লিখেছেন পুতুল হক
৯৭.
ইবনে ইসহাক রচিত সিরাতে রাসুলুল্লাহ মুসলিম সমাজে রাসুলের জীবনচরিত হিসেবে খুবই সমাদৃত বই। মুসলিম পণ্ডিতগণ বিভিন্ন সময়ে এই বই রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করেন। এই বইয়ের একটি ঘটনা বলছি।
সুহাইলি, রর.৭৯: ইউনুছের রেওওয়ায়েত কর্তৃক রেকর্ডকৃত:
নবী তাঁকে (উম আল-ফজলকে) দেখেন যখন সে তাঁর সামনে হামাগুড়ি দিচ্ছিল। তিনি বলেন,-‘যদি সে বড় হয় এবং আমি তখনও বেঁচে থাকি, আমি তাঁকে বিয়ে করবো’; কিন্তু সে বড় হবার আগেই নবী ইন্তেকাল করেন এবং সুফিয়ান বীণ আল-আসওয়াদ বীণ আব্দুল আসাদ আল-মাখজুমির সাথে তাঁর বিয়ে হয় এবং সুফিয়ানের ঔরসে রিজক এবং লুবাবা নামে দুটি সন্তান জন্মে। (পৃষ্ঠা নং ৩১১)
পাক্কা মুসলিমের কাছে আমাদের হামাগুড়ি দেয়া শিশুরাও নিরাপদ নয়। এইসব বাচ্চাদের দেখে মুমিনের অন্তরে যৌনক্ষুধা জাগে। তবে বেচারি উম আল-ফজলের ক্ষেত্রে মহানবী উদারতা দেখিয়েছেন, কারণ তিনি ইচ্ছে করলে তৎক্ষণাৎ তাঁকে বিয়ে করতে পারতেন। ইসলামে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষরা দুগ্ধপোষ্য শিশুদের বিয়ে করতে পারে।
এখন আধুনিক মুসলমান যদি বলে যে, এসব প্রাচীন ঘটনা, এখন আর এমন হয় না, তাহলে কিন্তু একটা কথা আসে। কোরআনকে সর্বকালের জীবনবিধান আর রাসুলের হাদিস যদি হয় চিরদিনের জন্য অনুকরণীয়, তাহলে এসব অবশ্যই ঘটবে। কোরআন আর হাদিস অনুযায়ী এক সহি মুসলমানের ইসলামিক বাংলাদেশের স্বপ্ন কি তারা দেখেন না? তারা কি চান না এই দেশে ইসলামী আইনের শাসন? রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় যদি ইসলাম আসে তাকে কি কেটে-ছেঁটে বনসাই করে রাখবেন? তা কী করে সম্ভব! আল্লা কি তার অনুমতি দিয়েছে?
৯৮.
এক পরহেজগার আপাকে তার হাবি সুরা নিসা আয়াত পড়ে শোনায়। আপা পাল্টা আয়াত তন্নতন্ন করে খোঁজে কোরানে। আছে কি এমন কোনো আয়াত, যেটা আপার উপকারে আসবে?
৯৯.
দিকে দিকে মুমিনারা শরিয়া আইনের জয়গান গাইছে শুনি। এতো সম্মান তারা রাখবে কই? এই আইনের প্রয়োজনীয় কিছু দিক তুলে ধরি:
১) স্ত্রীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের জন্য দরকারি বস্তুসমূহ: স্ত্রী তার কেশবিন্যাসের জন্য তেল, শ্যাম্পু, সাবান, চিরুনি পাবে। (যা সেই শহরে সচরাচর ব্যবহার হয়) স্বামীকে তার স্ত্রীর বগলের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য যে সুগন্ধির প্রয়োজন, তা দিতে হবে। যৌনসঙ্গমের পূর্বে ও পরে স্ত্রীর গোসলের যে পানি দরকার, তা স্বামীকে দিতে হবে। সন্তানপ্রসবের পরে রক্ত ধৌত করার জন্য যে পানির প্রয়োজন, তাও স্বামীকে দিতে হবে। এই দু'টি কারণ ছাড়া স্বামী তার স্ত্রীকে সাধারণ গোসল অথবা ধৌতের জন্যে যে পানির প্রয়োজন, তার খরচ দিতে বাধ্য থাকবে না।
২) স্বামী তার স্ত্রীর প্রসাধন সামগ্রী, চিকিৎসকের খরচ, ঔষধের খরচ অথবা এই ধরনের অন্যান্য খরচ বহন করতে বাধ্য থাকবে না, যদিও স্বামী চাইলে তা করতে পারে। এটা শুধু সুপারিশ, বাধ্যবাধকতা নয়। কিন্তু শিশু জন্মের সাথে জড়িত খরচ স্বামীকে বহন করতে হবে।
৩) দৈনিক ভাতা শুরু হবে দিনের শুরুতে। স্বামী তার স্ত্রীকে দিনের প্রথমে স্ত্রীর দৈনিক ভাতা দিতে বাধ্য থাকবে। মরশুমের শুরুতেই স্বামী তার স্ত্রীকে পোশাকের কাপড় দিয়ে দেবে।
৪) স্ত্রীর ভরণপোষণ স্বামী সে পর্যন্তই বহন করবে, যে পর্যন্ত চাহিবার মাত্র স্ত্রী তার স্বামীকে দেহদান করে অথবা দেহদানের প্রস্তুতি দেখায়। এর অর্থ হচ্ছে স্ত্রী স্বামীকে পূর্ণ যৌন-উপভোগ করতে দিবে এবং কোনো অবস্থাতেই স্বামীর যৌন চাহিদার প্রত্যাখ্যান করবে না। স্বামীর ভরণপোষণ স্ত্রী পাবেনা যখন:
- স্ত্রী স্বামীর অবাধ্য হবে, তার মানে যখন স্ত্রী স্বামীর আদেশ অমান্য করবে এক মুহূর্তের জন্যে হলেও।
- স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে ভ্রমণে যায় অথবা স্বামীর অনুমতি নেয়, কিন্তু ভ্রমণ করে নিজের প্রয়োজনে।
- স্ত্রী হজ্জ অথবা ওমরা করার উদ্দেশ্যে এহরাম করে।
- স্ত্রী যদি স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে নফল রোজা রাখে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন