ধরা যাক, কাউকে প্রশ্ন করা হলো, "আপনি ভাত খেতে ভালোবাসেন?" উত্তরে তিনি বললেন, "আমি রক মিউজিক পছন্দ করি না।"
অর্থাৎ খাদ্য বিষয়ক প্রশ্ন করে উত্তর পাওয়া গেল সঙ্গীতরুচি সংক্রান্ত।
ঠিকই একইভাবে যখন কাউকে জিজ্ঞেস করা হয়, "আপনি ঈশ্বরের অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন?" উত্তরে অনেক বলে থাকেন, "আমি অজ্ঞেয়বাদী। কারণ, আমি জানি না, ঈশ্বর আছে কি না; এবং তা জানা সম্ভব নয়।"
অর্থাৎ বিশ্বাস বিষয়ক প্রশ্ন করে উত্তর পাওয়া গেল জ্ঞান সংক্রান্ত।
অনেকেই এমন একটি ভ্রান্ত ধারণা লালন করেন - অজ্ঞেয়বাদ হচ্ছে আস্তিকতা ও নাস্তিকতার মধ্যবর্তী একটি অবস্থান। না, তা নয়। একেবারেই নয়। বস্তুত আস্তিকতা-নাস্তিকতা হচ্ছে ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিষয়ক বিশ্বাস সম্পর্কিত এবং অজ্ঞেয়বাদ-জ্ঞেয়বাদ হচ্ছে ঈশ্বরের অস্তিত্ব বিষয়ক জ্ঞান সম্পর্কিত। বিশ্বাস ও জ্ঞানের সহাবস্থান কখনওই সম্ভব নয়। তাই এই দুয়ের "মাঝামাঝি" বলে কিছু নেই।
ঈশ্বরবিশ্বাসের প্রশ্নে "ঈশ্বর আছে কি না, তা জানা সম্ভব নয়" জাতীয় উত্তর সর্বতোভাবে অপ্রাসঙ্গিক। এমন উত্তরদাতারা হয়তো ভেবেও দেখেন না যে, যার অস্তিত্ব সম্পর্কে জানা সম্ভব নয়, তাকে বিশ্বাস করার প্রশ্নও থাকে না। তাই নয় কি? আর বিশ্বাস না থাকলেই আপনি নাস্তিক, আপনার তা পছন্দ হোক বা না হোক।
আসলে নাস্তিকের সবচেয়ে সরল সংজ্ঞা: যে-ব্যক্তি নিজেকে আস্তিক মনে করেন না, তিনিই নাস্তিক। এর মাঝামাঝি কোনও অবস্থান নেই। তাই নিজেদের অজ্ঞেয়বাদী হিসেবে দাবি করা ব্যক্তিরা শুধু একটি প্রশ্নের উত্তর দিন: "আপনি কি আস্তিক?"
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন