জীবনানন্দ দাশ-এর বনলতা সেন কবিতার প্যারোডি লিখেছেন নাস্তিকথন
কাজী নজরুল ইসলামের 'আমি হব' কবিতার প্যারোডি লিখেছেন নাস্তিকথন
হাজার বছর ধরে আমি ডাকাতি করিতেছি হেজাজের পথে,
উত্তপ্ত মদিনা থেকে নিশীথের অন্ধকারে উহুদ বদরে
অনেক লুটেছি আমি; কোরায়জা মোস্তালিকের ধূসর জগতে
মক্কায় ছিলাম আমি; আরো দূর অন্ধকারে বিদর্ভ নগরে;
আমি অতৃপ্ত প্রাণ এক, ঘরেতে ৬৫ পার খাদিজা ছিলেন,
আমারে ঈমানদণ্ড-শান্তি দিয়েছিল মেরাজের হানিলতা সেন।
চুল তার কবেকার অন্ধকার বিদিশার নিশা,
মুখ তার বেহেস্তের কারুকার্য; অতিদূর মরুভূমির ’পর
উট হারিয়ে যে-বেদুইন হারায়েছে দিশা
ধূসর বালির দেশ যখন সে চোখে দেখে বালিচিনি-দ্বীপের ভিতর,
তেমনি চেখেছি তারে অন্ধকারে; বলেছে সে, ‘এতদিন কোথায় ছিলেন?’
খেজুর বিচির মতো চোখ তুলে মেরাজের হানিলতা সেন।
সমস্ত মেরাজ শেষে জিকিরের শব্দের মতন
সকাল আসে; জিহ্বায় হানির গন্ধ চোখদুটো নীল;
হিজরের সব সাহাবা জেগে গেলে খোঁজাখুঁজির করে আয়োজন
তখন ফাঁদি কল্পগল্প - আসমান ভ্রমণের রঙে ঝিলমিল;
বুড়ি বউয়ের ঘরে ফিরি - আমি নবী - ফুরায় এ জীবনের সব লেনদেন;
থাকে শুধু অন্ধকার, মুখোমুখি বসিবার হানিলতা সেন।
⬤
আমি হব মেরাজ রাতের পাখি
কাজী নজরুল ইসলামের 'আমি হব' কবিতার প্যারোডি লিখেছেন নাস্তিকথন
আমি হব মেরাজ রাতের পাখি,
গভীর রাতে হানির দ্বারে উঠব আমি ডাকি।
সুয্যি মামা জাগার আগেই উঠবে হানি জেগে,
"হয়নি মেরাজ, একটু আরো" - বলব আমি রেগে।
বলবে হানি, "লুচ্চা নবী, মেরাজে তুমি থাক।
হয়নি মেরাজ, তাই বলে কি সকাল হবে না ক।
আমরা যদি না জাগি তো কেমনে সকাল হবে?"
"হানির মধু খেলে পরেই মেরাজ হবে তবে।"
⬤
রাত পোহাবার বাকি কতখানি, হানি?
রাত পোহাবার বাকি কতখানি, হানি?
এখনো আমার আসমান ভরা মেঘে
কাফিরেরা সব এখনো ওঠেনি জেগে?
তুমি মাস্তলে, আমি দাঁড় টানি সুখে;
অসীম খায়েশে জাগে অতৃপ্তির গ্লানি।
রাত পোহাবার বাকি কতখানি, হানি?
দীঘল রাতের শ্রান্ত মেরাজ শেষে
কোন আসমানের নীল দিগন্তে আমরা পড়েছি এসে?
এ কী ঘন-মণি জিন্দেগানীর বা’ব
তোলে মর্সিয়া ব্যথিত দিলের তুফান-শ্রান্ত খা’ব
অস্ফুট হয়ে ক্রমে যায় ডুবে ইমানদণ্ডখানি।
তুমি মাস্তুলে, আমি দাঁড় টানি সুখে;
গড়িয়ে পড়ছে শুভ্র নোনতা পানি
রাত পোহাবার বাকি কতখানি, হানি?
হিজরে বসে সাহাবারা ক্ষণ গোনে,
বুঝি মৌসুমী হাওয়ায় মোদের মেরাজের ধ্বনি শোনে,
বুঝি কুয়াশায়, জোছনা-মায়ায় ইমানদণ্ড দেখে।
আহা, পেরেশান সাহাবার দল।
হিজর কিনারে জাগে বঞ্চিত
কামনায় ছবি এঁকে!
মরু-সুন্দরী শুভ্র বোরাকে চড়ে
চলেছি কোথায়? কোন সীমাহীন দূরে?
তুমি মাস্তুলে, আমি পানি সেচি সুখে;
মেরাজ রাতের কামনার দাঁড় টানি!
রাত পোহাবার বাকি কতখানি, হানি?
শুধু গাফলতে শুধু খেয়ালের ভুলে,
টানাটানি করে জোব্বা নিয়াছ খুলে,
আমাদেরি ভুলে ক্বাবার কিনারে সাহাবার দল বসি
দেখেছে সভয়ে অস্ত গিয়াছে তাদের সেতার, শশী
মোদের ভাবিয়া ধুলায় লুটায়ে পড়ি।
কেটেছে তাদের হস্তসুখের বিস্বাদ শর্বরী।
আকাশ ঘুরেছি, আকসা দেখেছি ওঠায়েছি আহাজারি,
ভাঁওতাবাজি ধরা পড়ে গেছে, আওয়াজ শুনছি তারি।
ওকি বাতাসের হাহাকার, ও কি
রোনাজারি কাফিরের!
একক রমণী মেটাতে পারে না পিয়াস মুসলিমের!
ও কি ধাতুর থলেতে বাজে কামনার জয়ধ্বনি।
ওগো হানি!
চল মেরাজ করি, বুড়ি পত্নীর নিষেধ থোরাই মানি
দেখ দশ বছরের ক্ষুধিত নবীর গোপন চাহিদাখানি !
দেখ চেয়ে দেখ সূর্য ওঠার বাকি আছে কতখানি, আহ্, হানি!
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন