বৃহস্পতিবার, ১ জুন, ২০১৭

ধর্মপচারক কথা

দাঁড়িপাল্লা ধমাধম

এই ধমাধমের পাল্লা হয়ে ওঠার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ধর্মকারী এবং 'একজন ধর্মপচারকের'।


সৈকত চৌধুরী

ধর্মপচারক ভাইকে আলাদাভাবে স্মরণ রাখার কিছু নেই, তিনি আমার অস্তিত্বের সাথে মিশে আছেন। ধর্মের কথা ভেবে যখনই মানুষ হাসবে, সে হাসির মধ্যে তিনি জীবন্ত হয়ে থাকবেন।

‘‘কোথায় আজ গেলি সব-
হাঁক ছেড়ে ডাক দে
জোরসে ধরে সব ধর্মকে বাঁশ দে’’


চার্বাক কাজী


তির্যক বাক্যও যে হতে পারে শিল্পশৈলী, অভিজ্ঞ হাতে বিদ্রূপ ও হাস্যরসও যে হতে পারে ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে নিখুঁত এক হাতিয়ার, সেটাই ধর্মপচারক (ধর্মকে পঁচায় যে) নামের আড়ালে তাঁর ধর্মকারী (বাংলা ধর! ও ইংরেজিতে মকারি বা ঠাট্টার যুগলবন্দী শব্দবন্ধ) নামের কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন নিজস্ব সৃজনশীলতায়; যুগিয়েছেন মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধের জন্যে শক্তিশালী শিল্পসম্মত শব্দশক্তি। আগুনের পরশমণির মতই তিনি ছড়িয়ে গেছেন সবখানে, ছড়িয়ে আছেন সবমনে, নিশিদিন জ্বলবে সেই আলোক-শিখা, ফোটাবে তারা নব নব।


অন্নপূর্ণা দেবী

'ধর্মপচারক' ধর্ম পচানোর জন্য এক নক্ষত্রের নাম। যে নক্ষত্রের আলোয় আমরা আজ আলোকিত।

আমার হলো শুরু তোমার হলো সারা,
তোমায় আমায় মিলে এমনি বহে ধারা।


ইত্তিলা ইতু

ধর্মকারীর ধর্মপচারক হিসেবেই আমরা সবাই জানতাম তাঁকে। নাম পরিচয় ছবি কিছুই জানি না এরকম একজন মানুষের মৃত্যু আমাকে এতটা শোকাহত করেছে, পরিচিত কারও মৃত্যুতেও হয়তো এরকম হয় না আমার। নিজের জীবনের বড় একটা সময় ব্যয় করে, অনেক বাধা অতিক্রম করে ধৈর্য্যের সাথে ব্লগ চালিয়ে যাওয়া-- এরকম একটি বিরাট প্রশংসনীয় কাজ করে গেছেন নিজেকে লুকিয়ে। মানুষটার মৃত্যুর খবরটাও আমরা জেনেছি ধর্মকারীতে অনেকদিন ধরে কোনও পোষ্ট না পেয়ে।

কেউ যদি জিজ্ঞেস করে জীবনটা কীভাবে কাটাতে চাও বা স্বপ্ন কী? বলি, একটা ম্যাট্রেস, কম্পিউটার আর হাইস্পীড নেট। জীবন নিয়ে স্বপ্ন দেখা হল। জন্মেছি যখন মৃত্যু ও একদিন হবে। মৃত্যু নিয়ে স্বপ্ন বললে ধর্মপচারকের মত মৃত্যু মনে হয় আমাকে আকৃষ্ট করেছে। নীরবে নিভৃতে মৃত্যু। আমি অবশ্য এখনও বিশ্বাস করতে পারি না যে ধর্মপচারক আর নেই। আমার কেন যেন মনে হয়, উনি ব্যস্ত আছেন, পোস্ট দিতে পারছেন না বলে আমরা তাঁকে মৃত ধরে নিয়েছি। হয়তো ফিরে এসেই হাসাহাসি করবেন আমরা তাঁকে মেরে ফেলেছি বলে।

ধর্মপচারকের অনুপস্থিতিতেও ধর্মকারী চলবে জেনে স্বস্তি পেয়েছি। ধর্মকারীর সাথে ছিলাম, আছি, থাকব।

1 টি মন্তব্য:

  1. আমার শেষ লেখাটা প্রকাশ করতে দেরী হচ্ছিল বলে উনি আমার কাছে দূ:খ প্রকাশ করেছেন কিন্তু কখনো বলেননি উনার শরীর খারাপ বা কিছু। আমার লেখা প্রকাশ পেন্ডিং থাকুক বা না থাকুক ধর্মকারীতে আমার বারবার চেক করা হইত অন্যদের লেখা পড়ার জন্য। আমার ভূলত্রুটি পূর্ন লেখা (বিশেষ করে আমার প্রথম দিকের লেখা গুলো) উনি যেভাবে আপাদমস্তক সংশোধনন করে দিতেন এবং তারপরো লিখে দিতেন "লিখেছেন নরমপন্থী" - আমার মাঝে মাঝে লজ্জাই লাগতো । আমি তার প্রতি এই ব্যপারে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেষ পারবো না। আমার শেষ লেখা "অলৌকিক গোয়েন্দাগিরি" নামটাও তাঁর দেয়া।

    "A leader is best when people barely know he exists, when his work is done, his aim fulfilled, they will say: we did it ourselves."
    -Lau Tzu ( Chinese philosopher)

    উত্তরমুছুন