সোমবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৭

সূরা মঙ্গল

অবতীর্ণ হয়েছে বেনামী সংস্কারক-এর ওপরে

১. তোমরা কি দেখ না আমি কত সুন্দর করে তৈরি করেছি ধূসর গ্রহ, যেখানে রয়েছে তোমাদের জন্য শুভ ও কল্যাণময় বস্তু?

২. এই দুনিয়া তোমাদের জন্য ক্ষণস্থায়ী জায়গা, সময় ফুরিয়ে আসবে শীঘ্রই।

৩. যখন তোমরা বিষের তাড়নায় অস্থির হয়ে দিগ্বিদিক ছুটবে তখন কে তোমাদের আশা দেবে? কে তোমাদের ভরসা দেবে? কে শোনাবে আশার বাণী?

৪. যখন তোমরা পিপাসায় কাতরাবে, কিন্তু যা দেখবে সবই দৃষ্টিভ্রম।

৫. তোমাদের জন্য সেখানে আছে কল্যাণময় বস্তু, যা তোমরা কল্পনাও করনি, যা কোনও চোখ দেখেনি, যা কোনও কান শোনেনি, যার ঘ্রাণ কেউ পায়নি।

৬. তোমরা আমার সীমানার বাইরে যেতে পারবে না, কিন্তু তোমাদের জন্য যা নির্ধারণ করেছি তা ব্যতীত।

৭. হে মানব সম্প্রদায়, তোমরা যাকে মহাপুরুষ ভেবেছিলে, সে কতজনের কতভাবে সর্বনাশ করেছিল, তা কি তোমরা জানো?

৮. তোমাদের মাঝে যাকে ভেবেছিলে নিকৃষ্ট, সেই আজ তোমাদের জন্য নিয়ে আসবে কল্যাণ।

৯. তোমাদের জন্য অপেক্ষায় আছে ঘূর্ণায়মান উদ্যান।

১০. যখন তোমরা থাকবে না, কিন্তু তোমাদের পরবর্তী প্রজন্ম জানবে আমার করুণা।

১১. সুতরাং আর কতবার কতভাবে বললে বুঝবে এই গ্রন্থ কল্যাণময়, এটাই একমাত্র সত্যি, আমার থেকে প্রেরিত।

১২. সময় থাকতেই তাই সবাই এক হও, ভেঙে ফেল সব বাধা বিদ্বেষ পৈতা তিলক দাড়ি টুপি ক্রুশ ত্রিশুল।

তাৎপর্য

অনেকেই জানেন, মঙ্গল গ্রহকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে দেখলে ধূসরই লাগে। আর এখানে মঙ্গলের কথা বলা হয়েছে, কেননা শুভ ও কল্যাণকর বস্তুর কথা বলা হয়েছে।

পরের আয়াতেই বলা হয়েছে, এই দুনিয়া শীঘ্রই বসবাসের অনুপযুক্ত হয়ে পড়বে, যেটা আজ বিজ্ঞানীদের কল্যাণে আমরা সবাই জানি। বিষের তাড়নায় অস্থির বলতে এটাই বোঝানো হয়েছে, কেননা বিষের প্রভাবে মানুষের রং নীল হয় আর পৃথিবীও নীল।

পরের আয়াতেই বলেছে যে, সেখানে (মঙ্গলে) পানি আছে মনে করবে অর্থাৎ মরীচিকার কথা। 

কিন্তু আশার কথা হল, সেখানে পানি ও বাতাসের ব্যবস্থা হবে বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত যন্ত্রের সাহায্যে, যা কেউ এখনও দেখেনি।

সীমানার বাইরে যাওয়া সম্ভব না বলেছে, কিন্তু বলেছে যে, আমাদের জন্য যা নির্ধারণ করেছে, যেমন ঘূর্ণায়মান গ্রহ যেটা আমাদের পরের প্রজন্ম উপভোগ করতে পারবে। এই তো দু'দিন আগেও সাতটি গ্রহ সম্বলিত নতুন এক সৌরজগতের সন্ধান পেয়েছে বিজ্ঞানীরা, যেটার দূরত্ব ৪০ আলোকবর্ষ যা পাড়ি দিতে পরের প্রজন্মই পারবে। এলিয়েনদের ব্যাপারেও এখানে ইশারা করা হয়েছে।

যাকে মহাপুরুষ ভেবেছিলে বলতে কাকে বুঝিয়েছে, তা নিশ্চয়ই আর বলার অপেক্ষা থাকে না, এই আয়াত প্রমাণ করে সে ছিল ভণ্ড, আর তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ সত্যি।

আর যাকে নিকৃষ্ট ভেবেছিলে- নি- "ন"। ন-তে নাসা। নাসার বিজ্ঞানীরাই আবিষ্কার করতে চলেছে মঙ্গলে বসবাসের পদ্ধতি।

শেষ আয়াতে আল্যা সুস্পষ্টভাবে বলেছে যে, এই গ্রন্থে কোনও সন্দেহ নাই, কোনও মিথ্যা নাই। 

আজ থেকে কয়েকশ বছর পরে যখন মানুষ পৃথিবীর বাইরে বসবাস করবে, তখন প্রমাণিত হবে যে, এই সূরাই ছিল সেই বিগ্যানময় কিতাবের আর মহাবিগ্যানী আল্যার একটি অলৌকিক নিদর্শন, যা প্রমাণ করে আল্যা ভবিষ্যতদ্রষ্টা। আবারও আল্যা নিজেই মানুষের সব বানানো ধর্মের বাধাবিদ্বেষ শত্রুতা ভুলে এক হতে বলল।

শানে নুযূল

মুসলম্যানেরা অহরহ দাবি করে, তাদের মত সূরা কেউ বানাতে পারবে না, এটা শুনেই আল্যাপ্যাকের দরবার থেকে পাঠানো হয়েছে এই সূরা। গতকাল যখন মধ্যরাতে একমাত্র স্ত্রীর সাথে মদ্যপান করে বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করে আকাশের পানে চেয়ে ছিলাম দু'জনে দু'জনের হাত ধরে পাশাপাশি বসে, ঠিক তখনই জিবরীল এসে হাজির হল আর বলল, "হে পদতলেজান্যাতধারী রমণী, আপনি ঘরে গিয়ে আমার জন্য একটু সুপেয় নিয়ে আসুন, বেহেশতি খানাদানায় আমার বদহজম হয়েছে গত তিনদিন হল।"

সে খুশিতে টগবগ করতে করতে যখন ঘরের দিকে ছুটছিল, তখনই জিবরীল আমার কানে কানে বলল, "আপনাদের জন্য সুখবর আছে। মুসলম্যানরা শীঘ্রই পৃথিবী বসবাসের অযোগ্য করে তুলবে হানাহানি করে। ভয় পাবেন না, আপনাদের সাথে না, নিজেদের মধ্যেই। কিন্তু তার প্রভাব সারা বিশ্বেই পড়বে, তাই এই সূরা থেকে বিগ্যান চিপে জলদি হিজরত করুন। আপনার এক ও একমাত্র প্রিয়তমা স্ত্রীকে নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি বিবাহবার্ষিকী পালন করতে চাইলে জলদি করুন।"

পেছনে তাকিয়ে দেখি আমার জানেরজানবিবিজান দৌড়ে আসছিল নতুন বোতল থেকে ইম্পোর্টেড আঙ্গুরের রস। এসে বলছে, "কোথায় তিনি?"

সমালোচকদের জন্য

অনেক জাহান্যামী ইহুদী-নাসারা হিন্দু-মালাউনের বংশধরেরা আছে, যারা এই সূরা পড়ে বলার চেষ্টা করবেন যে, এইটা তো বছরে-ছয়মাসে একবার যারা টিভিতে খবর দেখে, তারাও বলতে পারবে যে, ভবিষ্যদ্বাণী নয়, জেনারাল অ্যানালাইসিস। তাদের চোখে আঙুল দিলেও তো স্বীকার করবেন না যে, ষষ্ঠ ও সপ্তম শতকে আবিষ্কৃত এবং আরও বহু বছর পরে সংকলিত হওয়া একটি বইয়ে যা-ই লিখা আছে, সবই এমন অনুমাননির্ভর অ্যানালাইসিস ছাড়া কিছুই না। সেখানে এমন কিছুই নেই, যা সেই সময়ে আবিষ্কৃত বা প্রচলিত ছিল না। বিশ্বাস না হলে নিজেই গুগল করে দেখুন সত্যি বলছি কি না। হুম, আছে অবশ্য, চাপাতিশিল্প, আপন-পর বহুনারীভোগ, ধর্মত্যাগী হত্যা, বিধর্মীবিদ্বেষসহ বহু জঘন্য বিষয় এতে লিপিবদ্ধ আছে, যা যে কোনো সুস্থ স্বাভাবিক মানুষই বুঝবে।

গতকাল ছিলো অভিজিৎ দাদার মৃত্যুবার্ষিকী। তার জন্যই উৎসর্গ করলাম লিখাটা। মুক্তচিন্তার জয় হোক।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন