লিখেছেন পুতুল হক
৮৬.
আগুন, পানি, বাতাস, সমুদ্রের ঢেউ, সাপ, বিচ্ছু, উলাওঠা ইত্যাদিকে ভয় পেয়ে এদের সন্তুষ্ট রাখতেই কি ধর্মের উৎপত্তি? যজ্ঞ, পূজা আর প্রার্থনা করে নিরাপদ থাকার চেষ্টা যদি ধর্ম হয়, তাহলে আণবিক বোমাকে বেশি বেশি পূজা করা উচিত, কারণ এর ধ্বংসের ক্ষমতা অনেক বেশি। ডজন-ডজন বলি দেয়া দরকার, যেন বোমা না ফাটে। জীবন রক্ষাকারী ওষুধের পূজা করা উচিত। সুপার কম্পিউটার, এরোপ্লেনের পূজা করা উচিত। এইসব কিছুই এক সময় মানুষের কল্পনার অতীত ছিল।
দিনে পাঁচবার মাটিতে কপাল ছুঁইয়ে কার কোন চাহিদাটা মিটেছে? আকাশ থেকে কারো জন্য একবেলার খাবার পড়েছে? দেবদূত বা পয়গম্বর এসে পৃথিবীর কোনো সমস্যার সমাধান দিয়ে গেছে? মানুষের কোনো প্রশ্নের উত্তর দিয়ে গেছে? তাহলে শুধু শুধু ধর্মের পেছনে মানুষের মেধা, শক্তি, সময় আর সম্পদ ব্যয় করার কী মানে হয়?
৮৭.
কোনো পুণ্যবতী মুমিনা স্ত্রী যদি মৃত্যুর পর বেহেস্ত অর্জন করে ও ৭২ হুরির সাথে নিজের স্বামী সাহেবের রতিক্রিয়া দেখে পুনরায় মৃত্যু কামনা করে, সেই পুণ্যবতী মুমিনা স্ত্রীর মনের ইচ্ছা কি মহান আল্লাহতায়ালা পূরণ করবেন?
৮৮.
আমার প্রথম ভাগ্নের মুসলমানি হয় ওর তিন বছরের কিছুদিন পর। মনোয়ারা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। সেখানে নিয়ে যাবার পর চিপস, চকোলেট, আইসক্রিম খেয়ে তার সময় ভালোই কাটছিল। কিন্তু ওটিতে নেবার পর বাবু সন্দেহ করতে থাকে - কোনো অঘটন ঘটবে। সে ইতিমধ্যে আক্রান্ত এক বাবুকে দেখে ফেলেছে। তখন এমন কান্না আর ছটফট শুরু করলো যে, ওর মা-বাবা, আমি, ডাক্তার, সবাই মিলেও ওকে ধরে রাখতে পারছিলাম না। দাঁত কিড়মিড় করে ও বলছে, "শালার ডাক্তার, আমার নুনু কাটবি?" ডাক্তার আর কতক্ষণ সহ্য করে! কাজটা জলদি সেরে ফেলার জন্য সে সবাইকে বাইরে যেতে বলে, কিন্তু বাবু আমাকে ছাড়ছিল না বলে আমাকে থাকতে দেয়। বাবু গালাগালি করেই যাচ্ছে সমানে। হুমকি দিচ্ছে, "আমাকে ছাড় তুই, শালা, আমি তোর নুনু কাটবো।" ডাক্তার বলে, "কাটবা, বাবা, আগে তোমারটা কাটি, তারপর তুমি আমারটা কাটো।"
৮৯.
আমার জানা মতে, বেশ কয়েকজন সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে বহাল তবিয়তে টিকে আছে তাদের অনুসারীদের মাধ্যমে। ঈশ্বরদের প্রত্যেকেই নীচ, হিংসুটে, মিথ্যুক আর প্রতারক। এদের তুলনায় আমরা, মানুষেরা, অনেক বেশি উন্নতমানের।
৯০.
স্কুলের টিচারদের কথা মনে পড়লে দেখি, সবাই সুন্দর করে কথা বলতেন। কারো কথায় হয়তো আঞ্চলিকতার টান থাকতো, কিন্তু খারাপ, অশ্লীল বা অসভ্য কোনোভাবেই বলা যাবে না। একমাত্র ব্যতিক্রম ছিলেন, যিনি ইসলামিয়াত পড়াতেন। আমরা তাঁকে ডাকতাম 'হুজুর স্যার' বলে। এই লোকটা যে শুধু অসভ্যদের মত করে কথা বলতো, তা-ই নয়, মহিলাদের কপালে টিপ পরা, পেট বের করে চলা, ছেলেমেয়েদের অন্ধকার জায়গায় প্রেম করা, শার্টপ্যান্ট পরে মেয়েদের ব্যাটাছেলে সাজা ইত্যাদি ছিল তার আলোচনার বিষয়। কলেজে উঠে যখন অন্যান্য স্কুল থেকে আসা মেয়েদের সাথে আলাপ হল, শুনলাম যে, ওদের স্কুলের ধর্ম টিচারগুলো নাকি একই রকম। ইসলামী জ্ঞানে জ্ঞানিয়ান লোকগুলো এমন কেন হয়?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন