“তাকিয়া” অর্থ্যাৎ দ্বিনের স্বার্থে
মিথ্যা, প্রতারণা, চক্রান্ত করার যে অনুমতি। তবে এমন নয় যে, “তাকিয়া” নামে কোন
সুনির্দিষ্ট বিধান কুরআনে নাযিল করা হয়েছে। তাই “তাকিয়া” বলতে হাদিস ও কুরআন থেকে
কোন নির্দিষ্ট শব্দ খুঁজে পাবেন না। দ্বিনের স্বার্থে মিথ্যা বলা জায়েজ- এটিকেই
ইসলামী স্কলারদের পরিভাষায় “তাকিয়া” নামকরণ হয়েছে। হাদিস থেকে জানা যাচ্ছে ইসলামের
স্বার্থে প্রতারণা, শঠতা, মিথ্যা বলা জায়েজ-
Bukhari
(84:64-65) – Speaking
from a position of power at the time, Ali confirms that lying is permissible in
order to deceive an “enemy.”
Bukhari (52:269) – “The Prophet said, ‘War is
deceit.'”Muslim (32:6303) – “…he did not hear that exemption was granted in anything
what the people speak as lie but in three cases: in battle, for bringing
reconciliation amongst persons and the narration of the words of the husband to
his wife, and the narration of the words of a wife to her husband (in a twisted
form in order to bring reconciliation between them).”Bukhari (50:369) –
Recounts the murder of a poet, Ka’b bin al-Ashraf, at Muhammad’s insistence.
The men who volunteered for the assassination used dishonesty to gain Ka’b’s
trust, pretending that they had turned against Muhammad. This drew the victim
out of his fortress, whereupon he was brutally slaughtered despite putting up a
ferocious struggle for his life.
তাকিয়া
বিষয়ে আরো জানতে-
এবার আসা
যাক তাকিয়া ঠিক কিভাবে গড়ে উঠে সেবিষয়ে। এ বিষয়ে কুরআন ও হাদিসে প্রচুর দলিল
রয়েছে। এসব দলিল থেকে দেখা যায় স্বয়ং আল্লাহ প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন এবং তার
অনুসরণকারীদের প্রতারণা ও শঠতার আশ্রয় নিতে উৎসাহিত করছেন। আল্লাহ স্বয়ং মানুষের
চাইতে শ্রেষ্ঠ ঠগ প্রতারক বলে নিজেই নিজের গর্ব করছেন!
তোমাদের নিরর্থক শপথের জন্য আল্লাহ তোমাদেরকে ধরবেন না, কিন্তু সেসব কসমের
ব্যাপারে ধরবেন, তোমাদের মন যার প্রতিজ্ঞা করেছে। আর আল্লাহ হচ্ছেন ক্ষমাকারী
ধৈর্য্যশীল।সূরা বাক্কারা, ২:২২৫
-এই আয়াতে পরিস্কার বলা হয়েছে যে সব শপথ মন থেকে নয়, ভান করা হয়েছে মাত্র
সেসব শপথ ভঙ্গ করার জন্য কাউকে সাজা দেয়া হবে না। যেমন মুসলিমরা কৌশলগত কারণে কাফের-অমুসলিমদের
সঙ্গে কোন চুক্তি করল সেসব শপথ তো মন থেকে করা হয়নি, তাই সেই শপথ ভঙ্গ করে ফেললে
কোন পাপ হবে না! ইসলামে সেক্যুলারিজম, অন্যের ধর্মীয় অধিকার বা মর্যাদার কোন
ঐতিহ্য নেই। সাময়িক কৌশলগত কারণে যদি মুসলিমদের এরকম ইসলাম বিরোধী চুক্তি করতেও হয়
তবে সময় সুযোগ মত সেটা ভঙ্গ করা দোষের হবে না। এ বিষয়ে সহি হাদিসও রয়েছে-
“আল্লাহর ইচ্ছায়, যদি আমি কোন ব্যপারে শপথ করি আর পরে দেখি এর চেয়ে ভাল
কিছু আছে তখন আমি যেটা ভাল মনে করি সেটাই করি আর তখন পূর্বেকার শপথ রক্ষার কোন
দরকার মনে করি না। সহি বুখারী, বই – ৬৭, হাদিস-৪২৭”।
কুরআনে বলা হয়েছে- এবং কাফেরেরা চক্রান্ত করেছে আর আল্লাহও চক্রান্ত করেছেন।
বস্তুতঃ আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম চক্রান্তকারী।সূরা আল ইমরান, ৩:৫৪
এবং কাফেররা প্রতারনা করেছে আর আল্লাহও প্রতারনা করেছেন। বস্তুত: আল্লাহ
হচ্ছেন সর্বোত্তম প্রতারক। ৩: ৫৪
মানে আল্লাহ কৌশলগত কারণে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন! সেমিটিক ধর্মের যত ধরণের
ঈশর পাওয়া যায় তাদের কারুর মুখেই এ ধরণের কথা ইতিপূর্বে শোনা যায়নি। ঈশ্বর কেন
চক্রান্ত করবেন? প্রতারণার আশ্রয় নিবেন? এ কারণেই তাকিয়া শুধুমাত্র ইসলামী
পরিভাষা, সেমিটিক অন্য কোন ঐতিহ্যে এটি পাওয়া যায় না।
হাদিসে রয়েছে নবীকে নিয়ে ব্যঙ্গ কবিতা রচনা ও নবীর জিহাদকে সন্ত্রাসী
কর্মকান্ড বলার অপরাধে কয়েকজন ইহুদী কবিকে হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন নবী মুহাম্মদ।
হত্যাকারীরা এ জন্য মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়ার আর্জি জানালে নবীজি স্বয়ং
সম্মতি জানান। তাই দেখা যায় ইহুদী কবির চুলের ঘ্রাণ নেয়ার জন্য প্রশংসা করে সামনে
এসে ছুরি বসিয়ে দেয়া হচ্ছে। ঘোড়া ব্যবসায়ী সেজে রাতের অন্ধকারে বাড়িতে এসে হত্যা
করা হচ্ছে। সহি বুখারী: ভলিউম ৫, বই ৫৯, নম্বর
৩৭১।
তাকিয়ার গড়ে উঠার ভিত্তি এরকম হাজারো
ঘটনা ও কুরআনের আয়াত থেকে। কাজেই “তাকিয়া” বলতে কিছু নেই বলা তাকিয়ারই একটি অংশ
মাত্র।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন