আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬

কোরআন যেভাবে অবতীর্ণ: মক্কা অধ্যায় - গোপন প্রচারের তিন বছর (পর্ব ০৩)

লিখেছেন নরসুন্দর মানুষ

{সূরা আলাকের (৯৬) প্রথম ৫ আয়াত প্রকাশের পর; একটানা প্রায় দুইমাস আয়াত প্রকাশকালীন বিরতি ছিল, একাধারে ফুফু এবং স্ত্রী খাদিজা, সাথে খাদিজার ভাই ওয়ারাকা ইবনে নওফলের মানসিক সহযোগীতায় মুহাম্মদ কবির বদলে নবীতে বদলে যান; এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে নবী মুহাম্মদ আয়াত প্রকাশ করতে থাকেন। বিভিন্ন পরিবেশ এবং পরিস্থিতি মুহাম্মদের ভেতর ভিন্ন ভিন্ন ধরণের মনোবৃত্তির জন্ম দেয়; এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে ক্রমাগত আয়াত প্রকাশ হতে থাকে।

একজন কবি যেভাবে পথ চলতে চলতে অবচেতনে তার সৃষ্ট কবিতার লাইন খুঁজে পান; অথবা প্রকৃতি বা প্রেমিকা যেভাবে তাঁকে লেখার ইন্ধন দেয়, মুহাম্মদও তার ব্যতিক্রম ছিলেন না; কেবলমাত্র প্রেমিকার স্থলে তার নবদীক্ষিত অনুসারীদের প্রশ্ন এবং আল্লাহ্ ও কেয়ামত সম্পর্কে মুহাম্মদের দৃষ্টিভঙ্গী জ্রিবাইল নামক কল্পনার বার্তাবাহকের সাহায্যে আয়াত হিসাবে অবচেতনে জমা হতে থাকে। একজন কবি যেভাবে মাথার ভেতর চলতে থাকা কবিতার লাইন কাগজ কলমে প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত যন্ত্রণায় ভোগেন, মুহাম্মদও তার বাইরে ছিলেন না; এর সাথে যুক্ত হয় পাঁচ বছর বয়স থেকে ফিট হওয়া বা জ্ঞান হারানোর রোগের সংমিশ্রণ। 

হাদিসওে ওপরের বক্তব্যের প্রমাণ মেলে:

উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন: হারিস ইব্‌নু হিশাম (রাঃ) আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আপনার নিকট ওয়াহী কিরূপে আসে?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ [কোন কোন সময় তা ঘন্টা বাজার মত আমার নিকট আসে। আর এটি-ই আমার উপর সবচেয়ে বেদনাদায়ক হয় এবং তা শেষ হতেই মালাক (ফেরেশতা) যা বলেন তা আমি মুখস্ত করে নিই, আবার কখনো মালাক মানুষের রূপ ধারণ করে আমার সাথে কথা বলেন। তিনি যা বলেন আমি তা মুখস্ত করে নিই।] ‘আয়িশা (রাঃ) বলেন, আমি তীব্র শীতের সময় ওয়াহী নাযিলরত অবস্থায় তাঁকে দেখেছি। ওয়াহী শেষ হলেই তাঁর ললাট হতে ঘাম ঝরে পড়ত। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ২, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস, তাওহীদ পাবলিকেশন্স।)

উম্মুল মু’মিনীন ‘আয়িশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন: তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নিকট সর্বপ্রথম যে ওয়াহী আসে, তা ছিল নিদ্রাবস্থায় বাস্তব স্বপ্নরূপে। যে স্বপ্নই তিনি দেখতেন তা একেবারে প্রভাতের আলোর ন্যায় প্রকাশিত হতো। অতঃপর তাঁর নিকট নির্জনতা পছন্দনীয় হয়ে দাঁড়ায় এবং তিনি ‘হেরা’র গুহায় নির্জনে অবস্থান করতেন। আপন পরিবারের নিকট ফিরে এসে কিছু খাদ্যসামগ্রী সঙ্গে নিয়ে যাওয়ার পূর্বে- এভাবে সেখানে তিনি এক নাগাড়ে বেশ কয়েক দিন ‘ইবাদাতে মগ্ন থাকতেন। অতঃপর খাদীজা (রাঃ)-এর নিকট ফিরে এসে আবার একই সময়ের জন্য কিছু খাদ্যদ্রব্য নিয়ে যেতেন। এভাবে ‘হেরা’ গুহায় অবস্থানকালে তাঁর নিকট ওয়াহী আসলো। তাঁর নিকট ফেরেশতা এসে বললো, ‘পাঠ করুন।’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ [“আমি বললাম, ‘আমি পড়তে জানি না।] তিনি (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ অতঃপর সে আমাকে জড়িয়ে ধরে এমন ভাবে চাপ দিলো যে, আমার খুব কষ্ট হলো। অতঃপর সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো, ‘পাঠ করুন।’ আমি বললামঃ আমি তো পড়তে জানি না।’ সে দ্বিতীয় বার আমাকে জড়িয়ে ধরে এমনভাবে চাপ দিলো যে, আমার খুব কষ্ট হলো। অতঃপর সে আমাকে ছেড়ে দিয়ে বললো, ‘পাঠ করুন।’ আমি উত্তর দিলাম, ‘আমি তো পড়তে জানি না।’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন, অতঃপর তৃতীয়বারে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে চাপ দিলেন। তারপর ছেড়ে দিয়ে বললেন, “পাঠ করুন আপনার রবের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন। যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত পিন্ড থেকে, পাঠ করুন, আর আপনার রব অতিশয় দয়ালু”- (সূরা আলাক্ব ৯৬/১-৩); অতঃপর এ আয়াত নিয়ে আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)- প্রত্যাবর্তন করলেন। তাঁর হৃদয় তখন কাঁপছিল। তিনি খাদীজা বিন্‌তু খুওয়ায়লিদের নিকট এসে বললেন, ‘আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর’, ‘আমাকে চাদর দ্বারা আবৃত কর।’ তাঁরা তাঁকে চাদর দ্বারা আবৃত করলেন। এমনকি তাঁর শংকা দূর হলো। তখন তিনি খাদীজা (রাঃ) এর নিকট ঘটনাবৃত্তান্ত জানিয়ে তাঁকে বললেন, আমি আমার নিজেকে নিয়ে শংকা বোধ করছি। খাদীজা (রাঃ) বললেন, আল্লাহর কসম, কখনই নয়। আল্লাহ আপনাকে কখনো লাঞ্ছিত করবেন না। আপনি তো আত্মীয়–স্বজনের সঙ্গে সদাচরণ করেন, অসহায় দুস্থদের দায়িত্ব বহন করেন, নিঃস্বকে সহযোগিতা করেন, মেহমানের আপ্যায়ন করেন এবং হক পথের দুর্দশাগ্রস্থকে সাহায্য করেন। অতঃপর তাঁকে নিয়ে খাদীজা (রাঃ) তাঁর চাচাত ভাই ওয়ারাকাহ ইব্‌নু নাওফাল ইব্‌নু ‘আবদুল আসাদ ইব্‌নু ‘আবদুল ‘উযযাহ’র নিকট গেলেন, যিনি অন্ধকার যুগে ‘ঈসায়ী ধর্ম গ্রহন করেছিলেন। যিনি ইবরানী ভাষায় লিখতে পারতেন এবং আল্লাহর তাওফীক অনুযায়ী ইবরানী ভাষায় ইনজীল হতে ভাষান্তর করতেন। তিনি ছিলেন অতি বৃদ্ধ এবং অন্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। খাদীজা (রাঃ) তাঁকে বললেন, ‘হে চাচাত ভাই! আপনার ভাতিজার কথা শুনুন।’ ওয়ারাকাহ তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ভাতিজা! তুমি কী দেখ?’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যা দেখেছিলেন, সবই বর্ণনা করলেন। তখন ওয়ারাকাহ তাঁকে বললেন, এটা সেই বার্তাবাহক যাকে আল্লাহ মূসা (‘আঃ)- এর নিকট পাঠিয়েছিলেন। আফসোস! আমি যদি সেদিন যুবক থাকতাম। আফসোস ! আমি যদি সেদিন জীবিত থাকতাম, যেদিন তোমার কওম তোমাকে বহিষ্কার করবে।’ আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, [‘তারা কি আমাকে বের করে দেবে?’] তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, তুমি যা নিয়ে এসেছো অনুরূপ (ওয়াহী) কিছু যিনিই নিয়ে এসেছেন তাঁর সঙ্গেই বৈরিতাপূর্ণ আচরণ করা হয়েছে। সেদিন যদি আমি থাকি, তবে তোমাকে জোরালোভাবে সাহায্য করব। এর কিছুদিন পর ওয়ারাকাহ (‘আঃ) ইন্তিকাল করেন। আর ওয়াহীর বিরতি ঘটে। (সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৩, হাদিসের মান: সহিহ হাদিস, তাওহীদ পাবলিকেশন্স।)

নবদীক্ষিত অনুসারী ও মক্কাবাসীদের আগ্রহ প্রকাশের সাথে সাথে আয়াতের দৈর্ঘ্য বাড়তে থাকে এবং কোরআনের আয়াত মক্কার দ্বিতীয় অধ্যায়ে প্রশ্ন-উত্তর খেলায় পরিণত হয়; মুহাম্মদের আয়াত প্রকাশের এই ধারাবাহিকতার আসল মজা শুরু হয় গোপন প্রচারের তিন বছরের শেষে ১১১ নং সূরা আল লাহাব (আল মাসদ) প্রকাশের সময় থেকে। বিস্তারিত জানতে এই ধারাবাহিকের সঙ্গেই থাকুন।

ধর্মকারীর বন্ধুদের জন্য, কোরআন অবতীর্ণ হবার ধারাবাহিকতা অনুসারে প্রকাশের আজ ৩য় পর্ব; এই পর্বেও থাকছে ধারাবহিক ভাবে ছয় অংশ। অনুবাদের ভাষা ৫০ টির বেশি বাংলা/ইংরেজি অনুবাদ অনুসারে নিজস্ব।}

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ১৩ম প্রকাশ; সূরা আল বুরুজ (৮৫) (নক্ষত্রপুঞ্জ) ২২ আয়াত:
১. শপথ গ্রহ-নক্ষত্র শোভিত আকাশের,
২. এবং প্রতিশ্রুত দিবসের,
৩. এবং সেই দিবসের, যে উপস্থিত হয় ও যাতে উপস্থিত হয়
৪. অভিশপ্ত হয়েছে গর্ত ওয়ালারা অর্থাৎ,
৫. অনেক ইন্ধনের অগ্নিসংযোগকারীরা;
৬. যখন তারা তার কিনারায় বসেছিল।
৭. এবং তারা বিশ্বাসীদের সাথে যা করেছিল, তা নিরীক্ষণ করছিল।
৮. তারা তাদেরকে শাস্তি দিয়েছিল শুধু এ কারণে যে, তারা প্রশংসিত, পরাক্রান্ত আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছিল,
৯. যিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের ক্ষমতার মালিক, আল্লাহর সামনে রয়েছে সবকিছু।
১০. যারা মুমিন পুরুষ ও নারীকে নিপীড়ন করেছে, অতঃপর তওবা করেনি, তাদের জন্যে আছে জাহান্নামের শাস্তি, আর আছে দহন যন্ত্রণা,
১১. যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদের জন্যে আছে জান্নাত, যার তলদেশে প্রবাহিত হয় নির্ঝরিণীসমূহ। এটাই মহাসাফল্য।
১২. নিশ্চয় তোমার পালনকর্তার আক্রমণ অত্যন্ত কঠিন।
১৩. তিনিই প্রথমবার অস্তিত্ব দান করেন এবং পুনরায় জীবিত করেন।
১৪. তিনি ক্ষমাশীল বন্ধু;
১৫. মহান আরশের অধিকারী।
১৬. তিনি যা চান, তাই করেন।
১৭. তোমর কাছে (হে মুহাম্মদ) সৈন্যবাহিনীর ইতিবৃত্ত পৌঁছেছে কি?
১৮. ফেরাউনের এবং সামুদের? 
১৯. বরং যারা কাফের, তারা মিথ্যারোপে রত আছে।
২০. আল্লাহ তাদেরকে পশ্চাৎদেশ থেকে পরিবেষ্টন করে রেখেছেন।
২১. বরং এটা মহান কোরআন,
২২. লওহে মাহফুযে লিপিবদ্ধ।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ১৪ম প্রকাশ; সূরা আত তাকভীর (৮১) (গুটিয়ে নেওয়া) ২৯ আয়াত:
১. যখন সূর্য আলোহীন হয়ে যাবে,
২. যখন নক্ষত্র মলিন হয়ে যাবে,
৩. যখন পর্বতমালা অপসারিত হবে,
৪. যখন দশ মাসের গর্ভবতী উষ্ট্রীসমূহ উপেক্ষিত হবে;
৫. যখন বন্য পশুরা একত্রিত হয়ে যাবে,
৬. যখন সমুদ্রকে উত্তাল করে তোলা হবে,
৭. যখন আত্মাসমূহকে যুগল করা হবে,
৮. যখন জীবন্ত প্রোথিত কন্যাকে জিজ্ঞেস করা হবে,
৯. কী অপরাধে তাকে হত্য করা হল?
১০. যখন আমলনামা খোলা হবে,
১১. যখন আকাশের আবরণ অপসারিত হবে,
১২. যখন জাহান্নামের অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করা হবে
১৩. এবং যখন জান্নাত সন্নিকটবর্তী হবে,
১৪. তখন প্রত্যেকেই জেনে নেবে সে কী উপস্থিত করেছে।
১৫. আমি শপথ করি যেসব নক্ষত্রগুলো পশ্চাতে সরে যায়।
১৬. চলমান হয় ও অদৃশ্য হয়,
১৭. শপথ নিশাবসান ও
১৮. প্রভাত আগমন কালের,
১৯. নিশ্চয় কোরআন সম্মানিত রসূলের আনীত বাণী,
২০. যিনি শক্তিশালী, আরশের মালিকের নিকট মর্যাদাশালী,
২১. সবার মান্যবর, সেখানকার বিশ্বাসভাজন।
২২. এবং তোমাদের সাথী ক্ষিপ্ত নন।
২৩. তিনি সেই ফেরেশতাকে প্রকাশ্য দিগন্তে দেখেছেন।
২৪. তিনি অদৃশ্য বিষয় বলতে কৃপণতা করেন না।
২৫. এটা বিতাড়িত শয়তানের উক্তি নয়।
২৬. অতএব, তোমরা কোথায় যাচ্ছ?
২৭. এটা তো কেবল বিশ্বাবাসীদের জন্যে উপদেশ,
২৮. তার জন্যে, যে তোমাদের মধ্যে সোজা চলতে চায়।
২৯. তোমরা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অভিপ্রায়ের বাইরে অন্য কিছুই ইচ্ছা করতে পার না।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ১৫ম প্রকাশ; সূরা আল ইনশিরাহ (৯৪) (প্রশস্তকরণ) ৮ আয়াত:
১. আমি কি আপনার বক্ষ উম্মুক্ত করে দিইনি?
২. আমি লাঘব করেছি আপনার বোঝা,
৩. যা ছিল আপনার জন্যে অতিশয় দুঃসহ।
৪. আমি আপনার আলোচনাকে সমুচ্চ করেছি।
৫. নিশ্চয় কষ্টের সাথে সুখ রয়েছে।
৬. নিশ্চয় কষ্টের সাথে স্বস্তি রয়েছে।
৭. অতএব, যখন অবসর পান, পরিশ্রম করুন।
৮. এবং আপনার পালনকর্তার প্রতি মনোনিবেশ করুন।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ১৬ম প্রকাশ; সূরা আদ দুহা (৯৩) (মধ্যাহ্ন) ১১ আয়াত:
১. শপথ পূর্বাহ্নের,
২. শপথ রাত্রির যখন তা গভীর হয়,
৩. আপনার পালনকর্তা আপনাকে ত্যাগ করেনি এবং আপনাকে শত্রু স্থির করেনি।
৪. আপনার জন্যে পরকাল ইহকাল অপেক্ষা শ্রেয়।
৫. আপনার পালনকর্তা সত্বরই আপনাকে দান করবেন, অতঃপর আপনি সন্তুষ্ট হবেন।
৬. তিনি কি আপনাকে এতিমরূপে পাননি ? অতঃপর তিনি আশ্রয় দিয়েছেন।
৭. তিনি আপনাকে পেয়েছেন বিপথগামী, অতঃপর পথপ্রদর্শন করেছেন।
৮. তিনি আপনাকে পেয়েছেন নির্ধন, অতঃপর অভাবমুক্ত করেছেন।
৯. সুতরাং আপনি এতিমের প্রতি কঠোর হবেন না;
১০. প্রার্থীকে ধমক দেবেন না।
১১. এবং আপনার পালনকর্তার নেয়ামতের কথা প্রকাশ করুন।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ১৭তম প্রকাশ; সূরা আন নাস (১১৪) (মানবজাতি) ৬ আয়াত:
১. বলুন, আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি মানুষের পালনকর্তার,
২. মানুষের অধিপতির,
৩. মানুষের মা’বুদের
৪. তার অনিষ্ট থেকে, যে কুমন্ত্রণা দেয় ও আত্মগোপন করে,
৫. যে কুমন্ত্রণা দেয় মানুষের অন্তরে
৬. জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে।

নবী মুহাম্মদ দ্বারা ১৮তম প্রকাশ; সূরা আন নাযিয়াত (৭৯) (আকর্ষণকারী) ২৬ আয়াত:
১. শপথ সেই ফেরেশতাগণের, যারা ডুব দিয়ে আত্মা উৎপাটন করে,
২. শপথ তাদের, যারা আত্মার বাঁধন খুলে দেয় মৃদুভাবে;
৩. শপথ তাদের, যারা সন্তরণ করে দ্রুতগতিতে,
৪. শপথ তাদের, যারা দ্রুতগতিতে অগ্রসর হয় এবং
৫. শপথ তাদের, যারা সকল কর্মনির্বাহ করে, কেয়ামত অবশ্যই হবে।
৬. যেদিন প্রকম্পিত করবে প্রকম্পিতকারী,
৭. অতঃপর পশ্চাতে আসবে পশ্চাদগামী;
৮. সেদিন অনেক হৃদয় ভীত-বিহবল হবে।
৯. তাদের দৃষ্টি নত হবে।
১০. তারা বলে: আমরা কি উলটো পায়ে প্রত্যাবর্তিত হবই
১১. গলিত অস্থি হয়ে যাওয়ার পরও?
১২. তবে তো এ প্রত্যাবর্তন সর্বনাশা হবে!
১৩. অতএব, এটা তো কেবল এক মহা চিৎকার,
১৪. তখনই তারা ময়দানে আবির্ভূত হবে।
১৫. মূসার বৃত্তান্ত আপনার কাছে পৌঁছেছে কি?
১৬. যখন তার পালনকর্তা তাকে পবিত্র তুয়া উপত্যকায় আহবান করেছিলেন,
১৭. ফেরাউনের কাছে যাও, নিশ্চয় সে সীমালংঘন করেছে।
১৮. অতঃপর বল: তোমার পবিত্র হওয়ার আগ্রহ আছে কি?
১৯. আমি তোমাকে তোমার পালনকর্তার দিকে পথ দেখাব, যাতে তুমি তাকে ভয় কর।
২০. অতঃপর সে তাকে মহা-নিদর্শন দেখাল।
২১. কিন্তু সে মিথ্যারোপ করল এবং অমান্য করল।
২২. অতঃপর সে প্রতিকার চেষ্টায় প্রস্থান করল।
২৩. সে সকলকে সমবেত করল এবং সজোরে আহবান করল,
২৪. এবং বলল: আমিই তোমাদের সেরা পালনকর্তা।
২৫. অতঃপর আল্লাহ তাকে পরকালের ও ইহকালের শাস্তি দিলেন।
২৬. যে ভয় করে তার জন্যে অবশ্যই এতে শিক্ষা রয়েছে।

(চলবে)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন