লিখেছেন: বেহুলার ভেলা
এবার পড়ুন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ও মজার পোস্ট
এক
আপনি কোরান পড়লে দেখবেন সেখানে
‘ইন্না’ যার অর্থ ‘নিশ্চয়ই’ – এ
শব্দটির ছড়াছড়ি। কিন্তু এই ‘নিশ্চয়ই’ বলার
মানে কী হতে পারে? সন্দেহের অবকাশ থাকলে এভাবে বারবার ‘নিশ্চয়ই’
বলতে হয়। মুহাম্মদের আশেপাশের মানুষ তখন আরবি জানত। বর্তমানে আরবি ভাষাভাষী ও আরবি
জানা মানুষের পরিমাণ কম নয়। কোরানে এমন কোনো মাজেজা নাই যে তা পড়ে বা শোনেই বুঝা
যাবে যে উহা আল্লাহর বাণী।
কোরানের আয়াতগুলো খেয়াল করলে
স্পষ্ঠ বুঝা যায় তা রচনা করেছেন এমন কোনো মানুষ যিনি খুবই কনফিউজড ছিলেন এবং তাকে
নিয়ে আশেপাশের সবাই সন্দেহ করত। কোরানের একদম প্রথম দিকের একটি আয়াত এরকম, ইহা সেই কিতাব যাহাতে কোনো সন্দেহ নাই।
প্রথমেই সন্দেহ নিয়ে কাজ কারবার। বুঝা যায় কোরানের রচয়িতা এর অলৌকিকতা নিয়ে নিজেই
মানসিক দোটানায় ছিলেন। তারপর পাবেন ’শপথ’ এর ছড়াছড়ি। যিনি মহাবিশ্বকে ‘কুন’
বলেই সৃষ্টি করে ফেলতে পারেন তিনি কখনো শপথ নিচ্ছেন জয়তুন ফলের, কখনো তীন পর্বতের,
কী হাস্যকর! লোকে মুহাম্মদকে পাগল বলে
উপহাস করত, এর জবাবে আয়াত এলো, ওয়ামা ছাহিবুকুম বিমাজনুন, মানে আপনাদের সঙ্গী পাগল
নন (সুরা তাকবির, আয়াত ২২)। যিনি
কোরান রচনা করেছিলেন তিনি নিজেকে বেশ সন্দেহ ও অবিশ্বাস করতেন নি:সন্দেহে।
দুই
ধরেন আপনি কিছু মানুষের জন্য
একটা আচরণ বিধি তৈরী করতে চাচ্ছেন। তাহলে সেটা কিরকম হবে? সেটা কি কোরানের মত এমন এলোমেলো হবে?
যেকোনো আচরণ বিধিই বলেন,
সংবিধান বলেন, আইন বলেন সেগুলো ধারাবাহিকভাবে, সঙ্গতিপূর্ণ উপায়ে রচনা করা হয়।
কিন্তু কোরানের এ অবস্থা কেন? কোন আচরণের জন্য কী বিধান তা
কোথাও স্পষ্ঠ নাই। রচয়িতার কবিত্ব উছলে
পড়ে কোরানকে গার্বেজে পরিণত করেছে বৈকি! কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য জীবন
বিধান দিয়ে দিবেন গাঁজাখুরি একখান কিতাব দিয়ে?
তিন
পরস্পর-বিরোধিতা কোরানের আরেক সমস্যা। কোথাও মদ্যপানের পক্ষে বলা হচ্ছে কোথাও
আবার বিরুদ্ধে। এজন্য নাসিখ-মানসুখ নিয়ে বিশাল বাদানুবাদ, এক আয়াত নাকি অন্য আয়াতকে রহিত করে দেয়।
তাহলে আল্লা কি জানতেন না যে এ নিয়ম এক সময় রহিত হয়ে যাবে? আর
রহিত হওয়ার পরেও সেটা কোরানে রেখে দেয়ার অর্থ কী? মুহাম্মদের
জীবদ্দশায়ই যেহেতু তা ঘটেছে এক্ষেত্রে কোরান থেকে সেটা বাদ দেয়াই যেত।
চার
কোরান নাকি বিজ্ঞানময়
মহাগ্রন্থ। আপনি তাফসিরসহ সম্পূর্ণ কোরান পড়ে বলেন কোরান থেকে কী জ্ঞানটা লাভ
করেছেন। ধর্মশাস্ত্রে তৃতীয় শ্রেণির জ্ঞানটাও নাই।
পাঁচ
কোরানের বিভিন্ন আয়াতের শানে
নজুল পড়লে দেখা যায় ঠিকই এটা ‘মুহাম্মদের ব্যক্তিগত ডায়রি’।
মুহাম্মদের ব্যক্তিগত বিভিন্ন ঝামেলা-জঞ্জাট দূর করার
ক্ষেত্রে আয়াত নামিয়ে ফেলা হয়েছিল। এমনকি পোষ্য ছেলের স্ত্রীকে বিবাহ করা বৈধ করতে
মহামানব সুরা আহযাবের ৩৭ নম্বর আয়াত নাজিল করে ফেলেছিলেন! বাহ, কত বড় একটা জরুরী
কাজ মুসলমানদের জন্য বৈধ করা হল! আয়াতটি দিচ্ছি
"আপনি অন্তরে এমন বিষয় গোপন করছিলেন,
যা আল্লাহ পাক প্রকাশ করে দেবেন আপনি লোকনিন্দার ভয় করেছিলেন অথচ আল্লাহকেই অধিক ভয়
করা উচিত। অতঃপর জায়েদ যখন জয়নবের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল, তখন আমি তাকে আপনার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলাম যাতে মুমিনদের পুষ্যপুত্ররা
তাদের স্ত্রীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করলে সেসব স্ত্রীকে বিবাহ করার ব্যাপারে মুমিনদের
কোন অসুবিধা না থাকে। আল্লাহর নির্দেশ কার্যে পরিণত হয়েই থাকে”। (সূরা আহযাব,
৩৩:৩৭)
কী অবস্থা! যাতে মুমিনদের কোনো অসুবিধা
না থাকে!
ছয়
এক
কথা এত বার বলার কী দরকার? যে কোরানের প্রতিটি কথা গুরুত্বপূর্ণ, যা কিয়ামত
পর্যন্ত মানুষকে দিক-নির্দেশনা দেবে তাতে এত অপচয় থাকবে কেন? আল্লা
যদি একই কথা বারবার বলেন তবে তাতে কি এর গুরুত্ব বেড়ে যাবে? কেন
বাড়বে? বরং এক কথা বারবার বললে অন্য যেসব কথা একবার বলা হয়েছে সেগুলোর গুরুত্ব
হারিয়ে ফেলে। কোরান পড়লে দেখবেন একটু পর পর ‘আক্বিমুস
সালাতু ওয়া আতুজ্জকাহ’ বলা হয়েছে। মোটামুটি
একশ’ বার নামাজ
কায়েমের কথা বলা হয়েছে। এরপর সুরা আর রহমানে বহুবার একই কথা বলা হয়েছে - ‘ফাবি আয়্যিয়ালাহি রাব্বিকুমা তুকাজিজবান’ অর্থাৎ ‘অতএব, তোমরা
উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?’
এ থেকে প্রতীয়মান হয় কোরান আসলেই মানুষ
রচিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন