আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বরাহেও আছেন, বিষ্ঠাতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি বোরখাতেও আছেন, বিকিনিতেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি জলাশয়েও আছেন, মলাশয়েও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি উটমূত্রেও আছেন, কামসূত্রেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি আরশেও আছেন, ঢেঁড়শেও আছেন # আল্যা সর্বব্যাপী – তিনি হাশরেও আছেন, বাসরেও আছেন

মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০১৭

আমি কেন ইসলাম ছেড়েছি: প্রাসঙ্গিক বিবৃতি

মূল: খালেদ ওলিদ
অনুবাদ: আবুল কাশেম

[প্রিয় তিন বছর আগে সৌদি আরবের এক পাঠক আমাকে একটি ই-মেইল লেখেন। এটা আমার জন্য ছিল নিতান্তই অপ্রত্যাশিত ও গুরুত্বপূর্ণ। আমরা যারা ইসলামের সমালোচনা করি, তারা চিন্তাই করতে পারি না যে, ইসলামের জন্মভূমি সৌদি আরবে কিছু লোকজন আছে, যারা ইসলাম ত্যাগ করতে একপায়ে দাঁড়া, যদিও তাদের সংখ্যা নিতান্তই নগণ্য। আমার সাথে খালেদের প্রচুর ই-মেইল আদান-প্রদান হয়েছে - যদিও আজ আমার সাথে তেমন যোগাযোগ নেই। আমি খালেদের একটি ই-মেইল বাংলায় অনুবাদ করলাম। এখানে উল্লেখযোগ্য যে, খালেদের ঐ লেখাগুলি একটা বইতে প্রকাশ হয়েছে। বইটার টাইটেল হলো: Why We Left Islam. - আবুল কাশেম। ডিসেম্বর ১৩, ২০০৯]

আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন প্রতিদিন মসজিদে যেতাম। সেখানে আমি ইসলামি প্রার্থনা-শিক্ষা ছাড়াও কোরান আবৃত্তি, হাদিস এবং তফসির শিখতাম।

আমাদের মসজিদের শিক্ষক এবং অন্যান্য ইসলামি পণ্ডিতেরা আমাদের বলতেন যে, যেহেতু আমরা মুসলমান, সেহেতু আমরা হচ্ছি বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। তাঁরা আরো বলতেন যে, সৌদি আরবের মুসলমানেরা হচ্ছে একমাত্র প্রকৃত মুসলিম। সেই জন্য বিশ্বের তাবত মুসলিমরা একমাত্র সৌদি মুসলিমদের অনুসরণ করবে, অন্য কাউকে নয়। বলা বাহুল্য, আমরা একবাক্যে, কোনো প্রশ্ন ছাড়াই, দৃঢ়ভাবে ঐ সব মেনে নিতাম। কিন্তু আমরা একটুকু আশ্চর্য হতাম যে, এত বাগাড়ম্বর সত্ত্বেও বিশ্বের কেউ আমাদেরকে তাদের সমকক্ষ মনে করে না।এই ভাবে আমরা নিজেরা মুসলমান হিসাবে খুবই গর্ব বোধ করতাম। কিন্তু এখন আমি মনে করি, এসব ছিল একেবারেই মিথ্যা।

পাঠকবৃন্দ, আমি হলফ্‌ সহ বলতে পারি যে, আমি সৌদি আরবের মসজিদে যা পড়েছি এবং শিখেছি, ওসামা বিন লাদেন হুবহু তা-ই পালন করে। এতে কারো মনে কোনো সন্দেহ থাকা উচিত নয়। আমরা নিঃসন্দেহে বলতে পারি, সে একেবারে পাক্কা মুসলমান। অনুগ্রহপূর্বক আপনারা বিশ্বাস করুন যে, সৌদি আরবের প্রায় সবাই বিন লাদেনের সমর্থক এবং তাকে দারুণভাবে তাকে ভালবাসে তার কার্যকলাপের জন্য।

বিন লাদেনের ক্রিয়াকলাপের জন্য আমরা কি তাকে দোষী করতে পারি? কক্ষনো না। তার পরিবর্তে আমাদের ইঙ্গিত করতে হবে ইলামের প্রতি। বিন লাদেন তো অক্ষরে অক্ষরে ইসলাম পালন করছে। সে নিঃসন্দেহে ইসলামের নির্ভীক সেনানি, একেবারে খাঁটি মুসলমান।

এখন আমার কথায় আসা যাক। আমার ইসলাম ছাড়ার ঘটনা শুরু হয় আমি যখন পঞ্চম গ্রেডের ছাত্র। আমি কোরানের সুরা আল-কাহফ্‌ আয়াত ৮৬ (১৮:৮৬) পড়লাম। এখানে লেখা আছে, যখন জুলকারনাইন সূর্যাস্তের প্রান্তে পৌছাল, তখন সে দেখল, অনেক লোক সূর্যের প্রচণ্ড তাপে অসহনীয়ভাবে পীড়িত। এর কারণ হল - সূর্য‌টা তখন ঐ লোকদের খুব কাছাকাছি ছিল। ঐ একই ঘটনা ঘটল যখন সে সূর্যোদয়ের প্রান্তে পৌঁছাল।

আমি ভাবলাম: এটা কীভাবে সম্ভব! পৃথিবী তো একটা বলের মত গোলাকার। তাহলে জুলকারনাইন কেমনভাবে পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে পৌঁছাল? আমি আমার শিক্ষককে এ বিষয়ে জিজ্জাসা করলাম। আমার শিক্ষক একেবারে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলেন। তিনি কোনো উত্তর দিতে পারলেন না, শুধু বললেন, কোরানে যা লেখা আছে, তাতেই বিশ্বাস করতে হবে - কোনো প্রশ্ন করা চলবে না।এই ভাবে কোরানের প্রতি আমার সংশয় শুরু হয়।

এরপর একটা বিশাল বিস্ময় আমার মনকে পীড়িত করলো। আমি জানলাম যে, আমি যদি ভাল মুসলিম হতে চাই, তবে আমাকে অবশ্যই অমুসলিমদের থেকে দূরে থাকতে হবে। আরো বিস্মিত হলাম এই জেনে যে, আমি যদি অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব করি, তা হলে আমি কাফের হয়ে যাব।

আমি অন্যান্য ক্রিয়াকলাপের মত চলচ্চিত্র দেখা, গান শোনা এবং খেলাধূলায় পারদর্শীদের সাথে বন্ধুত্ব করা খুবই পছন্দ করতাম। এদের বেশির ভাগই ছিল অমুসলিম। এখন ইসলামের নীতি অনুযায়ী, আমি সত্যিই কাফের হয়ে গেছি। আমি শিখেছি যে, স্বর্গে যেতে হলে নবী মোহাম্মদকে শর্তহীনভাবে ভালবাসতে হবে, যদিও আমি কোনোদিনই তাঁকে দেখিনি। এখন আমি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলাম যে, আমার স্থান নরকে।

আমি ইমামদের কথাবার্তা শুনে আরো বিক্ষুব্ধ হলাম। তারা অত্যন্ত গালিগালাজপূর্ণ ভাষায় অমুসলিমদের আখ্যায়িত করলো বানর এবং শূকরের নাতি-নাতনি বলে। আমি চিন্তা করলাম, যদি কেউ পাপ করে, তার শাস্তি আল্লাহ্‌ দেবেন। আমাদের ইমামরা কেনই বা ওদের অপমানজনকভাবে নিন্দা এবং বিদ্রূপ করবে?

আমি আরো বিস্মিত হলাম, যখন আমার মুসলিম বন্ধুরা এবং আমার নিজের ইমাম বললো, যেহেতু অমুসলিমরা মুসলিমদের শত্রু, সেহেতু আমাদের কর্তব্য হবে সর্বভাবে অমুসলিমদের হেয় প্রতিপন্ন করা এবং তীব্র ভাষায় কটূক্তি করা। আমি তাদের কথায় রাজি না হওয়ায় তারা আমাকে দুর্বল মুসলিম আখ্যায়িত করল। তারা আমাকে এটাও বললো যে, একজন বিদেশী না জানা (নাকি "অচেনা"?) মুসলিম একজন অতি পুরাতন বিশ্বস্ত কাফের বন্ধুর চাইতে অনেক ভালো।

আমি কিন্তু আমার প্রশ্ন থেকে বিরত থাকলাম না। সবচাইতে উল্লেখযোগ্য, যে-প্রশ্ন আমার মনে সর্বদা বিরাজমান ছিল, সেটা হলো: এ কেমন আল্লাহ্‌, যিনি নিজেকে সবসমই পরম দয়ালু ও ক্ষমাশীল হিসেবে দাবি করেন, অথচ তিনি কেমনভাবে তাঁর প্রিয় বান্দাদের একে অপরের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করতে বলেন? কিঞ্চিৎ অবিশ্বাস করলে আল্লাহ্‌ কেন আগুনে পোড়ানোর এবং অসীম নির্যাতনের ভীতি প্রদর্শন করেন তাঁরই সৃষ্ট মানবকুলের প্রতি? আল্লাহ্‌ কি আমাদের উপাসনার জন্য এতই কাঙাল? আমরা সর্বদা তাঁর উপাসনা করি, এটা কি তাঁর জন্য সত্যিই এত গুরুত্বপূর্ণ?

এই সব প্রশ্ন নিয়ে আমি গভীর চিন্তা করলাম। আমি কোরান ঘেঁটে ঘেঁটে দেখলাম যে, আমাদের নিয়তি আল্লাহ্ আগেই নির্ধারিত করে দিয়েছেন। কে স্বর্গে যাবে, কে নরকে যাবে - সে তো আল্লাহ্‌ বহু পূর্বেই ঠিক করেছেন। যুক্তিযুক্ত কারণে তাই বলা যায় যে, প্রার্থনা করে কী-ই বা হবে? আমি যখন এই প্রশ্ন ধর্মপ্রাণ মুসল্লীদের করলাম, তখন ওরা আমার প্রতি ভীষণ ক্রদ্ধ হয়ে গেল। ওরা আমাকে জিজ্ঞাসা করল, আমি পূর্ব থেকে কেমন করে জানি আমার স্থান কোথায় - স্বর্গে না নরকে? আমি উত্তর দিলাম, যেহেতু আল্লাহ্‌ আমাদের সবার পরিণতি আগেই ঠিক করে দিয়েছেন, কাজেই নামাজ পড়া আর না পড়া কোনো পার্থক্য আনবে না। ওরা আমাকে বিকৃতমস্তিষ্ক ঠিক করল, কারণ আমি আল্লাহ্‌র ব্যাপারে সন্দেহ করেছি।এই ভাবেই ইসলামের প্রতি আমার ঘৃণার শুরু। কিন্তু সৌদি আরবে আমি হলাম অসহায়। আমি যে-সমাজে বাস করি, সেখানে খোলাখুলি ভাবে বে-ইসলামি কিছু করা যাবে না।

১৯৯৯ সালে আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন, এবং কিছুদিন পরে মারা যান। এই ঘটনা আমার জীবনের মোড় পরিবর্তন করে দেয়। আমি চিন্তা করে বুঝলাম, আমরা, মুসলিমরা, কোনোক্রমেই বিশ্বের শ্রেষ্ঠ জাতি নই। অন্যান্যদের মতো আমরাও পীড়িত হই এবং সময়ের সাথে আমরাও মারা যাই। আমি এটাও বুঝলাম যে, পরিশ্রমী হলে আমরাও উন্নতির পথে অগ্রসর হতে পারি। আর তা যদি না করি, তবে আমাদের পশ্চাদপদতা একেবারে সুনিশ্চিত। 'আল্লাহ্‌র ইচ্ছা' বলতে কিছুই নেই। মুসলিমদের বিশেষ স্থানের দাবি নিতান্তই হাস্যকর।

আজ আমি যখন ইসলামি বিশ্বের প্রতি তাকাই, শুধুই দেখি চরম অন্যায়, অবিচার এবং নারী ও কাফেরদের প্রতি অসীম বৈষম্যমূলক আচরণ আর নগ্নভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন। ইসলামি জগতে সীমাহীন অরাজকতা ও দুর্নীতির কথা না-ই বা বললাম। আমরা পরিষ্কার দেখি যে, ইসলামি বিশ্ব এক গভীর সমস্যায় নিমজ্জিত।আমি নিজেকেই প্রশ্ন করি: "ইসলামি বিশ্বের এই অসীম দুর্গতির কারণ কী?" আমি আবার নিজেই বিশ্বাসযোগ্য উত্তর পাই - সেটা হল ইসলাম। আমি এখন সন্দেহাতীত যে, ইসলাম হচ্ছে একটা অর্থহীন, মূঢ় এবং ভুল ধর্ম।

দুঃখের বিষয় হলো: ইসলামের প্রতি আমার ঘৃণা বৃদ্ধি সত্ত্বেও আমি ইসলামকে আমার জীবন হতে বিতাড়িত করতে পারিনি। মনের গভীরে আমি চিন্তা করতাম যে, ইসলাম এত খারাপ হতে পারে না - হয়তবা সমস্যাটা মুসলিমদের জন্য - ইসলামের জন্য নয়।

কিন্তু ৯/১১-এ আমি যা দেখলাম, সে তো ইসলামের প্রকৃত রূপ। আমি বিস্মিত হয়ে আমাদের লোকদের মুখে দেখলাম সহাস্যতা এবং সুখের ছায়া। তার কারণ হলো, এত সহজেই অগুনতি কাফের মেরে ফেলা যায়, সেটা চিন্তাই করা যায় না। আমি অসীম বেদনার সাথে লক্ষ্য করলাম আমার লোকদের উল্লাস - যেহেতু এত বেশি নিরীহ কাফের মারা গেছে। আমি দেখলাম, প্রচুর মুসলিম আল্লাহ্‌কে শুকরিয়া জানালো এই নির্দয় হত্যাকাণ্ডের জন্য। এই সব ইসলামি জনগণ ভাবে যে, আল্লাহ্‌ মুসলিমদের কামনা বাসনা পরিপূর্ণ করেছেন। এই ভাবেই বুঝি শুরু হল জগত জুড়ে কাফের ধ্বংসের খেলা। আমার কাছে এ সব ছিল নিতান্তই অমানবিক আচরণ।

এর কিছুদিন পর আমাদের ইমাম আল্লাহ্‌র কাছে প্রার্থনা করলেন তালিবানদের বিজয়ের জন্য - মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে। তখন আমি নিতান্তই ক্রুদ্ধ হয়ে নামাজ পড়া ছেড়ে দিলাম।

২০০৪ সালে আমার পাকিস্তানি ম্যানেজারের সাথে আমার ঘনিষ্ঠতা হয়। আমার বিশ্বাস, তিনি বেশ ইসলাম-বিরুদ্ধ ছিলেন। তাঁর সংস্পর্শে আসার ফলে আমার মানবচেতনা ফিরে আসে। তিনি আমাকে আশ্বাস দেন যে, আমি বিকৃতমস্তিষ্ক নই। এর পর আমি মসজিদে যাওয়া বন্ধ করে দিলাম এবং রমজান মাসের রোজা রাখা হতে বিরত থাকলাম। গত বছর আমি একটি রোজাও রাখিনি।

আমার জীবন হতে ইসলাম মুছে দেয়ার পর আমি এখন কতই না মুক্ত এবং সুখী বোধ করছি! নিজেকে আর আমি দোষী বা অপরাধী ভাবি না। আমি এখন কোনো চিন্তা ছাড়া চলচ্চিত্র উপভোগ করতে পারি - গানও শুনতে পারি। আমার মনে হয়, আমার যেন নতুন জন্ম হয়েছে - আমি এখন সর্বভাবে মুক্ত ও আমার যা ভাল লাগে, তাই-ই করতে পারি।

আমি আশা রাখি, ভবিষ্যতে আমি ভয়ংকর ইসলাম সম্বন্ধে অনেক কিছু লিখব। আপনাদের ওয়েব সাইটকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি - এর কারণেই আমি আজ আর একাকী বোধ করি না। এখন আমি সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত, আমি ভুল করিনি।

ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছান্তে।

খালেদ
সৌদি আরব, জানুয়ারী ১৩, ২০০৬

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন