লিখেছেন পুতুল হক
১০০.
কিশোরদের মুখে 'আলহামদুলিল্লাহ্', 'মাশাল্লাহ', 'ইনশাল্লাহ', 'সুবহানাল্লাহ' শুনে শুনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি, শুধু ভয়টা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। কী নির্দ্বিধায় সমর্পণ এদের অন্ধবিশ্বাসের কাছে! এ সময় বরং যে কোনোকিছু মেনে না নেয়ার প্রবণতা থাকাটাই বরং স্বাভাবিক হতো। কিন্তু এরাই যেন বয়োবৃদ্ধ জরাগ্রস্ত বাতিল বিশ্বাসের কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। এতোটুকু বয়সে এরা শিখে গেছে - সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছা। তাহলে এদের নিজের ইচ্ছা তৈরি হবে কবে? যে বয়সে তারা জগতকে চিনে চিনে বড় হবে, নতুন জিনিস দেখবে, নতুনকে আবিষ্কার করবে, তাদের নতুন নতুন ইচ্ছা হবে নিয়ম ভাঙার, গড়ার, দেখার, শোনার, সে বয়সে তারা আল্লাহর ওয়াস্তে সব কিছু ছেড়ে দিয়েছে। ছোট ছোট হৃদয়গুলোর বিশালতা হবার কথা ছিল আকাশের চাইতেও বেশি। কিন্তু তাদের ছোট্ট হৃদয়কে ঘৃণা আর সন্ত্রাসের বীজ দিয়ে ভরিয়ে তোলা হয়েছে। এই বয়সটাতে মানুষ অর্থ, ধর্ম, বর্ণের ভেদ ছাড়াই মানুষকে ভালোবাসতে পারে। স্বার্থ, রাজনীতি এসব চিন্তা করতে ভালোবাসে বড় মানুষেরা। কিশোর বয়সে ভালোবাসতে হলে এতো কিছু চিন্তা করতে হয় না। ক্লাসের মুখচোরা লাজুক ১৩/১৪ বছরের ছেলেটি হয়তো প্রেমে পড়েছে ৩৫ বছরের কোনো শিক্ষিকার। বড় ভাইয়ের বন্ধুর গার্লফ্রেন্ডকে দেখে রাগে-দুঃখে চুল ছিড়তে ইচ্ছে করে দশম শ্রেণীর ছোটবোনের। কার বয়স কত, কে কোন ধর্মের, কোন জাতের, সেসব দেখার জন্য সারা জীবন পড়ে থাকে, কিন্তু কিশোর-কিশোরীর কাছে সব মানুষ ভালোবাসার যোগ্য। আমি আমার চারপাশে অজস্র কচি মুখ দেখছি, যারা প্রেমহীন, ইচ্ছাহীন, স্বাধীনতাহীন হয়ে বড় হয়ে উঠছে। এরা জানে - নরনারী আল্লাহর বান্দা-বান্দী। এরা জানে - সব আল্লাহর ইচ্ছা। এরা জানে সমর্পণ। কোথায়, কেন, কার কাছে - এসব তারা জানতে চায় না। জানতে চাইবে কীভাবে? এদের ভেতরের সেই ইচ্ছেটা মেরে ফেলা হয়েছে। এদের শুধু ইচ্ছে করে আল্লাহ-রাসুলের ইচ্ছেমত চলতে।
১০১.
শান্তি আসবে ইসলামের মাধ্যমে। ইসলাম আসবে খেলাফতের মাধ্যমে। খেলাফত আসবে জিহাদের মাধ্যমে। জিহাদ আসবে চাপাতির মাধ্যমে।
১০২.
ট্রান্সপোর্টের বাসে অফিসে যেতে যেতে একটা মেয়ের সাথে আলাপ হয়েছিলো। বেশি বয়স নয়, ২২/২৩ বছর হবে। একটা অনামী লোকাল কোম্পানিতে রিসেপশনিস্ট। হাসিখুশি, মিশুক। কলকল করে কথা বলতো। লাইনে আমার সাথে না দাঁড়ালেও কীভাবে যেন আমার পাশে এসে বসতো। আমার সময় দ্রুত কেটে যেত সেদিন। অনেক কথা বলেছিল ওর সম্পর্কে। ওর অলস বেকার বাবার কথা, সংগ্রামী মায়ের কথা, অপদার্থ ভাইয়ের কথা, ছোট বোনের লোভের কথা। আমার পাশে বসে ভাড়া দেয়, কাজেই মাঝে মাঝে ওর টাকার ব্যাগে আমার চোখ চলে যেত। মেয়েটার একটা অভ্যেস ছিল - মসজিদ নির্মাণ বা এতিমখানায় দানের নাম করে কেউ কিছু চাইলে তাকে ফেরাতো না। এভাবেই একদিন দান করে আমাকে বলে ওর ভাড়ার টাকা দিয়ে দিতে। কয়েকদিন পরে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ও কি বেহেস্তে যাবার আশায় দান করে? মেয়েটি জানিয়েছিল বেহেস্তে কি হয়, বেহেস্ত কেন চাইতে হয়, কীভাবে চাইতে হয়, সে কিছু জানে না। তবে সে জানে, আল্লাহ একদিন রহমতের বৃষ্টি ওদের পরিবারের ওপর ফেলবে, আর ওদের সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। তাই আল্লাহকে খুশি করার জন্য সে দান করে। শুনে হাসি পেয়েছিল। বলেছিলাম, "তোমাদের এতো কষ্ট দেখে যার মন গলে না, ১০/২০ টাকা দান পেয়ে তার মন গলে যাবে?" আমাকে অবাক করে মেয়েটিও হেসেছিল। এরপর থেকে তাকে ওসব কাজে দান করতে দেখিনি।
১০০.
কিশোরদের মুখে 'আলহামদুলিল্লাহ্', 'মাশাল্লাহ', 'ইনশাল্লাহ', 'সুবহানাল্লাহ' শুনে শুনে অভ্যস্ত হয়ে গেছি, শুধু ভয়টা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। কী নির্দ্বিধায় সমর্পণ এদের অন্ধবিশ্বাসের কাছে! এ সময় বরং যে কোনোকিছু মেনে না নেয়ার প্রবণতা থাকাটাই বরং স্বাভাবিক হতো। কিন্তু এরাই যেন বয়োবৃদ্ধ জরাগ্রস্ত বাতিল বিশ্বাসের কাছে আত্মসমর্পণ করে বসে আছে। এতোটুকু বয়সে এরা শিখে গেছে - সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছা। তাহলে এদের নিজের ইচ্ছা তৈরি হবে কবে? যে বয়সে তারা জগতকে চিনে চিনে বড় হবে, নতুন জিনিস দেখবে, নতুনকে আবিষ্কার করবে, তাদের নতুন নতুন ইচ্ছা হবে নিয়ম ভাঙার, গড়ার, দেখার, শোনার, সে বয়সে তারা আল্লাহর ওয়াস্তে সব কিছু ছেড়ে দিয়েছে। ছোট ছোট হৃদয়গুলোর বিশালতা হবার কথা ছিল আকাশের চাইতেও বেশি। কিন্তু তাদের ছোট্ট হৃদয়কে ঘৃণা আর সন্ত্রাসের বীজ দিয়ে ভরিয়ে তোলা হয়েছে। এই বয়সটাতে মানুষ অর্থ, ধর্ম, বর্ণের ভেদ ছাড়াই মানুষকে ভালোবাসতে পারে। স্বার্থ, রাজনীতি এসব চিন্তা করতে ভালোবাসে বড় মানুষেরা। কিশোর বয়সে ভালোবাসতে হলে এতো কিছু চিন্তা করতে হয় না। ক্লাসের মুখচোরা লাজুক ১৩/১৪ বছরের ছেলেটি হয়তো প্রেমে পড়েছে ৩৫ বছরের কোনো শিক্ষিকার। বড় ভাইয়ের বন্ধুর গার্লফ্রেন্ডকে দেখে রাগে-দুঃখে চুল ছিড়তে ইচ্ছে করে দশম শ্রেণীর ছোটবোনের। কার বয়স কত, কে কোন ধর্মের, কোন জাতের, সেসব দেখার জন্য সারা জীবন পড়ে থাকে, কিন্তু কিশোর-কিশোরীর কাছে সব মানুষ ভালোবাসার যোগ্য। আমি আমার চারপাশে অজস্র কচি মুখ দেখছি, যারা প্রেমহীন, ইচ্ছাহীন, স্বাধীনতাহীন হয়ে বড় হয়ে উঠছে। এরা জানে - নরনারী আল্লাহর বান্দা-বান্দী। এরা জানে - সব আল্লাহর ইচ্ছা। এরা জানে সমর্পণ। কোথায়, কেন, কার কাছে - এসব তারা জানতে চায় না। জানতে চাইবে কীভাবে? এদের ভেতরের সেই ইচ্ছেটা মেরে ফেলা হয়েছে। এদের শুধু ইচ্ছে করে আল্লাহ-রাসুলের ইচ্ছেমত চলতে।
১০১.
শান্তি আসবে ইসলামের মাধ্যমে। ইসলাম আসবে খেলাফতের মাধ্যমে। খেলাফত আসবে জিহাদের মাধ্যমে। জিহাদ আসবে চাপাতির মাধ্যমে।
১০২.
ট্রান্সপোর্টের বাসে অফিসে যেতে যেতে একটা মেয়ের সাথে আলাপ হয়েছিলো। বেশি বয়স নয়, ২২/২৩ বছর হবে। একটা অনামী লোকাল কোম্পানিতে রিসেপশনিস্ট। হাসিখুশি, মিশুক। কলকল করে কথা বলতো। লাইনে আমার সাথে না দাঁড়ালেও কীভাবে যেন আমার পাশে এসে বসতো। আমার সময় দ্রুত কেটে যেত সেদিন। অনেক কথা বলেছিল ওর সম্পর্কে। ওর অলস বেকার বাবার কথা, সংগ্রামী মায়ের কথা, অপদার্থ ভাইয়ের কথা, ছোট বোনের লোভের কথা। আমার পাশে বসে ভাড়া দেয়, কাজেই মাঝে মাঝে ওর টাকার ব্যাগে আমার চোখ চলে যেত। মেয়েটার একটা অভ্যেস ছিল - মসজিদ নির্মাণ বা এতিমখানায় দানের নাম করে কেউ কিছু চাইলে তাকে ফেরাতো না। এভাবেই একদিন দান করে আমাকে বলে ওর ভাড়ার টাকা দিয়ে দিতে। কয়েকদিন পরে জিজ্ঞেস করেছিলাম, ও কি বেহেস্তে যাবার আশায় দান করে? মেয়েটি জানিয়েছিল বেহেস্তে কি হয়, বেহেস্ত কেন চাইতে হয়, কীভাবে চাইতে হয়, সে কিছু জানে না। তবে সে জানে, আল্লাহ একদিন রহমতের বৃষ্টি ওদের পরিবারের ওপর ফেলবে, আর ওদের সব কষ্ট দূর হয়ে যাবে। তাই আল্লাহকে খুশি করার জন্য সে দান করে। শুনে হাসি পেয়েছিল। বলেছিলাম, "তোমাদের এতো কষ্ট দেখে যার মন গলে না, ১০/২০ টাকা দান পেয়ে তার মন গলে যাবে?" আমাকে অবাক করে মেয়েটিও হেসেছিল। এরপর থেকে তাকে ওসব কাজে দান করতে দেখিনি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন