মঙ্গলবার, ১৬ মে, ২০১৭

সৌদি আরব কি ইসলামী সন্ত্রাসীদের পক্ষে না বিপক্ষে? - ৪

মূল: খালেদ ওলীদ
অনুবাদ: আবুল কাশেম

[ভূমিকা: ডিসেম্বর ও ফেব্রুয়ারি মাসে খালেদ ওলিদের ইসলাম পরিত্যাগের জবানবন্দির ও সৌদি নারীদের অবস্থা অনুবাদ করেছিলাম। তখন লিখেছিলাম, খালেদ আমাকে অনেক ই-মেইলে সৌদি আরাবের ইসলাম সম্পর্কে লিখেছিল। এখানে আমি তার আর একটি লেখা অনুবাদ করে দিলাম। উল্লেখযোগ্য যে, খালেদের এই লেখাটি একটা বইতে প্রকাশ হয়েছে। বইটার টাইটেল হলো: Why We Left Islam. - আবুল কাশেম, এপ্রিল ৪, ২০১০]


সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কী হচ্ছে?

এ পর্যন্ত আমি যা লিখেছি, তা হলো সৌদি বিদ্যালয়সমূহে কী হচ্ছে, তার এক সংক্ষিপ্ত বর্ণনা। নিরাশার কথা হলো, সৌদি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও ঐ ভয়ংকর ইসলামী প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। সৌদি আরবের সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্যে ধর্মীয় শিক্ষা একেবারে বাধ্যকতামূলক। এই সব বিষয় না সম্পন্ন করলে কোনো ছাত্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাবে না। সঙ্গত কারণেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মীয় শিক্ষা বিদ্যালয়ের মত ততটা ব্যাপক নয়। যাই হোক, বিদ্যালয়ের ছাত্রদের মতই তাদেরকে ধর্মীয় বিভাগের অপরিসীম উৎপীড়ন সহ্য করতে হয়। প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে ন্যূনতম চারটি ইসলামী সংস্কৃতি বিষয় পড়তে হবে। এ ছাড়াও যারা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র, তাদেরকে পারদর্শীতা দেখাতে হবে ন্যূনতম এক জুজের কোরআন। এখানে বলা নিতান্তই নিষ্প্রয়োজন যে, বিদ্যালয় জীবনে যে নির্বোধ ও জড়বুদ্ধিপ্রসূত ইসলামী অত্যাচার শুরু হয়েছিল, তা বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত গড়িয়ে পড়েছে, শুধু একমাত্র উদ্দেশ্যেই - আর তা হলো, অমানবিক ইসলামকে বাঁচিয়ে রাখার জন্যে।


কয়েক বছর আগে রিয়াদে অবস্থিত মুহাম্মদ বিন সাদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আদেশ দেয়া হলো যে, তাদের ফজরের (প্রভাত) নামায পড়তে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের জামাতে (দলবদ্ধভাবে)। কোনো ছাত্রই তার কক্ষে প্রভাতের নামায পড়তে পারবে না। এর অর্থ হলো, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেক ছাত্রকে প্রত্যুষে উঠেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের দিকে রওয়ানা হতে হবে। এই অসহ্য ব্যবস্থা আইন অনুযায়ী পরিচালিত করার জন্যে মসজিদের ইমামকে ছাত্রদের হাজিরা নেবার ক্ষমতা দেয়া হলো। কিন্তু হাজিরা নেওয়া হবে নামাযের পর - নামাযের আগে নয়। কোনো ছাত্র যদি কোনো ভাল কারণ ছাড়া পরপর তিন দিন অনুপস্থিত থাকে, তবে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে বাস করার সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হবে। কিছু সময়ের পর এই ব্যবস্থা উঠিয়ে নেওয়া হোল। এটা ধর্মীয় লোকদের কোনো অনুকম্পার জন্যে নয়। দেখা গেল যে, ঐ কঠোর নিয়ম চালু করার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস প্রায় শূন্য হয়ে যায়। এই অবস্থা এমন চরম পর্যায়ে চলে গেল যে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাধ্য হলো ছাত্রাবাস বন্ধ করে দিতে। এখন অবস্থা এমন পর্যায়ে যে, কয়েকটি ছোট বিশ্ববিদ্যালয় ব্যতীত সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসগুলো বন্ধ পড়ে আছে।

কিন্তু এতে ওহাবিদের কী ই বা আসে যায়। এরা অনেক স্থানেই প্রচুর প্রভাবশালী এবং যা চাচ্ছে তা ই পাচ্ছে। তারা সৌদি আরবের সর্বত্র পুরুষ এবং মহিলাদের জন্যে ইসলামী মহাবিদ্যালয় (কলেজ) ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করতে বদ্ধপরিকর। মদিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা শাখায় নিয়ম করা হয়েছে যে, ছাত্রদেরকে আইনানুগ লিখিত দলিলে সই করতে হবে যে, যতদিন তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকবে, ততদিন তারা তাদের দাড়ি ছাঁটতে পারবে না। কোনো ছাত্র যদি ঐ আইনের ধারা লঙ্ঘন করে, তবে বিশ্ববিদ্যালয় তাকে বহিষ্কারের অধিকার রাখবে। এই সব অদ্ভুত এবং জড়বুদ্ধিসম্পন্ন নিয়ম ছাড়াও নিয়ম আছে যে, কোনো ছাত্র কাফেরদের পোশাক পরতে পারবে না। তার মানে হচ্ছে, ছাত্ররা জিনস্‌ অথবা টি শার্ট পরতে পারবে না। কোনো ছাত্র যদি ঐ ধরনের কোন পোশাক পরে ক্লাসে যায়, তবে তাকে সেই ক্লাস থেকে বহিষ্কার করা যাবে।

পাঠকরা লক্ষ্য করুন যে, কয়েক বছর আগে, আমি যেই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (মুহাম্মদ সাদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়) কথা লিখলাম, সেখানের এক পোস্টগ্রাজুয়েট ছাত্র পি.এইচ.ডি পেল। তার গবেষণার বিষয় ছিল আরব বিশ্বের একশত পণ্ডিত ও চিন্তাবিদদের কাফেরী করা। এই পি.এইচ.ডি ধারণকারীর মতে অনেক মুসলমান যারা সাংবাদিক, অভিনেতা, গায়ক ও যেসব মুসলমান, যারা নিজেদেরকে মধ্যপন্থী (মডারেট) বলে পরিচয় দেয়, তারা হচ্ছে কাফের। এদের একমাত্র সাজা হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড।

সৌদি আরবে নারীশিক্ষার কী হচ্ছে?

এতক্ষণ আমি সৌদি ছেলেদের লেখাপড়ার ব্যাপারে লিখলাম। এই পড়ে আপনারা যদি কাতর হয়ে যান, তবে চিন্তা করুন এখানকার নারীদের শিক্ষার নামে কী হচ্ছে। সভ্য বিশ্বের কাছে এ তো কল্পনারও বাইরে যে, আমাদের দেশের মেয়েরা কী সীমাহীন ধর্মীয় যন্ত্রণার শিকার। আপনারা কেউ বিশ্বাস করবেন না, আমাদের দেশের ছাত্রীরা কী পরিমানে লাঞ্ছিত হচ্ছে ধর্মীয় গুরুদের দ্বারা। ঐ আরব মেয়েদের দুরবস্থার কথা লেখার ভাষা আমার নেই। তবুও এখানে আমি কয়েকটা উদাহরণ দিলাম, যা থেকে আপনারে জানতে পারবেন কীভাবে আমাদের দেশের ছাত্রীদেরকে আমাদের ধর্ম দফতর নিয়মিতভাবে হয়রানি করে বেড়ায়।

⬛ ধর্ম দফতরের ক্ষমতা আছে কোনো নোটিশ কিংবা কোনো অনুমতি ছাড়াই যে কোনো সময় যে কোনো ছাত্রীর বাসস্থল (হোস্টেল কক্ষ) পরীক্ষা করতে পারে। কর্তৃপক্ষের ক্ষমতা আছে কোনো ছাত্রীর কক্ষের টেলিভিশন, সাময়িক পত্রিকা, মুঠোফোন বাজেয়াপ্ত করার।

⬛ ছাত্রীরা বাধ্য হয় তাদের ব্যবহারের জন্য দৈনিক জিনিসপত্র লুকিয়ে রাখতে। এ না করলে তারা ধর্মদফতরের শকুনি দৃষ্টি এড়াতে পারবে না। কারণ হচ্ছে যে, হয়তো ধর্ম-পুলিশ ঐ সব ব্যবহারের দ্রব্য পছন্দ করে না।

⬛ কোনোক্রমেই মেয়েরা ছাত্রীআবাসের বাইরে যেতে পারবে না। তাদেরকে তাদের নিজস্ব কক্ষে সর্বদা বন্দিনীর জীবনযাপন করতে হবে। একমাত্র মেয়ের মাহ্‌রম অথবা মেয়ের মালিকই অথবা মেয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক মেয়েকে ছাত্রীআবাসের বাইরে নিতে পারবে।

⬛ যেসব মেয়েরা দূরবর্তী অঞ্চল থেকে আসে এবং যাদের মাহ্‌রম মেয়েদের ব্যাপারে উদাসীন সেসব মেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পূর্ণ খোলা সময় পর্যন্ত ছাত্রীআবাসের কক্ষে থাকতে হবে। অর্থাৎ মধ্যবর্তীকালীন ছুটির সময়েও ঐ মেয়েরা হোস্টেলের বাইরে যেতে পারবে না। এটা তো মনে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সামিল। এই মেয়েদের জীবন একটা চক্রের মত—বাসে ওঠা, ক্লাসে বসা, বাসে করে হোস্টেলে ফিরে আসা, খাওয়া ও ঘুমানো। ওদের কিছুর প্রয়োজন হলে ওরা টাকা দিয়ে দেয় তার জন্যে নির্ধারিত মাহ্‌রমের হাতে। মাহ্‌রম যা আনবে তা ই গ্রহণ করতে হবে। এই মেয়েদের জীবন সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে তাদের হোস্টেলের মাহ্‌রমের ওপর।

⬛ অন্তবর্তীকালীন ছুটির সময় এই সব মেয়েদের তাদের জন্যে নির্ধারিত বাসে চড়তে হবে। বাস যখন গন্তব্যস্থলে পৌঁছবে, মেয়েটি কোনোক্রমেই একলা পায়ে হেঁটে তার বাড়িতে যেতে পারবে না। তাকে অপেক্ষা করতে হবে, যতক্ষণ না তার মাহ্‌রম বাস স্ট্যান্ডে এসে তাকে নিয়ে বাড়িতে যায়। মেয়েদের প্রতি এই সীমাহীন দুর্গতি চাপিয়ে দেয়া হয় একমাত্র কারণে—যেন মেয়েটি কোনোক্রমেই কোনো পরপুরুষের সাথে কথা বলতে অথবা দেখা করতে না পারে।

তবে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে যে, উচ্চশিক্ষার জন্য প্রত্যেক উচ্চশিক্ষার্থী সৌদিরা চায় বিদেশে পাড়ি দিতে। তারা চায়, যে কোনো প্রকারে হোক তাদেরকে সৌদি আরব থেকে বের হতে হবে। তবে বিদেশে যাবার আগে এই শিক্ষার্থীদেরকে দুই সপ্তাহের এক পরিচিতি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে হয়। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, কেমন করে ওরা কাফেরদের নৈতিক কলুষতা থেকে নিজেদের রক্ষা করবে। এই পরিচিতি অনুষ্ঠান সাধারণত আয়োজন করে থাকে, যেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদেরকে বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। এই পরিচিতি অনুষ্ঠানে এই সব ব্যাপারে অনুশীলন দেওয়া হয়:

⬛ কেমন করে কাফেরদের থেকে নিজেকে বহু দূরে রাখা যায়।

⬛ কোনো কাফের যদি ইসলাম সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে, তবে সবচাইতে ভাল উত্তর কী দিতে হবে।

⬛ যদি কোনো কাফের ইসলাম সম্বন্ধে বিব্রতকর প্রশ্ন করে, তবে তার কেমন করে যথাযথ উত্তর দিতে হবে।

⬛ কোনো কাফের যদি ভোজসভায় আমন্ত্রণ জানায়, তবে করণীয় কী।

⬛ কাফের যদি কোনো পানীয় পান করতে দেয়, তবে কী করতে হবে।

⬛ যদি হারাম খাদ্য দেয়া হয়, তবে তার করণীয় কী।

⬛ কেমন করে কাফেরদের নৈতিক অধঃপতন ও দূষিত সংস্কৃতি থেকে নিজেকে রক্ষা করে শিক্ষা শেষে দেশে ফিরে আসা।

মোদ্দা কথা, এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, কোনোক্রমেই যেন সৌদি ছাত্ররা অ মুসলিম ছাত্রদের দ্বারা প্রভাবিত না হয়।

এই প্রবন্ধের শেষের দিকে আমি একটি সংবাদ উদ্ধৃতি দিচ্ছি (আরব নিউজ) যা থেকে আপনারা আঁচ করতে পারবেন যে, ইসলামে কী ধরনের সহিষ্ণুতা আছে। এ ছাড়াও দেখা যাবে সৌদি সরকার ইসলামী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কী করছে।

মঙ্গলবার, ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০০৬: এক ফুলের দোকানদার নৈতিক পুলিশের (moral police) হয়রানি এড়াবার জন্যে তিন দিনের জন্যে দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আল ওয়াতান জানিয়েছে যে ভ্যালেন্টিন দিবসে নৈতিক বিশুদ্ধতার উন্নতি ও নৈতিক অধঃপতন রোধ করার কমিটি খুবই তৎপর হয়ে উঠে। ধর্মীয় পুলিশ এই দিনটিকে ধরে অনৈতিক ব্যবহার বৃদ্ধির দিন হিসেবে গণ্য করে থাকে। তাই নৈতিক পুলিশের উৎপাত থেকে মুক্তির জন্য ফুলের দোকান থেকে ভ্যালেন্টিন দিবসের এক দিন আগে, ঐ দিনটিতে এবং ঐ দিনের এক দিন পর পর্যন্ত লাল গোলাপ উধাও হয়ে যায়। এই টা বিশেষতঃ দেখা যায় রিয়াদের ফুলের দোকানগুলোতে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে জানি যে, অনেক ফুলের দোকান ভ্যালেন্টিন দিবসে বন্ধ থাকে, এর কারণ হলো, গত বছর ভ্যালেন্টিন দিবসে দোকান খোলা রাখার জন্যে ঐসব দোকানগুলোকে জরিমানা করা হয়। যদিও তারা লাল গোলাপ বিক্রি করে না তথাপিও ফুলের দোকানগুলোকে ভ্যালেন্টিন দিবসে বন্ধ রাখতেই হবে। ধর্মীয় পুলিশ জোরজবরদস্তিমূলকভাবে ফুলের দোকানগুলোকে বন্ধ করে দেয়, কেননা ওরা চায়না যে, ছাত্র ছাত্রী এবং তরুণ তরুণীরা কাফেরদের অনুকরণ করুক। এই ধর্মান্ধ সৈনিকেরা উদ্বিগ্ন থাকে যে, দেশের তরুণেরা না জানি কাফেরদের প্রেমে পড়ে যায়। এখানে উল্লেখ্য যে, আমাদের দেশের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ কোনোদিনই সহ্য করবে না যে, আমাদের কেউ কোনোদিন কাফেরদেরকে ভালবাসে। কর্তৃপক্ষ সর্বদা ব্যস্ত আছে সৌদিদের মনে কাফেরদের প্রতি অতীব ঘৃণা ও শত্রুতা সৃষ্টি করতে যাতে করে কোনো সৌদির হৃদয়ে কোনোভাবেই যেন অ মুসলিমদের প্রতি সহানুভূতি ও অনুকম্পার উদ্রেক না হয়। দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে খুবই জয়ী। এরা প্রচণ্ড দমন নীতি, আতঙ্ক, সন্ত্রাস ও আইনী সাজা আরোপের মাধ্যমে সৌদিদের মনে কাফেরদের প্রতি অতীব ঘৃণা ও অবজ্ঞার ভাব সৃষ্টি করতে সফল হয়েছে। এ-ই হচ্ছে ইসলামের সর্বগ্রাসী শক্তি।

উপসংহারে আমাকে বলতে হচ্ছে যে, সৌদি আরবে প্রেম ও ভালবাসার কোনো স্থান নেই। প্রেম ও ভালবাসার যে কোনো প্রতীক প্রকাশ করা এক মহাপাপ এবং এই পাপ এক দণ্ডার্হ অপরাধ, যার জন্যে গুরুতর শাস্তি পর্যন্ত পেতে হয়। এই সব অমানুষিক অত্যাচার ও অমানবিক আচরণ সরকারের নাকের ডগায় করা হচ্ছে কিন্তু সরকার নির্বিকার। সত্যি বলতে কি, এই সব অসভ্য কীর্তি কলাপ সরকারী অর্থ এবং পৃষ্টপোষকতায়ই চালানো হচ্ছে। এখানে লক্ষণীয় যে, সৌদি আরবে যে সমস্ত ইসলামী সংস্থা আছে, সে সবগুলোই সৌদি সরকার দ্বারা সমর্থিত। এর ফল এই যে, সৌদি সরকার ইসলামী ধর্মান্ধদের নীরব সমর্থক। সরকারের এই নীরব সমর্থনের কারণ এই যে, যাতে কেউ কোনোভাবেই যেন রাজপরিবারের সমালোচনা করতে না পারে। সংক্ষিপ্তভাবে ইসলামী সন্ত্রাসের প্রতি সৌদি রাজপরিবাবের নীতি হলো এই: দরকার হলে তোমরা (ইসলামী সন্ত্রাসীরা) সমস্ত বিশ্বে আগুন লাগিয়ে দাও; কিন্তু কোনোভাবেই আমাদের বিরুদ্ধে কিছু করবে না অথবা বলবে না।

কাজেই আমরা কেমন করে বিশ্বাস করি যে, সৌদি আরব ইসলামী সন্ত্রাসীর বিপক্ষে? অনুগ্রহপূর্বক একটু চিন্তা করে দেখুন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন