লিখেছেন জিওর্দানো ব্রুনো
"কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম। এরপরও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না?" (কোরান ২১:৩০)
(এই আয়াতে আছে মুমিনদের জন্য বিগ ব্যাং-এর নিদর্শন)
দুঃখিত, আমার পক্ষে ইমান আনা সম্ভব নয়। এই আয়াত পড়ে তারাই ঈমান আনবে, যাদের বিচার-বিবেচনা অণ্ডকোষ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়, মস্তিষ্ক দিয়ে নয়।
প্রথমত, আকাশ বলতে আপনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা আমার বোধগম্য নয়। আপনার কথা শুনে মনে হচ্ছে, আকাশ কোনো বস্তু। কিন্তু আসলেই কি তাই? না, ব্যাপারটি তা নয়। আকাশ কোনো বস্তু নয়, আকাশ হলো আমাদের দৃষ্টিসীমা।
দ্বিতীয়ত, আপনি হয়ত আকাশ বলতে পৃথিবী ছাড়া বাকি সবকিছুকে বোঝাচ্ছেন, এবং বলতে চাচ্ছেন যে, পৃথিবী এবং বাকি সব গ্রহ-নক্ষত্র একসাথে মিশে ছিল, যা আপনি আলাদা করেছেন। যদি তা-ই হয়, তাহলে সেই মিশে থাকা বস্তুটির নাম কী? আপনি হয়ত জানেন না যে, আধুনিক বিজ্ঞান মতে - সৃষ্টির শুরুতে পৃথিবী বা অন্য কোনো গ্রহ-নক্ষত্রের কোনো অস্তিত্ব ছিল না এবং বিগ ব্যাং সংঘটিত হওয়ার ৮.৫ বিলিয়ন বছর পরে পৃথিবী নামক গ্রহটির জন্ম প্রক্রিয়া শুরু হয়? সুতরাং যে জিনিসের কোনো অস্তিত্ব ছিল না, তা কীভাবে একে অন্যের সাথে মিশে থাকে?
তৃতীয়ত, “প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম”, এই কথা বৈজ্ঞানিকভাবে ভুল প্রমাণিত। পানি আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য, কিন্তু পানি থেকে আমাদের সৃষ্টি হয়নি। প্রাণী সৃষ্টির অন্যতম উপাদান হলো কার্বন, যা পানিতে নেই। আপনি যদি “পানির” জায়গায় শুধু “কার্বন” বলতেন, তাহলেও পৃথিবীর সব মানুষ আপনার ছায়াতলে হাজির হত। কিংবা আপনি যদি শুধু বলতেন ,“এবং আমরা প্রায় প্রত্যেক জীবন্ত জিনিসকে পানির ওপর নির্ভরশীল করে তৈরি করলাম,” তাহলে ও এ যাত্রা বেঁচে যেতেন।
আপনি এ ধরনের গাঁজাখুরি আয়াত নাজিল করে আবার চ্যালেঞ্জ করেন, “পারলে কোরানের মত আয়াত লিখে আনো!” এই নিন, আমি আপনার এই অধম বান্দা আপনার ওপরের আয়াতটিকে লিখেছি, যা পড়লে অধিকাংশ মানুষই আপনার দাসত্ব মেনে নিত:
“কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশের অস্তিত্ব পৃথিবীর অনেক সময় আগে থেকে ছিল, যে সময় তোমাদের ধারণারও বাইরে, অতঃপর আমরা প্রথমে সূর্য এবং তারপর পৃথিবীকে ধোঁয়ার মত ঘুর্ণায়মান ধূলিকণা থেকে সৃষ্টি করলাম, এবং প্রায় প্রত্যেক জীবন্ত জিনিসকে পানির ওপর নির্ভরশীল করে তৈরি করলাম, তবু কি তারা ঈমান আনবে না?”
কিন্তু আপনি এই ধরনের আয়াত নাজিল করা থেকে সব সময়ই বিরত থাকেন। কেন থাকেন, সেটা আপনিই ভালো জানেন।
যখন কেঊ আলতুফালতু কথাবার্তা বলে, তার উদ্দেশ্যে নোয়াখালীর আঞ্চলিক ভাষায় একটি প্রবাদ বলা হয়ে থাকে: "হাগল ছাগল কুমড়ার বাগল।" আমারও এই ধরনের কিছু বলতে ইচ্ছে করছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন