রবিবার, ১৯ মার্চ, ২০১৭

চিঠি-হুমকি - ১: দামেস্ক ও পারস্যের শাসনকর্তার কাছে!: কুরানে বিগ্যান (পর্ব-১৬২): ত্রাস, হত্যা ও হামলার আদেশ – একশত ছত্রিশ

লিখেছেন গোলাপ

(আগের পর্বগুলোর সূচী এখানে)

"যে মুহাম্মদ (সাঃ) কে জানে সে ইসলাম জানে, যে তাঁকে জানে না সে ইসলাম জানে না।"

স্বঘোষিত আখেরি নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) হুদাইবিয়ার সন্ধিচুক্তি স্বাক্ষর সম্পন্ন করার পর (পর্ব: ১১১-১২৯) প্রায় চার বছর জীবিত ছিলেন। তিনি তাঁর ঘটনাবহুল নবী-জীবনের শেষের এই চারটি বছর (মার্চ, ৬২৮ সাল - জুন, ৬৩২ সাল) আরব, পারস্য, বাইজানটাইন (রোমান) ও ইথিওপিয়ার কিছু শাসকদের কাছে যে-চিঠিগুলো লিখেছিলেন, সেগুলো তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তিনি তাঁর কোন কোন অনুসারীদের পত্রবাহক রূপে নিযুক্ত করেছিলেন - তার আলোচনা আগের পর্বে করা হয়েছে।


প্রশ্ন ছিল:
মুহাম্মদের সেই চিঠিগুলোর ভাষা কি আপাত সহনশীল 'মক্কায় মুহাম্মদ (পর্ব-২৬)' এর বাণী-সদৃশ ছিলো? যেমন,দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি বা বাধ্য-বাধকতা নেই (২:২৫৬); তুমি কি মানুষের উপর জবরদস্তি করবে ঈমান আনার জন্য? (১০:৯৯); তুমি তো শুধু সতর্ককারী মাত্র (১১:১২); আপনি তাদের উপর জোরজবরকারী নন (৫০:৪৫); যার ইচ্ছা, সে একে স্মরণ করুক (৭৪:৫৫); তোমাদের ধর্ম তোমাদের জন্যে এবং আমার ধর্ম আমার জন্যে (১০৯:৬)” -  ইত্যাদি? নাকি তা ছিলো বানু কুরাইজার নৃশংস গণহত্যার (পর্ব: ৮৭-৯৫) পর থেকে তাঁর মৃত্যুকাল অবধি বিভিন্ন অবিশ্বাসী জনপদের ওপর তাঁর ও তাঁর অনুসারীদের অমানুষিক নৃশংসতায় অর্জিত একের পর এক উপর্যুপরি সফলতায় উজ্জীবিত 'মদিনায় মুহাম্মদ (পর্ব-২৭)' এর ত্রাস ও প্রত্যক্ষ হুমকি-সদৃশ? যেমন, "আমিই নবী, আমার বশ্যতা স্বীকার করো নতুবা পরিণতির জন্য প্রস্তুত থাকো" - এরূপ?

আল-তাবারীর (৮৩ ৮ - ৯২৩ খ্রিষ্টাব্দ) অব্যাহত বিস্তারিত বর্ণনা: [1] [2] 


দামেস্কের শাসনকর্তার কাছে চিঠি:

'ইবনে ইশাক হইতে বর্ণিত: আল্লাহর নবী বানু আাসাদ বিন খুযায়েমা গোত্রের শুজা বিন ওহাব নামের এক সদস্যকে দামেস্কের শাসনকর্তা আল মুনধির বিন আল-হারিথ বিন আবি শিমর আল-ঘাসানির কাছে প্রেরণ করেন।

মুহাম্মদ বিন উমর আল-ওয়াকিদি [৭৪৮-৮২২ খৃষ্টাব্দ] হইতে বর্ণিত: তিনি তার কাছে লেখা যে চিঠিটি শুজার মাধ্যমে পাঠান তা হলো এই,

"যে সৎ পথ অনুসরণ করে ও তা বিশ্বাস করে, তার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক। আমি আপনাকে একমাত্র আল্লাহর ওপর বিশ্বাস স্থাপনের আহ্বান করি, যার কোনো শরীক নাই, তাহলে আপনার রাজত্ব আপনারই থাকবে।"  

শুজা বিন ওহাব তার কাছে চিঠিটি নিয়ে আসেন ও তাদেরকে তা পড়ে শুনান। আল-মুনধির বলেন, "কে আছে এমন, যে আমার রাজত্ব জোরপূর্বক আমার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিতে পারে? আমি সেই লোক, যে তার বিরুদ্ধে যাবে।"  

আল্লাহর নবী বলেন, "তাঁর রাজত্ব ধ্বংস হয়ে গেছে।” 
(‘সম্ভাব্য অন্য অনুবাদ, "তাঁর সাম্রাজ্য ধ্বংস হোক!"’) [3] ----

পারস্যের শাসনকর্তার ('কিসরা/খসরু') কাছে চিঠি:

'এই বছর, আল্লাহর নবী 'কিসরার' কাছে লেখা তাঁর যে চিঠিটি আবদুল্লাহ বিন হুদাফা আল-সাহমি মাধ্যমে পাঠান, তা হলো এই:


“পরম করুণাময় ও দয়ালু আল্লাহর নামে।

আল্লাহর নবী মুহাম্মদের নিকট থেকে পারস্য অধিপতি 'কিসরার' প্রতি।

যে সৎ পথ অনুসরণ করে, তার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক, যে বিশ্বাস করে আল্লাহ ও তার রসুলকে এবং সাক্ষ্য দেয় যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো মাবুদ নাই ও সমস্ত মানবজাতির জন্য আমিই আল্লাহর রসূল, যাকে প্রেরণ করা হয়েছে সকল জীবিত লোকদের (কুরান-৩৬:৭০) সতর্ক করার নিমিত্তে। বশ্যতা স্বীকার করো, তাহলে তুমি হবে নিরাপদ। যদি তুমি তা প্রত্যাখ্যান করো, অগ্নিপূজার পাপ তোমার ওপরই বর্তাবে।"

'কিসরা' আল্লাহর নবীর চিঠিটি ছিঁড়ে ফেলেন।

আল্লাহর নবী বলেন, "তার রাজত্ব উৎপাটিত হয়েছে!” 
(‘বিকল্প অনুবাদ, "তার রাজত্ব যেন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়!"’) [4]

ইবনে হুমায়েদ < সালামাহ < মুহাম্মদ ইবনে ইশাক < ইয়াযিদ বিন আবি হাবিব হইতে বর্ণিত, যিনি বলেছেন: তিনি আবদুল্লাহ বিন হুদাফা বিন কায়েস বিন আদি বিন সায়িদ বিন সাহমি-কে পারস্যের অধিপতি হুরমুয পুত্র কিসরার কাছে যে চিঠি সহকারে প্রেরণ করেন, তা হলো:  ----- [ওপরে বর্ণিত বর্ণনারই অনুরূপ]।  

ইবনে হুমায়েদ < সালামাহ < মুহাম্মদ ইবনে ইশাক < আবদুল্লাহ বিন আবি বকর < আল-যুহরি < আবু সালামা বিন আবদুর রহমান বিন আউফ (মৃত্যু ৭১২-৭১৩ সাল) হইতে বর্ণিত: [5]

‘আবদুল্লাহ বিন হুদাফা আল্লাহর নবীর চিঠিটি কিসরার কাছে হস্তান্তর করে। পরের জন চিঠিটি পড়া শেষ করার পর তা দু' ভাগ করে ছিঁড়ে ফেলে। যখন আল্লাহর নবী শুনতে পান যে, সে তাঁর চিঠিটি ছিঁড়ে ফেলেছে, তিনি বলেন,

"তার রাজত্ব উৎপাটিত হয়েছে!” 
(বিকল্প অনুবাদ, "তার রাজত্ব যেন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়!"[4]

ইমাম বুখারীর (৮১০-৮৭০ সাল) বর্ণনা: [6]

সহি বুখারী: ভলুম ১, বই নম্বর ৩, হাদিস নম্বর ০৬৫:

'অবদুল্লাহ বিন আব্বাস হইতে বর্ণিত: আল্লাহর নবী 'খসরুর' কাছে চিঠি লেখেন ও তাঁর পত্রবাহক-কে বলেন যে সে যেন এটি প্রথমে বাহরাইনের শাসনকর্তা-কে দেয় ও তাকে বলে যে সে যেন এটি খসরুর কাছে পৌঁছে দেয়। খসরু তা পড়ার পর টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলে। (আল-যুহরি যা বলেছেন তা হলো: আমার মনে হয় আল-মুসায়েব যা বলেছেন তা হলো, "আল্লাহর নবী আল্লাহর কাছে এই দোয়া করেন যে সে যেন তাদের-কে (খসরু ও তার অনুসারীদের) টুকরো টুকরো করে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দেয়।”’

ইমাম তিরমিজীর (৮২৪ - ৮৯২ সাল) বর্ণনা: [7]


---- [ইমাম তিরমিজীর বর্ণনা আল-তাবারী ও ইমাম বুখারীর বর্ণনারই অনুরূপ।] 

- অনুবাদ, টাইটেল ও [**] যোগ - লেখক।

>>> আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় যে-বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট, তা হলো, দামেস্কের শাসনকর্তা আল মুনধির বিন আল-হারিথ আল-ঘাসানি কিংবা পারস্যের শাসনকর্তা "কিসরা", এদের কেউই মুহাম্মদ কিংবা তাঁর অনুসারীদের ওপর কোনোরূপ হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করতে আসেননি। ইতিপূর্বে তাঁরা মুহাম্মদ কিংবা তাঁর অনুসারীদের ওপর কোনোরূপ জোর জবরদস্তি বা অসম্মান করেছিলেন, এমন তথ্য কোথাও বর্ণিত হয়নি!

এমনকি নিদেনপক্ষে তাঁরা মুহাম্মদ কিংবা তাঁর অনুসারীদের ধর্ম পালন, প্রচার ও প্রসারে কখনো কোনোরূপ বিধি-নিষেধ অথবা বাধা প্রদান করেছিলেন, এমন ইতিহাস কোথাও উল্লেখিত হয়নি।

তা সত্ত্বেও,
“বিনা উস্কানিতে যে-দলটি অবিশ্বাসী গোষ্ঠীর এই শাসকদের ওপর আগ্রাসী হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করেছিলেন, তারা হলেন, "মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ ও তাঁর অনুসারীরা! বরাবরের মতই!”

আদি উৎসের ওপরে বর্ণিত বর্ণনায় আর যে-বিষয়টি অত্যন্ত স্পষ্ট, তা হলো, মুহাম্মদের এই আগ্রাসী কর্মকাণ্ডে যখন এই দুই শাসনকর্তা তাঁদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন, তখন মুহাম্মদ তাঁদেরকে যথারীতি অভিশাপ বর্ষণ করেছিলেন! মুহাম্মদ তাঁর “আল্লাহ নামের মুখোশ”-এর আড়ালে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যে কী পরিমাণ অভিশাপ বর্ষণ করেছিলেন, তার সাক্ষ্য ধারণ করে আছে 'কুরান' নামের তাঁরই স্বরচিত ব্যক্তিমানস জীবনী গ্রন্থটি! এ বিষয়ের বিস্তারিত আলোচনা 'অভিশাপ তত্ত্ব (পর্ব-১১)' পর্বে করা হয়েছে।

ইসলামী ইতিহাসের ঊষালগ্ন থেকে আজ অবধি প্রায় প্রতিটি ইসলাম বিশ্বাসী প্রকৃত ইতিহাস জেনে বা না জেনে ইতিহাসের এ সকল অমানবিক অধ্যায়গুলো যাবতীয় চতুরতার মাধ্যমে বৈধতা দিয়ে এসেছেন। বিষয়গুলো অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিধায় বাংলা অনুবাদের সাথে আল-তাবারীর মূল ইংরেজি অনুবাদের প্রাসঙ্গিক অংশটিও সংযুক্ত করছি।

The detailed Narratives of Al-Tabari (838-923 AD): [1]

According to Ibn Ishaq: The Messenger of God sent Shuja' b. Wahb, a member of the Banu Asad b. Khuzaymah, to al-Mundhir b. al-Harith b. Abi Shimr al-Ghassani, the ruler of Damascus.

According to Muhammad b. 'Umar al-Waqidi: He wrote to him via Shuja':
Peace be with whoever follows right guidance and believes in itI call you to believe in God alone, Who has no partner, and your kingdom shall remain yours. Shuja' b. Wahb brought the letter to him, and he read it to them. Al-Mundhir said: "Who can wrest my kingdom from me? It is I who will go against him!" The Prophet said, "His kingdom has perished."  -------

--- In this year, the Messenger of God sent the following letter to Kisra via 'AbdallAh b. Hudhafah al-Sahmi: In the name of God, the Merciful and Compassionate. From Muhammad, the Messenger of God, to Kisra, the ruler of Persia. Peace be with whoever follows right guidance, believes in God and His Messenger, and testifies that there is no god but God and that I am the Messenger of God to all mankind, to warn whoever is alive. Submit yourself, and you shall be safe. If you refuse, the sin of the Magians shall be upon you. Kisra tore up the letter of the Messenger of God. The Messenger of God said, "His kingdom has been torn up." -------

(চলবে)

[কুরানের উদ্ধৃতি সৌদি আরবের বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ (হারাম শরীফের খাদেম) কর্তৃক বিতরণকৃত বাংলা তরজমা  থেকে নেয়া, অনুবাদে ত্রুটি-বিচ্যুতির দায় অনুবাদকারীর।  কুরানের ছয়জন বিশিষ্ট ইংরেজি অনুবাদকারীর ও চৌত্রিশ-টি বিভিন্ন ভাষায় পাশাপাশি অনুবাদ এখানে]

তথ্যসূত্র ও পাদটীকা: 

[1] “তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুক”- লেখক: আল-তাবারী (৮৩৮-৯২৩ খৃষ্টাব্দ), ভলুউম ৮, ইংরেজী অনুবাদ: Michael Fishbein, University of California, Los Angeles, নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি প্রেস, ১৯৮৭, ISBN 0-7914-3150—9 (pbk), পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৬৮-১৫৬৯  ১৫৭১-১৫৭৩; বিনামূল্যে ডাউনলোড লিঙ্ক:

[2] অনুরূপ বর্ণনা (বিস্তারিত বর্ণনা অনুপস্থিত): “সিরাত রসুল আল্লাহ”- লেখক: মুহাম্মদ ইবনে ইশাক (৭০৪-৭৬৮ খৃষ্টাব্দ), সম্পাদনা: ইবনে হিশাম (মৃত্যু ৮৩৩ খৃষ্টাব্দ), ইংরেজি অনুবাদ: A. GUILLAUME, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস, করাচী, ১৯৫৫, ISBN 0-19-636033-1, পৃষ্ঠা ৬৫৭ ও ৬৫৮; বিনামূল্যে ডাউনলোড লিঙ্ক:

[3] Ibid আল-তাবারী, নোট নম্বর ৪৫৭, পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৬৯:
‘Another possible translation, "May his kingdom perish!"’ 

[4] Ibid আল-তাবারী, নোট নম্বর ৪৭১: পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৭২:
‘Alternative translation: "May his kingdom be torn up!"’ 

[5] Ibid আল-তাবারী, নোট নম্বর ৪৭৩, পৃষ্ঠা (Leiden) ১৫৭২:
'আবু সালামা বিন আবদুর রহমান বিন আউফ ছিলেন মুহাজির আবদুর রহমান বিন আউফের পুত্র।'

[6] সহি বুখারী: ভলুম ১, বই নম্বর ৩, হাদিস নম্বর ০৬৫:

‘Narrated By 'Abdullah bin 'Abbas : Allah's Apostle sent a letter to Khosrau and told his messenger to give it first to the ruler of Bahrain, and tell him to deliver it to Khosrau. When Khosrau had read it, he tore it into pieces. (Az-Zuhri said: I think Ibn Al-Musaiyab said, "Allah's Apostle invoked Allah to tear them (Khosrau and his followers) into pieces."


[7] সুনান আল-তিরমিজী: চ্যাপ্টার ১১, হাদিস নম্বর ০০৬ (০৮৭):
অনেক বড় হাদিস, এই পর্বের প্রাসঙ্গিক অংশ: ‘------Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam sent a letter to Kisra with Sayyidina Abdullah bin Hudhaa-fah Radiyallahu 'Anhu. Kisra tore the letter of Sayyidina Rasulullah Sallallahu- 'Alayhi Wasallam to pieces. When Sayyidina Rasulullah Sallallahu 'Alayhi Wasallam heard this he said. 'May Allah tear his kingdom to pieces', and so did it happen. ------

-------- Accept Islaam so that you may live in peace. If you reject then the sin of all the fire-worshippers will be upon you, for they will be led astray by following you. Sayyidina 'Abdullah bin Hudhaa-fah Radiyallahu 'Anhu was given this letter and instructed to give it to a governor of Kisra who was living in Bahrain. The letter was to be sent to Kisra through him. It was then delivered to Kisra with the governor's assistance. Kisra had this letter read out to him where after he tore it to pieces and threw it away. When Sayyidina Rasulullah Sallallahu'Alayhi Wasallam was informed of this he cursed Kisra.’ ----

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন