথমিকভাবে তিনি কিছু মসজিদ উন্নয়ন এবং নির্মাণ জাতীয় কাজে হাত দিলেন। দেখা গেল, এই উদ্দেশ্যে তার দানের অর্থ সংগ্রহে তেমন বেগ পেতে হয় না। একবার এক হুজুর বলেছিলেন, "একবার যদি মসজিদে টাকা দেন, কেয়ামত পর্যন্ত সোয়াব পাইয়া যাবেন - এমনকি মৃত্যুর পরেও।" আর তাই রাস্তার মোড়ে, জুম্মায় জুম্মায়, বয়ানে বয়ানে টাকা উঠে আসে।
একবার ভদ্রলোক দেখলেন, তার এলাকায় একটা কলেজ নির্মাণ করা দরকার। ভেবেছিলেন, হয়ত সেই একই গতিতে দেশ-বিদেশ থেকে টাকা উঠে আসবে। কিন্তু দেখা গেল - না। যে শিক্ষার ওপরে দেশের ভবিষ্যত নির্ভর করে, সেই খাতে অর্থ ব্যয় করার প্রতি মানুষের আগ্রহের কমতি তাঁকে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্যে ফেলে দিলো।
কোন মমিন ব্যক্তি যদি অন্যায়ভাবে কিছু অর্থ উপার্জন করে, তখন মনের ভেতরের খচখচানি দূর করবার জন্য তার কিছু অংশ মসজিদে দান করে দিয়ে বা দিব্যি হজ ককরে আসতে পারে।
আমার এক কাজিন একবার বলেছিল, "যদি দেখ, এলাকায় নতুন মসজিদ উঠসে বা পুরনো মসজিদটা দ্রুত জাঁকজমকপূর্ণ হয়ে উঠেছে, তাহলে বুঝবে, এলাকায় অপরাধ বেড়ে গেছে।"
ঢাকা - মসজিদের নগরী। ইহা হইতে আমরা কী বুঝিলাম?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন