লিখেছেন জিওর্দানো ব্রুনো
বিজ্ঞানময় কোরান নিয়ে অনেক দড়ি টানাটানি চলেছে, মুমিন বান্দারা ব্যস্ত কোরানে বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলো খুঁজে বের করতে। যদিও কোনও আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত সে বিষয়ে কোরানের কোথাও সরাসরি কিছু পাওয়া যায় না। আবিষ্কারের পরেই শুধু মুছলিমরা 'আবিষ্কার' করে - কোরানে এ ব্যাপারে আগে থেকেই লেখা ছিলো। এ নিয়ে লিখলে একজন মুসলিম ভাই এই মন্তব্য করেছেন:
"কোরআনে বেসিক কিছু বলা আছে নিদর্শন হিসেবে এবং আল্লাহ আমাদের মস্তিষ্কে মগজ বা ব্রেন দিয়েছেন সেই বেসিক নিদর্শনগুলো নিয়ে ডিটেলস বের করতে ব্রেন খাটাতে... নাস্তিকদের কথা - কোরআনে এ টু জেড ডিটেলস নাই কেন... আচ্ছা সব যদি কোরআনেই থাকে, তাহলে আমরা ব্রেন নিয়ে কি করবো? এই ব্রেন দিয়েছেন কি কুকুর-শুয়োরদের মত সারাদিন ধর্মবিদ্বেষীতা করার জন্য? মানুষের মত বুদ্ধিমান প্রানী বানানোর দরকার কি ছিলো, পশুপাখি করে বানালেই হত... ব্রেন দেয়া হয়েছে যেন নিদর্শনগুলো ব্যবহার করে ব্রেন খাটিয়ে চিন্তা করে ডিটেলস বের করার জন্য, তাই নয় কি? কোরআনকে চিন্তাশীলদের জন্য করা হয়েছে। নাস্তিক বাটপারদের ধর্মবিদ্বেষীতার জন্য নয়..."
বিয়াফক যুক্তি আছে এঁর কথায়। আমাদের মাথা দেওয়া হয়েছে খাটানোর জন্য, কোরান পড়ে মাথা খাটিয়ে আমরা আল্লার সকল সৃষ্টি রহস্য বের করে ফেলবো (এবং অবশ্যই সেটা কোনো বিজ্ঞানী আবিষ্কার করে ফেলার পরে), এই ভরসা আল্লাহ আমাদের ওপর করেছেন। কিন্তু একটা জায়গায় এসে আল্লাহ আমাদের বুদ্ধিমত্তার ওপরে আস্থা রাখতে পারেননি। সেটা হলো - কাদের কীভাবে হত্যা করতে হবে সেই ব্যাপারে।
যখন নির্দেশ দান করেন ফেরেশতাদিগকে তোমাদের পরওয়ারদেগার যে, আমি সাথে রয়েছি তোমাদের, সুতরাং তোমরা মুসলমানদের চিত্তসমূহকে ধীরস্থির করে রাখ। আমি কাফেরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়। (কোরান ৮:১২)
অতঃপর যখন তোমরা কাফেরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দানে আঘাত কর, অবশেষে যখন তাদেরকে পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও। তোমরা যুদ্ধ চালিয়ে যাবে যে পর্যন্ত না শত্রুপক্ষ অস্ত্র সমর্পণ করবে! একথা শুনলে। আল্লাহ ইচ্ছা করলে তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তোমাদের কতককে কতকের দ্বারা পরীক্ষা করতে চান। যারা আল্লাহর পথে শহীদ হয়, আল্লাহ কখনই তাদের কর্ম বিনষ্ট করবেন না। (কোরান ৪৭:৪)
যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে সংগ্রাম করে এবং দেশে হাঙ্গামা সৃষ্টি করতে সচেষ্ট হয়, তাদের শাস্তি হচ্ছে এই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে অথবা শূলীতে চড়ানো হবে অথবা তাদের হাত পা বিপরীত দিক থেকে কেটে দেয়া হবে অথবা দেশ থেকে বহিষ্কার করা হবে। এটি হল তাদের জন্য পার্থিব লাঞ্ছনা আর পরকালে তাদের জন্যে রয়েছে কঠোর শাস্তি। (কোরান ৫:৩৩)
ওপরের আয়াতগুলোতে আল্লাহ শুধু "হত্যা করো" বলে ক্ষান্ত হননি, কীভাবে কাজটা সম্পন্ন করতে হবে, তার গাইডলাইনও দিয়েছেন। এছাড়া হাদিসেও এর উদাহরণ আছে (আমি জানি, হাদিস আল্লাহর বাণী নয়):
আনাস হতে বর্ণিত। কতকগুলো লোক মাদ্বীনায় তাদের প্রতিকূল আবহাওয়া অনুভব করল। তখন নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের হুকুম দিলেন, তারা যেন তাঁর রাখাল অর্থাৎ তাঁর উটগুলোর নিকট গিয়ে থাকে এবং উটের দুগ্ধ ও প্রস্রাব পান করে। তারা রাখালের সাথে গিয়ে মিলিত হল এবং উটের দুধ ও পেশাব পান করতে লাগল। অবশেষে তাদের শরীর সুস্থ হলে তারা রাখালটিকে হত্যা করে ফেলে এবং উটগুলো হাঁকিয়ে নিয়ে যায়। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এ খবর পৌঁছলে তিনি তাদের খোঁজে লোক পাঠান। এরপর তাদের ধরে আনা হল। এরপর তিনি তাদের হাত পা কেটে দেন এবং তাদের চক্ষু ফুঁড়ে দেন। (সহীহ বুখারী (তাওহীদ), অধ্যায়ঃ ৭৬/ চিকিৎসা, হাদিস নম্বর: ৫৬৮৬)
ক্বাতাদাহ (রহ.) বলেছেনঃ মুহাম্মাদ ইবনু সীরীন আমার নিকট বর্ণনা করেছেন যে, এটি হুদূদ অর্থাৎ শাস্তি সম্পর্কিত আইন) অবতীর্ণ হবার পূর্বের ঘটনা। ([২৩৩] আধুনিক প্রকাশনী- ৫২৭৫, ইসলামিক ফাউন্ডেশন- ৫১৭১)
খুনের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, এটা অনেক দেশেই আছে, কিন্তু হাত-পা কেটে পঙ্গু করে দেওয়া বা চক্ষু ফুঁড়ে দেওয়া কি শান্তির ধর্ম ইসলামের পরিচয় বহন করে?
মুসলিমরা সবসময়ই দাবি করেন, শুধু মাত্র আত্মরক্ষার খাতিরে হত্যা জায়েজ। হুমমম, আত্মরক্ষা করতে করতেই মুসলিমরা আফ্রিকা থেকে শুরু করে ভারতবর্ষ পর্যন্ত দখল করে নিয়েছিল।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন